রবিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
ভেষজ

বাসকের ঔষধি গুণ

বাসকের ঔষধি গুণ

বাসক একটি ভেষজ উদ্ভিদ। আর্দ্র, সমতলভূমিতে এটি বেশি জন্মে। লোকালয়ের কাছেই জন্মে বেশি। হালকা হলদে রংয়ের ডালপালাযুক্ত ১ থেকে ২ মি. উঁচু গাছ।  ঋতুভেদে সবসময়ই প্রায় সবুজ থাকে। ব্লুমাকারের পাতা বেশ বড়। ফুল ঘন, ফল সুপারি আকৃতির; বীজে ভর্তি।

তাজা অথবা শুকানো পাতা ওষুধের কাজে লাগে। বাসকের পাতায় ‘ভাসিসিন’ নামীয় ক্ষারীয় পদার্থ এবং তেল থাকে। শ্বাসনালির লালাগ্রন্থিকে সক্রিয় করে বলে বাসক শ্লেষ্মানাশক হিসেবে প্রসিদ্ধ। বাসক পাতার নির্যাস, রস বা সিরাপ শ্লেষ্মা তরল করে নির্গমে সুবিধা করে দেয় বলে সর্দি, কাশি এবং শ্বাসনালির প্রদাহমূলক ব্যাধিতে বিশেষ উপকারী। তবে অধিক মাত্রায় খেলে বমি হয়, অন্তত বমির ভাব হয়, অস্বস্তি হয়। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় বাসকের ভেষজ গুণাবলি প্রমাণিত হয়েছে। এর মূল, পাতা, ফুল, ছাল সবই ব্যবহার হয়।

১. বাসক পাতার রস ১-২ চামচ হাফ থেকে এক চামচ মধুসহ খেলে শিশুর সর্দি-কাশিতে উপকার পাওয়া যায়।

২. বাসক পাতার রস স্নানের আধ ঘণ্টা আগে মাথায় কয়েক দিন মাখলে উকুন মরে যায়। আমবাত ও ব্রণশোথে (ফোঁড়ার প্রাথমিক অবস্থা) বাসক পাতা বেটে প্রলেপ দিলে ফোলা ও ব্যথা কমে যায়। ৩. যদি বুকে কফ জমে থাকে এবং তার জন্য শ্বাসকষ্ট হলে বা কাশি হলে বাসক পাতার রস ১-২ চামচ এবং কন্টিকারি রস ১-২ চামচ, ১ চামচ মধুসহ খেলে কফ সহজে বেরিয়ে আসে। ৪. প্রস্রাবে জ্বালা-যন্ত্রণা থাকলে বাসকের ফুল বেটে ২-৩ চামচ মিছরি ১-২ চামচ শরবত করে খেলে এই রোগে উপকার পাওয়া যায়।

৫. জ্বর হলে বা অল্প জ্বর থাকলে বাসকের মূল ৫-১০ হ্রাম ধুয়ে থেঁতো করে ১০০ মিলিলিটার জলে ফোটাতে হবে। ৬. ২৫ মিলিলিটার থাকতে নামিয়ে তা ছেঁকে নিয়ে দিনে দুবার করে খেলে জ্বর এবং কাশি দুই-ই চলে যায়। ৭. বাসকের কচি পাতা ১০-১২টি এক টুকরো হলুদ একসঙ্গে বেটে দাদ বা চুলকানিতে লাগালে কয়েক দিনের মধ্যে তা সেরে যায়।

৮. বাসক পাতা বা ফুলের রস ১-২ চামচ মধু বা চিনি ১ চামচসহ প্রতিদিন খেলে জন্ডিস রেগে উপকার পাওয়া যায়। ৯. পাইরিয়া বা দাঁত দিয়ে রক্ত পড়লে বাসক পাতা ২০টি থেঁতো করে ২ কাপ জলে সিদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ঈষদুষ্ণ অবস্থায় কুলকুচি করলে এই রোগে উপকার পাওয়া যায়।

ডা. আলমগীর মতি

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর