বুধবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাবা-মায়ের প্রতি সদাচরণের তাগিদ দেয় ইসলাম

মাওলানা মুহাম্মদ শাহাবুদ্দিন

পবিত্র কোরআনের সূরা নিসার ৩৬ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে, আল্লাহর ইবাদত কর, কোনো কিছুতেই তার শরিক কর না এবং মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার কর। মাতা-পিতার প্রতি সন্তানের আচরণ কেমন হবে সে সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের সূরা বনি ইসরাইলের ২৩ ও ২৪ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘তাদের কেউ অথবা উভয়ই যদি তোমার জীবনদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হন তাদের সঙ্গে সুআচরণ কর এবং কখনো ওহ শব্দটিও উচ্চারণ কর না। তাদের সঙ্গে নম্রভাবে কথা বল এবং বল, হে আল্লাহ! তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন করে আমাকে তারা শৈশবে লালন-পালন করেছেন। পবিত্র কোরআন এবং রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসে বাবা-মায়ের প্রতি সন্তানের দায়িত্ববোধ সম্পর্কে বারবার সচেতন করে দেওয়া হয়েছে। ধর্মীয় প্রয়োজনে জিহাদে অংশগ্রহণকে ইসলামে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বাবা-মায়ের সেবায় সন্তানের আত্মনিয়োগকে তারচেয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বুখারি শরিফের একটি হাদিস এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য। ‘একবার এক ব্যক্তি রসুলে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জিহাদে অংশগ্রহণের অনুমতি প্রার্থনা করল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার বাবা-মা কি জীবিত আছেন? লোকটি জবাব দিল হ্যাঁ। রসুলুল্লাহ বললেন, তুমি তাদের সেবাযত্নে নিজেকে আত্মনিয়োগ কর। বাবা-মায়ের প্রতি অনুগত থাকাকে ইসলাম এতটাই গুরুত্ব দিয়েছে যে, তারা যদি মুশরিকও হয় তারপরও আল্লাহ ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হুকুমের পরিপন্থী না হলে তাদের অবাধ্য হওয়া যাবে না। মহান আল্লাহ এবং রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হুকুমের খেলাপ হলে এই একটি মাত্র ক্ষেত্রে সন্তান তার বাবা-মায়ের হুকুমকে লঙ্ঘন করতে পারবে।

বাবা-মা সন্তানের জন্য অসীম ত্যাগ স্বীকার করেন। সন্তানের সুখের জন্য তারা পরিশ্রম করেন, নিজের সুখকে বিসর্জন দেন। বাবা-মায়ের কাছে সন্তানের যে ঋণ তা কিছুতেই পূরণ হওয়ার নয়। বিশেষ করে প্রতিটি জননী তার সন্তানদের জন্য যে কষ্ট ভোগ করেন তার কোনো তুলনাই নেই।

কল্যাণকামী সমাজ গড়তে হলে বাবা-মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। বাবা-মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা তাদের মধ্যে যে কৃতজ্ঞতাবোধের উন্মেষ ঘটায় তা তাদের সর্বক্ষেত্রে বিনয়ী ও কৃতজ্ঞ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে।  আল্লাহ আমাদের বাবা-মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা এবং তাদের সেবা করার তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী  গবেষক।

সর্বশেষ খবর