রবিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন

স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় সতর্ক থাকতে হবে

গ্রীষ্মের দাবদাহে পুড়ছে সারা দেশ। গত দুই দিন আবহাওয়া অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী রাজধানীর তাপমাত্রা ছিল এ সময়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে বেশি। দেশের বিভিন্ন স্থানে গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ৩৭ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করেছে। দেশের অনেক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে খরা বিরাজ করলেও হাওর অঞ্চলে অতিবর্ষণের কারণে বন্যাও দেখা দিয়েছে। দেশের হাওর এলাকায় চলতি বছরের এ সময়ে বৃষ্টিপাত হয়েছে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের চেয়েও বেশি। অনাবৃষ্টির কারণে দেশের বহু এলাকায় মাঠের ফসল যখন পুড়ছে, কৃষকদের সেচের জন্য যখন বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে, তখন উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবর্ষণে নষ্ট হচ্ছে হাওর এলাকার ফসল। দেশের একদিকে বৃষ্টিপাত অন্য সময়ের তুলনায় কম হলেও অন্য বিরাজ করছে বিপরীত চিত্র। বিশ্বজুড়ে উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রকৃতিতে বেসামাল অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশেও জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। আবহাওয়াবিদদের মতে, বছরের এ সময়ে বঙ্গোপসাগর থেকে দখিনা বাতাস দেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে বৃষ্টিপাত ঘটায়। এবার হঠাৎ এ সময়ে পশ্চিমা বায়ু বাংলাদেশে প্রবেশ করে ওই দখিনা বায়ুকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জেলার দিকে ঠেলে দিয়েছে। ফলে হাওর এলাকায় টানা বৃষ্টি হলেও সারা দেশে শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে প্রচণ্ড উত্তাপ। ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে হঠাৎ করে। রাজধানীসহ সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। দাবদাহে শিশু ও বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বেশি বেশি পানি পান, সেলাইন ও লেবুর শরবত খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। দাবদাহের তীব্রতা আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকলে তা বিপর্যয়ের কারণ হয়েও উঠতে পারে। গ্রীষ্মে দাবদাহের তীব্রতা প্রমাণ করেছে প্রকৃতি বেসামাল হয়ে উঠলে মানুষের জন্য তা কতটা কষ্টকর হয়ে উঠতে পারে। এ বাস্তবতাকে মনে রেখে যেসব কারণে আবহাওয়ার উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে তা এড়ানোর জন্য যত্নবান হতে হবে। দাবদাহের স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় থাকতে হবে সতর্ক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর