সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

মিত্র বাহিনীর শহীদদের সম্মাননা

দুই দেশের বন্ধুত্বকে অমরত্ব দান করবে

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীকে হটাতে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি লড়াই করেছেন ভারতীয় মিত্র বাহিনীর যোদ্ধারা। বাংলাদেশকে শত্রুমুক্ত করার লড়াইয়ে হাজার হাজার ভারতীয় সেনাও জীবন দিয়েছেন। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পিছনে মিত্র বাহিনীর সদস্যদের অসামান্য ত্যাগের বিষয়টি শুধু ইতিহাসের অংশই নয় বাঙালি জাতির জন্য প্রাতঃস্মরণীয় বিষয়। বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখার জন্য বিদেশি বন্ধুদের সম্মাননা জানাবার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বেশ আগে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে গত শনিবার মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভারতীয় সৈন্যদের সম্মাননা জানানো হয়েছে সাত শহীদ পরিবারের সদস্যদের কাছে সম্মাননা তুলে দেওয়ার মাধ্যমে। দিল্লি সেনানিবাসের মাকেনশ সেন্টারে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভারতীয় সৈন্যদের প্রতি কৃতজ্ঞ জাতির পক্ষ থেকে সম্মাননা প্রদান করেন। পর্যায়ক্রমে এ সম্মাননা সব শহীদদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘদিন পর হলেও মিত্রবাহিনীর শহীদ সদস্যদের সম্মাননা দানের বিষয়টি তাৎপর্যের দাবিদার। এ সম্মাননার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ উৎসর্গকারী মিত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি যেমন শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে, তেমন কৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে বাংলাদেশের পরিচিতি ও উজ্জ্বল করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সদস্যরা দখলদার পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধে তাদের যে রক্ত ঝরেছে, সেই রক্ত দুই দেশের মৈত্রীর রাখি বন্ধন রচনা করেছে। যারা বাংলাদেশের মুক্তির জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন তারা পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, বুড়িগঙ্গা পাড়ের এ জাতিকে অশেষ ঋণে আবদ্ধ করেছেন। বাংলাদেশের অস্তিত্বের মতোই তাদের আত্মত্যাগের বিষয়টি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমরা আশা করব মিত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের সম্মাননা প্রদানের বিষয়টি প্রতিবেশী দুই মহান জাতির বন্ধুত্ব অমরত্ব দান করবে। রক্তের আখরে লেখা বন্ধুত্বকে বিকশিত করার ক্ষেত্রেও অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করবে। দুই মহান জাতির পারস্পরিক সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টিতেও তা অবদান রাখবে এমনটিও প্রার্থিত।

সর্বশেষ খবর