শিরোনাম
রবিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

তিন মেয়র বরখাস্তকারীকে বরখাস্ত করুন

কাজী সিরাজ

তিন মেয়র বরখাস্তকারীকে বরখাস্ত করুন

সরকারের একটি ভুল সিদ্ধান্ত দেশ-বিদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তাভাবনার পালে একটা প্রবল বায়ুপ্রবাহই যেন বইয়ে দিল। জনগণের তিনজন জনপ্রিয় নির্বাচিত প্রতিনিধি সর্বোচ্চ আদালতের রায় নিয়েও ঠিকমতো চেয়ারে বসতে পারেননি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাদের ফের বরখাস্ত করা হয়।  এরা তিনজন হলেন— রাজশাহীর নির্বাচিত সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সিলেটের নির্বাচিত সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জিকে গউস।  ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের হারিয়ে বিএনপির সমর্থনে তারা জিতেছিলেন। তিন মেয়রের বরখাস্ত আদেশই স্থগিত হয়েছে। কিন্তু সরকারের ক্ষতি যা হওয়ার তা ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে। সর্বত্র একটা ধারণার সৃষ্টি হয়েছে যে, জনপ্রতিনিধি বিরোধী দলের হলেই বরখাস্ত করে দেওয়া হচ্ছে। দুই সিটি ও এক পৌরসভা মেয়রকে বরখাস্তের দুই দিন পর আরও পাঁচজন জনপ্রতিনিধিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সবার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ— তারা বিভিন্ন মামলার আসামি এবং তাদের মামলাগুলোর অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হয়েছে। রাজশাহীর সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও হবিগঞ্জের পৌর মেয়র জিকে গউসকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ গত ৪ এপ্রিল মঙ্গলবার মহামান্য হাই কোর্ট স্থগিত করে দিয়েছে। সিলেট সিটি মেয়রের সাময়িক বহিষ্কারাদেশও ৩ এপ্রিল সোমবার স্থগিত করে দেয় মহামান্য হাই কোর্ট। এদিকে ৪ এপ্রিল যে পাঁচজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করেছে সরকার তারা হলেন— দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরসভার মেয়র মুরতুজা সরকার মানিক, মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম ও ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন এবং চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওয়াহিদুজ্জামান। বরখাস্তের গ্রাউন্ড যেহেতু এক, ধারণা করা যায়, উচ্চ আদালত থেকে তারাও সুবিচার পাবেন। ২০১৩ সালের ১৫ জুন অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনে জিতেছিলেন রাজশাহী, সিলেট, খুলনা ও বরিশালে চার বিএনপি নেতা। লীগ শাসনে তা ছিল এক বিস্ময়কর ঘটনা। সারা দেশ থেকে বিএনপি নির্মূল হয়ে গেছে বলে সরকারি প্রচার মিথ্যা প্রমাণ করে দিয়েছে ওই চার বড় সিটির জনগণ। এরপর বাংলাদেশের দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ বলে ক্ষমতাসীন দলের দাবিকৃত গাজীপুর সিটি নির্বাচনেও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অধ্যাপক আবদুল মান্নান আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দেন। কিন্তু শান্তি পাননি মেয়র মান্নানও। তিনিও একই প্রক্রিয়ায় বরখাস্ত হন। বরখাস্ত হন খুলনার মেয়র মনিরুজ্জামান মনিও। বরখাস্তই শুধু নয়, চারজন দীর্ঘদিন জেলও খাটেন, মনি পালিয়ে বেড়ান এখানে-সেখানে। মেয়াদের প্রায় অর্ধেকের মতো সময় তারা কাটিয়েছেন হয় জেলে, না হয় পালিয়ে। কাজ করার সময় পেলেন কই? অথচ জনগণ তাদের নির্বাচিত করেছিলেন এই পরম আস্থা ও বিশ্বাসে যে, তারা তাদের সততা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে নিজ নিজ মহানগরীকে সুন্দর করে সাজাবেন, জনগণের দুঃখ-যন্ত্রণা লাঘবে নগরপিতার দায়িত্ব পালন করবেন যথার্থভাবে। কিন্তু তাদের তা করতে দেওয়া হয়নি। নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিরা বরখাস্ত থাকায় জনগণ বঞ্চিত হয়েছে তাদের সেবা থেকে। গণপ্রতিনিধিদের প্রতি সরকারের এই মনোভাব, বিশেষ করে তিন মেয়রের বরখাস্তের ঘটনা সরকার সম্পর্কে জনমনে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি করেছে। অথচ ২০১৩ সালে সিটি নির্বাচনগুলো অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু-স্বচ্ছ হওয়ায় ভোটে হেরে গিয়েও রাজনীতিতে জিতেছিল সরকার। সর্বত্রই তারা প্রশংসা কুড়িয়েছে। এমনকি বিএনপিও প্রশংসা করেছে সরকারের। চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাস্ত হওয়ার পরও সরকারের ক্ষমতা হারানোর কোনো শঙ্কা সৃষ্টি হয়নি, কেননা ওইসব নির্বাচন ছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচন-কেন্দ্রীয় সরকার বদলের নির্বাচন নয়। নির্বাচিত মেয়রদের কাজ করতে দিলে এবং উন্নয়ন সহযোগিতা দিলে সরকারের ভাবমূর্তি বরং বাড়ত। যাই হোক, ২০১৩ সালে সিটি নির্বাচনের সব রাজনৈতিক অর্জন সরকার বিসর্জন দিল নির্বাচিত মেয়র-চেয়ারম্যানদের বরখাস্ত করার অবিমৃষ্যকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে। কারা এ ধরনের আত্মবিনাশী সিদ্ধান্ত গ্রহণে সরকারকে প্রভাবিত করেছিল তা বের করা এখন সহজ হয়ে যাবে সাম্প্রতিক তিন মেয়রকে দ্বিতীয়বার এবং তার দুই দিন পর আরও পাঁচ গণপ্রতিনিধির বরখাস্তের সঙ্গে জড়িতদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিলে। ২ এপ্রিল দুই সিটি মেয়রের বরখাস্তের পরপরই স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদের মন্তব্যটি এক্ষেত্রে বেশ প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে পরিকল্পিত’। বিশ্লেষণে তিনি বলেছেন, ‘সিটি করপোরেশন আইন-২০০৯-এর ১২ (১) উপধারা অনুযায়ী সিটি করপোরেশনের মেয়রের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হলে সাময়িক বরখাস্ত করার বিধান রয়েছে। কিন্তু সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের দুই মেয়র দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর উচ্চ আদালতের রায়ে আবার কাজে যোগদান করতে গেলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে মন্ত্রণালয় নির্বাহী আদেশে তাদের আবার সাময়িক বরখাস্ত করল। এখানে দেখে মনে হচ্ছে আইন প্রয়োগের কৌশল ও ধরন হয়েছে নাটকীয়তার মাধ্যমে। এটি কাকতালীয় নয়, মনে হচ্ছে পরিকল্পিত। যেখানে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশের কথা বলা হচ্ছে, কুমিল্লায় একটি ভালো নির্বাচন হলো, দেশে ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সম্মেলন হচ্ছে— যেখানে সারা বিশ্বের সংসদ সদস্যরা আছেন তখন এমন একটি সময় এই সংবাদ সৃষ্টি করা হলো।

