সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

দুর্নীতি থেকে দূরে থাকতে হবে

মাওলানা আবদুর রশিদ

ঘুষ, দুর্নীতি ও অসততা থেকে মুমিনদের দূরে থাকার তাগিদ দিয়েছে ইসলাম। দুর্নীতি ও অসততার মাধ্যমে কেউ কোনো অর্থ উপার্জন করে সে অর্থ যদি ভালো কাজেও ব্যয় করে, তা হলেও তা বৈধতা পাবে না। পবিত্র কোরআন এবং রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসে সব ধরনের অবৈধ উপার্জন থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মহান আল্লাহ অতীব পূত পবিত্র। তিনি কেবল পাক পবিত্র বস্তুই কবুল করেন।

হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে দেহের গোশত হারাম মাল দ্বারা গঠিত তা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। হারাম মালে গঠিত প্রত্যেক দেহের জন্য দোজখই বেশি উপযুক্ত। (দারামি)। হারাম উপার্জন ইসলামী দৃষ্টিতে এতটাই দোষণীয়, কেউ হারাম উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল হলে তার ইবাদতও গ্রহণযোগ্য হয় না। হজরত ইবনে ওমর বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো ব্যক্তি ১০ মুদ্রা দিয়ে একটি কাপড় খরিদ করলে তার মধ্যে একটা মুদ্রা অবৈধভাবে অর্জিত হলে যতক্ষণ পর্যন্ত সে ওই কাপড় পরিধান করে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার নামাজ কবুল হবে না। (আহমদ)। ওই হাদিসে স্পষ্ট করা হয়েছে, হারাম উপার্জন এতটাই দোষণীয় যে, তার সামান্যতম কোনো হালাল উপার্জনের সঙ্গে মেশানো হলে তাও হারাম হয়ে যায়।

দুর্নীতির পরিমাণ যত সামান্যই হোক তা কবিরা গুনাহ এবং এজন্য কিয়ামতের দিন জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। উবাদা ইবনুস সামেত (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, তোমরা সুই-সুতা (সামান্য জিনিস পর্যন্ত) জমা দাও। সাবধান আত্মসাৎ করবে না। কেননা আত্মসাৎ কিয়ামতের দিন লজ্জা ও অনুশোচনার কারণ  হবে (নাসাঈ থেকে মিশকাতে)। ঘুষ দুর্নীতি সমাজে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। এক মানুষের সঙ্গে অন্য মানুষের বৈষম্যের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মূল্যবোধের সংকট সৃষ্টি করে। দুর্নতি সামাজিক অগ্রগতির পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে দুর্নীতি থেকে দূরে থাকার তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর