মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রপতির তাগিদ

হাওরের কৃষকদের দুঃখের অবসান হোক

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ পাহাড়ি ঢল ও অতিবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনকালে হাওরের সব নদী খনন ও ফসল রক্ষায় প্রয়োজনীয় বাঁধ নির্মাণের তাগিদ দিয়েছেন। এ উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় রাষ্ট্রপতি বলেছেন, তার জীবনে হাওরের এত ক্ষয়ক্ষতি কখনো দেখেননি। নিজে কৃষকের সন্তান— এই গর্বিত পরিচয় তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, তিনি কৃষকদের রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে হাওর এলাকার চিত্র তুলে ধরবেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সুব্যবস্থার জন্য অনুরোধও জানাবেন। পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে এ বছর হাওর এলাকায় বোরো ফসলের যে ক্ষতি হয়েছে, তা অঞ্চলবিশেষ নয়, জাতীয় বিপর্যয়েরই এক ঘটনা। হাওর এলাকা এক ফসলের ওপর নির্ভরশীল। এ ফসল শুধু এলাকাবাসীর ক্ষুধা নিবারণ করে না, দেশের খাদ্য নিরাপত্তায়ও অবদান রাখে। এ বছর হাওর এলাকার হাজার হাজার কোটি টাকার বোরো ধান নষ্ট হয়েছে। এ ক্ষয়ক্ষতিকে নিছক প্রাকৃতিক দুর্যোগ বললেও ভুল বলা হবে। কারণ এ বিপর্যয়ের পেছনে জড়িত কিছু মানুষের অতিলোভ ও দায়িত্বহীনতা। হাওর এলাকার ফসল রক্ষায় প্রতি বছর যে সরকারি অর্থ বরাদ্দ করা হয় তার সিংহভাগ লুটপাটের শিকার হয়— এ অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। আমরা বার বার এ কলামে হাওর এলাকার ফসল রক্ষার কার্যক্রমের সঙ্গে কৃষকদের জড়িত করার তাগিদ দিয়েছি। কারণ হাওরের ফসলের সঙ্গে কৃষকের জীবন-জীবিকার বিষয়টি জড়িত। ফসল রক্ষার কার্যক্রমে তাদের জড়িত করা হলে বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থের শতভাগ সদ্ব্যবহার নিশ্চিত হবে। এখন এ অর্থ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং অসৎ জনপ্রতিনিধিদের ‘এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই’র যে প্রক্রিয়া চলছে তা বন্ধ হবে। হাওর এলাকার নদ-নদী খনন করে পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়টিও প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার। এর ফলে আগাম বর্ষণ কিংবা পাহাড়ি ঢলে ফসলের মাঠ ডুবে যাওয়ার তাত্ক্ষণিক বিপদ এড়ানো যাবে। আমরা আশা করব রাষ্ট্রপতির তাগিদ যুগ যুগ ধরে বিদ্যমান সমস্যার সমাধানের পথ দেখাবে। কৃষকের মাথার ঘাম পায়ে ফেলা পরিশ্রমে হাওরে যে ফসল ফলে আগামীতে তা যাতে আর নষ্ট  না হয় তা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সবকিছুই করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর