সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

পারমাণবিক যুদ্ধের প্রস্তুতি

এ অর্বাচীন খেলা বন্ধ হোক

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির সংঘাত যেভাবে দানা বেঁধে উঠছে তা বিশ্ব শান্তির জন্য অশনি সংকেত বললেও কম বলা হবে। উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম এমন পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের চেষ্টা চালাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। পিয়ংইয়ংকে এ হঠকারী তত্পরতা থেকে সরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র জঙ্গি বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে কোরীয় উপদ্বীপের সন্নিকটে। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র চীনকে সাফ সাফ বলে দিয়েছে তারা পিয়ংইয়ংকে সামলাতে যদি সহযোগিতা নাও করে, যুক্তরাষ্ট্র একাই ব্যবস্থা নেবে। দুনিয়ার প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাজতন্ত্র উত্তর কোরিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট কিম ইল সুংয়ের ১০৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে উত্তর কোরিয়া ব্যাপক সামরিক শক্তি প্রদর্শন করেছে। একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর এই শক্তি প্রদর্শনীকে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বমশান্তির জন্য হুমকি মনে করছে। বিশেষ করে উত্তর কোরিয়ার হাতে আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র থাকায় তারা পিয়ংইয়ংকে যেভাবেই হোক সামাল দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। উত্তর কোরিয়া বিধ্বংসী অস্ত্র তৈরি করছে এ অভিযোগ অন্তত যুক্তরাষ্ট্রের মুখে শোভা পায় না। তবে উত্তর কোরিয়ার হঠকারী কার্যকলাপ যে আঞ্চলিক ও বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে, তা একটি পরীক্ষিত বিষয়। সমাজতান্ত্রিক এই রাজতন্ত্রের শাসকরা নিজেদের দেশের মানুষকে অনাহারে-অর্ধাহারে রেখে মারণাস্ত্র তৈরিতে ওঠেপড়ে লেগেছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্যও হুমকি সৃষ্টি করছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে মাদক পাচারসহ নানা ধরনের দুর্বৃত্তপনার সঙ্গে তারা জড়িত। বিশ্ব শান্তির পাশাপাশি নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে উত্তর কোরিয়ার শাসককে এসব দুর্বৃত্তপনা থেকে দূরে থাকতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রকেও নিজেদের ক্ষমতা দেখানোর অভ্যাস থেকে বিরত থাকতে হবে। তাদের বুঝতে হবে দুপক্ষের অসহিষ্ণুতার কারণে কোনো পারমাণবিক যুদ্ধ বেঁধে গেলে তাতে কোনো পক্ষই জয়ী হবে না। দুপক্ষের ধ্বংস ডেকে আনে এমন অর্বাচীন খেলা থেকে বিরত থাকাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

সর্বশেষ খবর