বুধবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা

দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

দেশের মানুষের কল্যাণে সরকারের পক্ষ থেকে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এসব প্রকল্পের যথাযথ বাস্তবায়নের ওপর সরকারের সাফল্যও অনেকাংশে নির্ভরশীল। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, প্রকল্প বাস্তবায়নে সময়ক্ষেপণ যেন অনতিক্রম্য নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব যাদের তাদের দায়িত্বহীনতা ও অসততা প্রতিটি প্রকল্পের সময়মতো বাস্তবায়ন অনিশ্চিত করে তুলছে। বর্তমান সরকারের আমলে সরকারি কর্মচারীদের বেতন ও সুযোগ-সুবিধা কয়েকগুণ বাড়লেও বাড়েনি কাজের গতি। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির থাবা হ্রাস পাওয়ার বদলে আরও বেড়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তা শুধু গর্হিত নয়, অনাকাঙ্ক্ষিত। সারা দেশে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়নে যে দীর্ঘসূত্রতা চলছে তা আমাদের কর্তাব্যক্তিদের যোগ্যতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। আগুনের হাত থেকে জানমাল রক্ষায় ২০০৬ সালে সারা দেশে ৭৮টি স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ২০১১ সালে নেওয়া হয় আরও ২৫টি স্টেশন নির্মাণের প্রকল্প। ২০১২ সালে আরও ১৫৬টি ফায়ার সার্ভিস নির্মাণের অনুমোদন দেয় সরকার। এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। এ জন্য ৮৮৮ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দও দেওয়া হয়। তিনটি প্রকল্পই সময়মতো বাস্তবায়ন না হওয়ার অসামান্য কৃতিত্ব দেখিয়েছে। কর্তাব্যক্তিরা নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থতা দেখালেও প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা ও প্রকল্প ব্যয় বাড়ানোর যে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তা অসামান্য। ৮৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প ১২৫৭ কোটি টাকায় নির্ধারণ করে ২০১৯ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের সময় বাড়ানো হয়েছে। এ ব্যাপারে যে ৩৬৯ কোটি টাকা বেশি ব্যয় হচ্ছে তা জনগণের ট্যাক্সের টাকা থেকেই যে ব্যয় হবে সহজে অনুমেয়। তবে এ টাকার এক বড় অংশ প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত কর্তাব্যক্তিদের পকেটে যাবে কিনা এমন প্রশ্নও রয়েছে বোদ্ধাজনদের মধ্যে।  আমাদের মতে, জনগণের টাকার অপচয় রোধে সময় মতো প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারকে কঠোর হতে হবে। ব্যর্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করে বিদায় দেওয়ার কথাও ভাবা উচিত।

সর্বশেষ খবর