শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

উচ্চশিক্ষার গণতন্ত্রায়ন ও ডিজিটালকরণ

ড. আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহ

উচ্চশিক্ষার গণতন্ত্রায়ন ও ডিজিটালকরণ

উচ্চশিক্ষা বিষয়ে UNESCO-র ২০০৯ সালের বিশ্ব সম্মেলনের জন্য যে প্রতিবেদনটি তৈরি হয়েছিল, তার শিরোনাম ছিল Trends in Global Higher Education : Tracking an Academic Revolution. বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির নজিরবিহীন গতিপরিবর্তন ও অর্থনৈতিক মন্দার কারণে প্রতিবেদনটি বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষেত্রে পালাবদলের জোরাল ইঙ্গিত দিয়েছিল। এ রকম অবস্থা পরবর্তীতে শিল্প-অর্থনীতির গতিধারা পাল্টে দিয়ে পরিসেবামূলক শিল্প ও জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির বিকাশের ক্ষেত্রে বর্তমানে ভূমিকা রাখছে। এটি উচ্চশিক্ষার চাহিদা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও তুলনাহীন ভূমিকা রাখছে। একে বলা যায় উচ্চশিক্ষার গণতন্ত্রায়ন।

উচ্চশিক্ষার মুখ্য উদ্দেশ্য হলো বাজার উপযোগী জনশক্তি নির্মাণ ও তার কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করা। আর এ জনশক্তি বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার জন্য কল্যাণকর। এটি নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, দেশের দ্রুতবর্ধনশীল উচ্চশিক্ষার চাহিদা মেটানোর জন্য সরকারি পর্যায়ে আয়োজন অনেকটাই অপ্রতুল এবং গতিশীল নয়।

শিল্প ও শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের সর্বোচ্চ মান নিয়ন্ত্রণের জন্য আশির দশক থেকেই পৃথিবীব্যাপী শুরু হয়েছে নানাবিধ শিল্পের বেসরকারিকরণ। শিক্ষাও একটি শিল্প। এরও বেসরকারিকরণ হয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষার বেসরকারিকরণ লক্ষ্য করার মতো। তারই সূত্র ধরে বাংলাদেশেও উচ্চশিক্ষার বেসরকারিকরণ হয়েছে এবং হচ্ছে। কর্মক্ষম জনশক্তি তৈরিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভূমিকা খাটো করে দেখার কোনো অবকাশ নেই।

উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বেসরকারিকরণের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন হলো নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে এর ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো চিহ্নিতকরণ ও তা থেকে উত্তরণের উপায়সমূহ বেরকরণ। এ বৈপ্লবিক পরিবর্তন কার্যকরের স্বার্থেই নানাবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন। বেসরকারিকরণের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষাকে প্রতিযোগিতামূলক করার ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বই একটি নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে। এ অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের একার নয়।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে ‘দ্য কমনওয়েলথ অব লার্নিং’-এর প্রেসিডেন্ট ও সিইও জন ড্যানিয়েল উন্মুক্ত ও দূরশিক্ষণের ওপর জোর দেন। উচ্চশিক্ষার বেসরকারিকরণ তথা এ বৈপ্লবিক পরিবর্তনের কণ্টকাকীর্ণ পথ পাড়ি দেওয়ার জন্য ‘প্রযুক্তিগত রূপান্তরের অঙ্গীকার’ গ্রহণ করার জন্য তিনি সবাইকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘শিক্ষা তথা উচ্চশিক্ষাকে মানসম্মত করা এবং একে সম্পদে পরিণত করতে হলে এটি হবে ব্যয়সাপেক্ষ। খরচ হ্রাস করতে চাইলে প্রাপ্তি ও মানের ক্ষেত্রে অনিবার্য ঝুঁকিতে পড়তে হবে।’ জন ড্যানিয়েল আরও বলেন, ‘প্রযুক্তি ব্যবহার করে বেশি অর্জন করা যায়, উচ্চ মান লাভ করা যায় এবং একই সঙ্গে খরচও কমানো যায়। এটিই একটি বিপ্লব; যা আগে কখনো ঘটেনি।’ তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সফলতার কথা তুলে ধরেন (যেমন ইন্দিরা গান্ধী উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়)। তিনি সাম্প্রতিক প্রযুক্তিগত অগ্রগতির উৎকর্ষতার উদাহরণস্বরূপ এমআইটির উন্মুক্ত শিক্ষামূলক প্রোগ্রামগুলোর কথা তুলে ধরেন। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় বহু আউট ক্যাম্পাসের সমন্বয়ে। এমআইটি তাদের আউট ক্যাম্পাসের কাজ ত্বরান্বিত করার জন্য এর পরিপূর্ণ ডিজিটালাইজড করেছে অর্থাৎ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেছে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অফিসের UNDP ও USAID-Supported Access to Information Program-এর নীতিনির্ধারক উপদেষ্টা অনির চৌধুরী ব্রিটিশ কাউন্সিল ও ইংলিশ ইন অ্যাকশনের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক এক সেমিনারে বলেন, Education is going outside the building.

এ দুজনের সারগর্ভ বক্তব্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ইঙ্গিত পাওয়া যায়, তা হলো প্রযুক্তির ব্যবহার। এখানে বিল্ডিং বা ভবন মুখ্য বিষয় নয়। ভবনের দরকার রয়েছে, একটি স্থায়ী ঠিকানার প্রয়োজনও রয়েছে বইকি। কিন্তু বৈপ্লবিক পরিবর্তনের জন্য শুধু ভবনকে আঁকড়ে ধরে থাকলে চলবে না।

প্রতিটি সেক্টরে কম সময়ে উচ্চ মানসম্পন্ন সার্ভিস দেওয়ার ক্ষেত্রে যেভাবে প্রযুক্তি এগিয়ে আসছে, তাতে শুধু ভবন নির্মাণ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। আমরা যদি উদাহরণস্বরূপ একটি সার্ভিস সেক্টরকে সামনে নিয়ে আসি, তাহলেই বোঝা যাবে পুরো বিষয়টি। যেমন ডাকঘরব্যবস্থা। আপনজনের সঙ্গে কথা বলার জন্য, দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে খবর পাঠানোর জন্য, টাকা পাঠানোর জন্য ব্যবহার হতো ডাকঘর। একমাত্র ডাকঘর ছাড়া আর কোনো মাধ্যম ছিল না। শত শত কোটি টাকা খরচ করে হাজার হাজার ডাকঘর এ দেশে তৈরি করা হয়েছিল। নতুন প্রযুক্তির ফলে আজ আর ডাকঘর ব্যবহার হচ্ছে না। অল্প দিনের ব্যবধানেই প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে শত সহস্র কোটি টাকা দিয়ে তৈরি ডাকঘরের। ডাকঘরের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলেও সার্ভিস কিন্তু বন্ধ হয়নি। বরং ওইসব সার্ভিসের মান বেড়েছে বহুগুণে, সময় এবং টাকা উভয়টিই কম লাগছে। একটি ইলেকট্রনিক চিঠি (ইমেইল) সেকেন্ডের মধ্যে শুধু দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত নয়, বরং পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে চলে যাচ্ছে। ফলে কাগজে চিঠি লিখতে গেলে যে পরিমাণ কাগজ বা কালি ব্যবহার হতো, তা আর লাগছে না। কাগজ কম লাগার কারণে গাছ কম কাটতে হচ্ছে, পরিবেশের ক্ষতিও হচ্ছে কম। এখন ইমেইল করতে অবশ্য কম্পিউটারও লাগছে না। হাতের মোবাইল ফোন সেট থেকেও করা যাচ্ছে। এসবই হচ্ছে প্রযুক্তির উৎকর্ষতা। আরেকটি উদাহরণ দিই। তা হচ্ছে খবরের কাগজ। বিশাল বড় বড় অফিস নিয়ে, বিশাল বড় ছাপার মেশিন নিয়ে, আর লাখ লাখ গাছ কেটে এখন আর খবরের কাগজ তৈরি করতে হবে না এবং হচ্ছে না। এখন আধিক্য পাচ্ছে অনলাইন পত্রিকা। পৃথিবীব্যাপী হাজার হাজার খবরের কাগজ এখন অনলাইন পত্রিকায় রূপ নিয়েছে, আর এ পত্রিকা পড়ার জন্য এখন কম্পিউটারও লাগছে না। হাতের মোবাইল ফোন সেট থেকেও পড়া যাচ্ছে। এসবই হচ্ছে প্রযুক্তির ব্যবহার। বাংলাদেশও এদিক থেকে পিছিয়ে নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ একটি যুগান্তকারী ঘোষণা। এই একটি সাহসী এবং উচ্চাভিলাষী উচ্চারণ দেশটিকে সমসাময়িক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সাহায্য করছে। সার্ভিস সেক্টরের প্রতিটি অধ্যায়ে আজ ডিজিটালাইজড জরুরি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই দূরদর্শী চিন্তার ফলে দেশের প্রতিটি সেক্টরে আজ শুরু হয়েছে ডিজিটালাইজড বা ডিজিটালকরণ। উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রের ‘বেসরকারিকরণ’ বিপ্লবকে সত্যিকার রূপ দিতে গেলে এর ‘ডিজিটালকরণ’-এর বিকল্প নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানসম্মত শিক্ষার মাপকাঠির জন্য শুধু স্থায়ী ক্যাম্পাসকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আসলে বিষয়টি কি তাই? একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার মনে হয়, যোগ্যতাসম্পন্ন পর্যাপ্ত শিক্ষক, উন্নত ল্যাবরেটরি, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, কর্মমুখী পাঠক্রম এবং পাঠদান উপযোগী পরিবেশ— এগুলোকেই শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণ বা মান নির্ণয়ের জন্য চিহ্নিত করা জরুরি। পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের প্রতিবেদনে প্রায়ই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্যতম সমস্যা হিসেবে শুধু স্থায়ী ক্যাম্পাসকেই উল্লেখ করা হয়। এ প্রতিবেদনগুলো কতটুকু যৌক্তিক? প্রতিবেদনগুলো তৈরির সময় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ধারণা ও অনুমানের ওপর নির্ভর করা হয়েছে মর্মে পত্রপত্রিকায় লেখালেখিও হয়েছে। স্থায়ী ক্যাম্পাসের অবশ্যই প্রয়োজন রয়েছে, তাই বলে স্থায়ী ক্যাম্পাসই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নত মান নিশ্চিত করার একমাত্র মাধ্যম হতে পারে না। গরিব ও মধ্য আয়ের দেশগুলোয় বর্তমানে পরিচালিত উচ্চশিক্ষা বিপ্লবকে ত্বরান্বিত করার জন্য যেমন সময় বাঁচাতে হবে তেমনি অনুৎপাদনশীল ক্ষেত্রে অযথা পয়সা খরচ করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। পড়াশোনার জন্য ভবন একটি অপরিহার্য বিষয় বটে কিন্তু বর্তমান প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় এ ভবনগুলোও একসময় ডাকঘরের অবস্থায় পরিণত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ/রিসোর্স ব্যবহার করার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার সামনে নিয়ে আসতে হবে। দেখা গেছে, ছাত্র আন্দোলনের কারণে, ধর্মঘটের কারণে, হরতাল ইত্যাদির কারণে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ক্লাস হয় না। নির্ধারিত সময়ে কোর্সও শেষ হয় না বরং সেশনজট বাড়তে থাকে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ক্লাস হয় না, কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নির্ধারিত সময়ে তাদের কোর্স সম্পন্ন করার জন্য বাসায় বসে সেলফোন থেকে কোর্স আউট লাইন ছাত্রদের কাছে অনলাইনে পাঠাচ্ছেন এবং ছাত্ররা বাসায় বসে তা সেলফোন বা কম্পিউটারে ডাউনলোড করে পড়াশোনা করছে, এমনকি অনলাইনে পরীক্ষাও দিচ্ছে। এতে দেখা যাচ্ছে বিল্ডিংয়ের শ্রেণিকক্ষে বসেই পড়াশোনা করতে হবে বিষয়টি তা নয়। শ্রেণিকক্ষের বাইরেও পড়াশোনা হতে পারে এবং হচ্ছে।

হাজার হাজার বর্গফুট জায়গা দখল করে লাইব্রেরি সেটআপ করার প্রয়োজন হয়তো বা নেই বা থাকবে না। ছোট একটি কক্ষে বসে লাইব্রেরির সব বই-জার্নাল ডিজিটালাইজড করে ওয়েভভিত্তিক করায় ছাত্ররা বাসায় বসেই লাইব্রেরির বই-জার্নাল পড়তে পারছে। এজন্য ছাত্রদের লাইব্রেরিতে এসে ভিড় করার প্রয়োজন পড়ছে না, বাড়তি জায়গা দখলের প্রয়োজনও হচ্ছে না।

প্রযুক্তি ও দ্রুত বিশ্বায়নের যুগে শিক্ষার বৈপ্লবিক পরিবর্তনে বিশ্বাসী বিশেষজ্ঞরা স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য অত্যন্ত উঁচু ব্যয়ে নির্মিত ভবনসুবিধাকে এক ধরনের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে ভাবেন। তথ্যপ্রযুক্তি, দূরশিক্ষণ ও অন্যান্য প্রযুক্তিজাত উদ্ভাবনের কারণে সনাতন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেকেলে হতে বাধ্য। ভবনটি ভাড়া নাকি স্থায়ী তা বিবেচ্য বিষয় নয়, ভবনটিতে শিক্ষা উপযোগী পরিবেশ আছে কিনা তা-ই বিবেচ্য হওয়া উচিত। আমরা উঁচু ব্যয়ে ভবন নির্মাণে ঝাঁপিয়ে পড়ছি সবাই, কিন্তু এও শিগগিরই সেকেলে হিসেবে পর্যবসিত হবে।

বিশ্বব্যাংক সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশ দুর্বল ব্যবস্থাপনা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষায় উন্নয়ন করছে। এখানে উচ্চশিক্ষার বিপ্লব ত্বরান্বিত করার জন্য গবেষণা ও উন্নয়ন, দক্ষ শিক্ষক, পাঠদান পরিবেশ, সহ-পাঠ্যানুক্রমিক কর্মকাণ্ড/ক্লাব, শিক্ষার মান এবং গ্র্যাজুয়েটদের কর্মযোগ্যতাকে অত্যধিক গুরুত্বারোপ করতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় বিশেষ করে বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু ভৌত কাঠামোকে অগ্রাধিকার দেওয়া নয়, শুধু তদারকি নয়, নিছক গ্র্যাজুয়েট তৈরি নয়; বরং জাতির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরির লক্ষ্যে প্রযুক্তির যথোপযুক্ত ব্যবহারকে গুরুত্ব দিতে হবে সবার আগে।

লেখক : প্রফেসর, আইবিএ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

চেয়ারম্যান, নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ ট্রাস্ট।

সর্বশেষ খবর