আমার মনে হয় না সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পর্যায় থেকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে’ (প্রথম আলো ৩ এপ্রিল ২০১৭)। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যও তোফায়েল আহমেদের বিশ্লেষণকে সমর্থন করে। ৩ এপ্রিল রাজধানীর ডেমরায় তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, তিন মেয়রের বরখাস্তের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী জানেন না। এটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তার বক্তব্যে এটা স্পষ্ট হয় যে, তিন মেয়রের বরখাস্ত আদেশটি সঠিক হয়নি। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হলে কিংবা বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর গোচরীভূত হলে তা হতো না। শাসক দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি নিশ্চয়ই উপলব্ধি করছেন যে, এ সিদ্ধান্ত শুধু সরকারের নয়, প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করেছে।

তাই তিনি দেশবাসীকে জানিয়ে দিলেন যে, প্রধানমন্ত্রী এর কিছু জানেনই না। হ্যাঁ, আমরাও ধরেই নিলাম প্রধানমন্ত্রী জানেন না, দলীয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও নয় এটি। তাহলে দল ও সরকারের জন্য চরম ক্ষতিকর এমন কাজটি হলো কী করে? কে বা কারা করল? কেন করল? ওবায়দুল কাদের দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ‘ঘর শত্রু বিভীষণ’দের খুঁজে বের করার কোনো ইঙ্গিত বা তাত্ক্ষণিক কোনো উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেননি। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, দীর্ঘ গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ঐতিহ্য বহনকারী একজন নেতা হিসেবে তিনি যা বলেছেন তা সত্যিই ‘মিন’ করেছেন। যে দুষ্কর্মটি হয়ছে তা সভ্য গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনা ও বিশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কোনো প্রকৃত গণতন্ত্রী তা সমর্থন করতে পারেন না। আওয়ামী লীগ দাবি করে তারা গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি দিতে চায়। বিএনপিসহ অনেক সরকারবিরোধী শক্তির অভিযোগ, সরকার ও সরকারি দল গণতন্ত্রের পথে নেই, তারা কর্তৃত্ববাদী শাসন পদ্ধতি অনুসরণ করছে। বিরোধী পক্ষকে কোনো স্পেস দিচ্ছে না, দিতে চায় না। সরকার ও সরকারি দলের আচরণ যদি গণতন্ত্রসম্মত না হয়, শুধু বিরোধী দল কেন, জনগণও বলবে সরকারের কথায় ও কাজে মিল নেই। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই প্রথমে তিন মেয়র ও পরে আরও পাঁচ গণপ্রতিনিধির বরখাস্তকরণ অবশ্যই একটি চরম অগণতান্ত্রিক ও স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপ। আওয়ামী লীগ নিজেদের গণতান্ত্রিক দল হিসেবে প্রমাণ করার জন্য নগদে যে কাজটিতে হাত দেওয়া উচিত, তা হচ্ছে উচ্চ আদালতকে অগ্রাহ্য-অবজ্ঞা করে তিন মেয়রকে বরখাস্ত করার বিষয়ে দল ও সরকারের প্রকৃত অবস্থা ও অবস্থান পরিষ্কার করা। বিষয়টিকে আদালতের প্রতি অবমাননা ও অগণতান্ত্রিক-স্বেচ্ছাচারী কাণ্ড বলে বিবেচনা করলে এ ব্যাপারে একটি ব্যাখ্যা দেওয়া, দুঃখ প্রকাশ করা এবং সংশ্লিষ্ট ‘ঘর শত্রু বিভীষণদের’ চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে নিজেদের স্বচ্ছতা প্রমাণ করা। যদি কিছু করা না হয়, তাহলে জনগণের কাছে এই বার্তাই পৌঁছবে যে, ওবায়দুল কাদের দল ও সরকারের ‘মুখ রক্ষার’ জন্য ‘পলিট্রিক্স’ করেছেন।