মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

জনভোগান্তি কাম্য নয়

প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত প্রশংসাযোগ্য

যানজটের নগরী রাজধানী ঢাকা জনভোগান্তির এক বিপর্যয়কর অবস্থা থেকে শেষ পর্যন্ত রক্ষা পেল প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর শেষে দেশে ফেরা উপলক্ষে গণসংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছিল ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে। চলছিল বর্ণাঢ্য সংবর্ধনার প্রস্তুতিও। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে দলের নেতাদের গণসংবর্ধনার কর্মসূচি বাতিলের নির্দেশ দেন। স্মর্তব্য, গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়ে দেশে ফেরা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা দেয় আওয়ামী লীগ। এ কর্মসূচির কারণে শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও রাজধানীজুড়ে সৃষ্টি হয় যানজট; যা লাখ লাখ মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। গতকাল গণসংবর্ধনা হলে জনভোগান্তি যে সর্বকালের রেকর্ড অতিক্রম করত তা সহজে অনুমেয়। কারণ রাজধানীর বিপুলসংখ্যক সড়কে চলছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। ফলে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত যানজটের নিয়তি নগরবাসীর ওপর চেপে বসেছে। প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরা উপলক্ষে গণসংবর্ধনার আয়োজন করা হলে তা নগরবাসীকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলত। আওয়ামী লীগ নেতা-নেত্রীরা জনভোগান্তির এ বিষয়টি উপেক্ষা করলেও প্রধানমন্ত্রী তা করেননি। রাজধানীতে যানজট ইতিমধ্যে সাক্ষাৎ অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অভিশাপ আরও ভয়াবহ করে তুলছে রাজপথে সভা-সমাবেশের ঘটনা। ভিভিআইপিদের চলাচলের জন্য বাড়তি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাও যানজটকে উৎসাহিত করছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আওয়ামী লীগের গণসংবর্ধনা কর্মসূচি বাতিলের ঘটনা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে— আমরা এমনটিই দেখতে চাই। ছুটির দিন ছাড়া অন্য দিন রাজনৈতিক দলগুলো সভা-সমাবেশ, মিছিল থেকে বিরত থাকবে এমনটিও কাঙ্ক্ষিত। রাজনীতির প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয় হলো জনগণ। জনগণের জন্য রাজনীতি এটি নেতা-নেত্রীদের বহুল উচ্চারিত বক্তব্য হলেও তা তাদের মুখেই শোভা পায় বাস্তবে নয়। আমরা আশা করব প্রধানমন্ত্রী যেহেতু নিজের গণসংবর্ধনা নিজে বাতিল করেছেন সেহেতু মন্ত্রী-এমপি ও অন্য নেতারাও তা থেকে শিক্ষা নেবেন। গণসংবর্ধনা নেওয়ার জন্য তারা প্রায়শই জনভোগান্তি সৃষ্টির যে অবিমৃষ্যকারিতা দেখান, তা থেকেও বিরত থাকার চেষ্টা করবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর