বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে বাণিজ্য

বিদ্যমান সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে

সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের সুবর্ণ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তা কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না যথাযথ উদ্যোগের অভাবে। ভারতের অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে সেভেন সিস্টার্সভুক্ত রাজ্যগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ জটিল ও ব্যয়বহুল। ওইসব রাজ্য থেকে সেভেন সিস্টার্সে পণ্য পরিবহনে যে খরচ হয়, বাংলাদেশ থেকে পণ্য গেলে খরচ লাগে তার চেয়ে অনেক কম। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হলে ক্রেতারা অনেক কম দামে পণ্য কেনার সুযোগ পাবেন। সেভেন সিস্টার্সভুক্ত রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য সহজ করা গেলে এসব রাজ্যে প্রতিবছর ২০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে বিশাল বাণিজ্যিক ঘাটতি রয়েছে তা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। সেভেন সিস্টার্সভুক্ত রাজ্যগুলোর ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে উৎসাহী হলেও নানা প্রতিবন্ধকতায় তারা সিদ্ধান্ত নিতে সংশয়ে ভুগছেন। সেভেন সিস্টার্সে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি ও আমদানির ক্ষেত্রে যে সব বাধা রয়েছে তা অপসারণে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে নজর দিতে হবে। বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে হলে ভারতের আমদানিকারকদের ১১০ শতাংশ টাকা দিয়ে এলসি খুলতে হয়। বাংলাদেশি রপ্তানিকারককে প্রতিবছরই দিল্লি থেকে লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। এ ছাড়া রুপি-ডলার-টাকা রূপান্তরের জটিল প্রক্রিয়ায় কমে যায় টাকার পরিমাণ। এসব সমস্যা সমাধান করতে পারলে সেভেন সিস্টার্সে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ সহজ হবে। ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে সেভেন সিস্টার্সের রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের খরচ বাংলাদেশ থেকে পণ্য পরিবহনের তুলনায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়, সময়ও লাগে পাঁচ থেকে সাত দিন। তাই এ সাত রাজ্যে বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি বৃদ্ধি করলে রাজ্যবাসী কম মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পাবে। যা এসব রাজ্যের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। আমরা আশা করব দ্বিপক্ষীয় স্বার্থেই সেভেন সিস্টার্সের রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টিতে উদ্যোগ নেওয়া হবে। দুই দেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠকরণের  স্বার্থে এ ব্যাপারে ঢাকা ও দিল্লিকে সদিচ্ছা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

সর্বশেষ খবর