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, একটি ভালো সময়ে খারাপ কাজটি করা হয়েছে। ১. দেশে আইপিইউর সম্মেলন চলছিল তখন। দেশের জন্য এটা সম্মানের, গৌরবের; ২. প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের প্রস্তুতিকালীন সময় ছিল সেটি— যে ব্যাপারে জাতির অনেক আশা ও স্বপ্ন এবং ৩. কুমিল্লা সিটিতে একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন মানুষের মনে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটি পজিটিভ ধারণার জন্ম দিয়েছে। গণতন্ত্রের চর্চা ও অনুশীলনকারী অনেক দেশের সংসদ সদস্য এসেছিলেন আইপিইউ সম্মেলনে। তারা কী ধারণা নিয়ে গেলেন? জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে, কিন্তু তারা বিরোধী দলের হলে চেয়ারে বসতে পারেন না— এ ধারণা দিয়েই তো তাদের বিদায় জানানো হলো। এতে দেশের সুনাম বাড়েনি। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের প্রাক্কালে এ ব্যাপারে বিভিন্ন দল ও মহল থেকে যখন দেশ ও জাতির প্রত্যাশা নিয়ে আলোচনা, পরামর্শ আসছিল, যখন প্রধান বিরোধী দল বিএনপির একটা গঠনমূলক ভূমিকা ও পরামর্শ ওই সফরের ব্যাপারে প্রত্যাশিত, ঠিক তখন দলটিকে আচমকা আঘাত করা হলো। অথচ পর্যবেক্ষকরা মনে করেন বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমঝোতার ব্যাপারে শাসকদল আওয়ামী লীগের পাশাপাশি প্রধান বিরোধী দল বিএনপিরও একটি অনুকূল মনোভাব থাকুক এটা ভারতও নিশ্চয়ই চায়। বেগম খালেদা জিয়ার ঘোষিত ‘ভিশন-২০৩০’-এ সে ব্যাপারে অঙ্গীকারও ব্যক্ত করা আছে। এ বিষয়টায় বিএনপিকে উত্ত্যক্ত করার পেছনে কোনো দুরভিসন্ধী থাকতেই পারে। কুমিল্লা সিটি নির্বাচন-পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে জনমনে যে আশাবাদ জাগ্রত করেছে, তা বিনাশের একটা সূক্ষ্ম প্রয়াসও থাকতে পারে নষ্ট-কর্মটির পেছনে। কাজটি শুধু সরকারের বিরুদ্ধেই গেছে ভাবলে ভুল হতে পারে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে জনমনে একটা নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সম্ভাবনাকে বিনাশ করে দিলে তাতে বিএনপিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ। বর্তমানে পরিপূর্ণভাবে নির্বাচনমুখী বিএনপিকে নির্বাচনবিরোধী সড়কে ঠেলে দেওয়ার জন্য এটা একটা উসকানিমূলক তৎপরতা বলেও বিবেচিত হতে পারে। পরিষ্কার হওয়া দরকার যে, তিন মেয়রকে যারা বরখাস্ত করেছে তারা কিন্তু জনমতের প্রতি সম্মান জানিয়ে নিজেদের উদ্যোগে বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করেনি। বরখাস্ত আদেশ পুনরায় স্থগিত করেছে উচ্চ আদালত। উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন না হলে তারা বরখাস্ত অবস্থায়ই থাকতেন। অর্থাৎ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তাদের চক্রান্তমূলক সিদ্ধান্তে অটল। তা না হলে দুই দিন পর আরও পাঁচজন গণপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করা হতো না। বলাই বাহুল্য, ওই পাঁচজনও বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের মনোভঙ্গিকেও পাত্তা দিচ্ছে না মন্ত্রণালয়। উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী  প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বস্ত ও নিকটাত্মীয়। ভাবতে চাই, তার অজ্ঞাতেই এসব কাণ্ড ঘটেছে। এসব রোধ ও রদ করার ব্যাপারে তিনি যদি সরব, সক্রিয় ও কঠোর না হন, তখন ওবায়দুল কাদের সাহেব যতই বলুন না কেন যে, প্রধানমন্ত্রী কিছু জানেন না, জনগণের তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে।  আশা করি সভ্যতা, গণতান্ত্রিক শিষ্টাচারের মূল্য দিয়ে এবং সুন্দর ও শান্তিময় আগামীর লক্ষ্যে সরকারের অভ্যন্তরের দুষ্টচক্রকে প্রতিহত করবে সরকার ও সরকারি দল। সরকার ও সরকারি দলের স্বীয় স্বার্থেও তা জরুরি।  প্রয়োজন গণতন্ত্রের সৌন্দর্য রক্ষার জন্যও।

লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট।

ই-মেইল :  [email protected]

সর্বশেষ খবর