শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

তিন জঙ্গির ফাঁসি

স্বজন হারানোদের জন্য সান্ত্বনা

পাপের সাজা শেষ পর্যন্ত পেতে হলো জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান এবং তার দুই সহযোগীকে। সিলেটে হজরত শাহ জালাল (রহ.)-এর মাজারে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার দায়ে গত বুধবার রাতে কাশিমপুর কারাগারে মুফতি হান্নান এবং তার সহযোগী বিপুলকে এবং সিলেট কারাগারে রিপনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। দেশের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জঙ্গি মুফতি হান্নানের বিরুদ্ধে হজরত শাহ জালালের মাজারে বোমা হামলা ছাড়াও আরও ১৬টি জঙ্গি হামলার মামলা রয়েছে। যার মধ্যে রমনার বটমূলে বোমা হামলা, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে গ্রেনেড হামলা এবং গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে বোমা পেতে রাখার মামলাও রয়েছে। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানে যারা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন মুফতি হান্নান ছিলেন তাদেরই একজন। পাকিস্তানের মাদ্রাসায় পড়াশোনার সময় তিনি জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত হন এবং আফগান তালেবানদের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে সে সময় আহতও হন। মুফতি হান্নানের জঙ্গি তত্পরতার সঙ্গে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সম্পর্ক ছিল বলে ব্যাপকভাবে সন্দেহ করা হয়। বিশেষত বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার সভায় গ্রেনেড হামলার সঙ্গে ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোটের সম্পর্ক ছিল বলে ব্যাপকভাবে সন্দেহ করা হয়। মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গির ফাঁসিসহ এ যাবৎ ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হলো।  জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকার ও দেশের বিচার ব্যবস্থার কড়া মনোভাবের প্রতিফলন ঘটেছে এসব মৃত্যুদণ্ডের ঘটনায়। আমরা আশা করব, দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে শত্রুতার ভূমিকায় অবতীর্ণ জঙ্গিবাদের অনুসারীদের দমনে সরকারের কড়া মনোভাব আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। পয়লা বৈশাখের প্রাক্কালে সারা দেশে ১৩টি বড় ধরনের নাশকতায় অন্তত ১০৯ জনের প্রাণ কেড়ে নেওয়া নৃশংস জঙ্গি মুফতি হান্নান ও তার দুই সঙ্গীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনাকে আমরা জাতির জন্য একটি সুসংবাদ হিসেবে অভিহিত করতে চাই। জঙ্গি হামলায় হতাহতদের পরিবার-পরিজন এর ফলে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা খুঁজে পাবে। যারা জঙ্গিবাদের পথে পা  বাড়াতে চায় তিন ভয়ঙ্কর জঙ্গির ফাঁসি তাদের জন্য হুঁশিয়ারি হিসেবে বিবেচিত হবে এমনটিও প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর