বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি

মুনাফাখোরদের সামাল দিন

নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলছে। বছরের এ সময়ে তরিতরকারির বাজার কিছুটা চড়া থাকে এটা মেনে নেওয়া গেলেও চাল, সয়াবিন তেল, পিয়াজ, আদার দাম যেভাবে বাড়ছে তা মেনে নেওয়া কঠিন। আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম কমলেও গত দুই মাসে দেশীয় বাজারে দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। চালের দাম বৃদ্ধির যৌক্তিক কারণ না থাকলেও ক্রেতাদের তা মেনে নিতে হচ্ছে। মাহে রমজানের এক দেড় মাস আগে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি জনমনে উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করছে। রোজার আগে ঐতিহ্য অনুযায়ী দাম আরও এক দফা বৃদ্ধি পেলে তা জনভোগান্তি আরও বাড়াবে। সাধারণ মানুষের আয় সেভাবে বৃদ্ধি না পেলেও কথায় কথায় নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি করছে। চালের দাম গত এক মাসে বেড়েছে কেজিতে গড়ে ১০ টাকা কিংবা আরও বেশি হারে। এ বছর হাওরে বোরো ফসলের একটা বড় অংশ নষ্ট হওয়ায় আসন্ন বোরো মৌসুমে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্বল্প আয়ের মানুষ। বাজারে পণ্য কিনতে গিয়ে তারা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। দেশে চাল, ডাল, চিনি, আদা, রসুন, পিয়াজ ইত্যাদি নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও কেন দাম বাড়ছে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তার সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। গত ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিনের দাম ছিল ৮০০ ডলার, মার্চের শেষে তা ৭১০ ডলারে নেমে এসেছে। অথচ এ সময়ে দেশে সয়াবিনের দাম প্রতি লিটারে অন্তত ৫ টাকা বেড়েছে। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে অসৎ ব্যবসায়ীদের কারসাজি জড়িত বলে মনে করা হয়। চাঁদাবাজি বহুক্ষেত্রে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগায়। বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকায় অসৎ ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেলেই মূল্যবৃদ্ধির কসরত চালাচ্ছে। এর ফলে ক্ষুণ্ন হচ্ছে সরকারের ভাবমূর্তি। নিজেদের স্বার্থেই সরকার মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের অপতত্পরতায় বাদ সাধবে—আমরা এমনটিই দেখতে চাই। এ উদ্দেশে বাজার নিয়ন্ত্রণে নজরদারি বাড়াতে হবে।

সর্বশেষ খবর