রবিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

রমনা হত্যাকাণ্ডের বিচার

দীর্ঘসূত্রতার অবসান হোক

রমনা বটমূলে বোমা হামলার বিচার ১৬ বছরেও শেষ না হওয়া নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এ মামলার প্রধান আসামি মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে অন্য এক মামলার রায়ে। যে শম্বুক গতিতে মামলা চলছে তাতে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তাও হতাশা প্রকাশ করেছেন। ২০০১ সালে সংঘটিত ওই ‘গণহত্যা’র পর পাঁচবার সরকার বদল হলেও শেষ হয়নি বিচার প্রক্রিয়া। আওয়ামী লীগ শাসনামলে রমনার বটমূলে ছায়ানটের ১৪০৮ সনের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ১০ জন নিহত হন। গুরুতর আহত হন আরও ১৩ জন। এ ঘটনার পর দুটি মামলা হয়। এর একটি হত্যা ও অন্যটি বিস্ফোরক মামলা। হত্যা মামলার রায়ে ২০১৩ সালের ২৩ জুন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানসহ আটজনের ফাঁসি ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বিস্ফোরক মামলা এখনো চলমান। স্মর্তব্য, ওই বোমা হামলার পর ক্ষমতায় আসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তিন মাসের মাথায় নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ও জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসে। তাদের পাঁচ বছরে মামলা চলেছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। ২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা অর্পণ করে বিদায় নেন তারা। বিতর্কিত ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকার তিন মাসের বদলে দুই বছর ক্ষমতা আঁকড়ে থাকে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। পাঁচ বছর শেষে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আবারও তারা ক্ষমতায় আসার ‘কৃতিত্ব’ দেখায়। প্রতিটি সরকার বোমা হামলার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার কথা বললেও সে প্রতিশ্রুতি রক্ষা হয়নি। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পরিচালিত এ মামলার বিচার শম্বুক গতির উদাহরণে পরিণত হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষের সময়ক্ষেপণের কারণে। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসা বিএনপি-জামায়াত সরকার মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে, এমন অভিযোগ ব্যাপক এবং তা অনেকের বিশ্বাসযোগ্যতাও পেয়েছে। কিন্তু ২০০৯ সাল থেকে এ যাবৎ যারা ক্ষমতায় রয়েছেন, রমনা বটমূলের বোমা হামলার বিচারের ক্ষেত্রে তারা নিজেদের অঙ্গীকারবদ্ধ বলে দাবি করলেও এ আমলেও দীর্ঘসূত্রতা কোনো ভাবেই কাম্য নয়। আমরা আশা করব এ মামলার দ্রুত নিষ্পতির উদ্যোগ নেওয়া হবে। রমনা বটমূলের বোমা হামলায় যারা স্বজন হারিয়েছেন এবং যারা পঙ্গু হয়ে এখনো দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন, বিচারের  দীর্ঘসূত্রতা তাদের জন্য হতাশা সৃষ্টি করছে।

এ দীর্ঘসূত্রতার অবসান হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর