বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

মেরাজের প্রাপ্তি নামাজ

মাওলানা মো. উবায়দুল হক সালেহী

মেরাজের প্রাপ্তি নামাজ

নবুয়তের দশম বছরে রজব মাসের ২৭ তারিখ নবী (সা.)-এর ফুফু উম্মে হানির ঘর থেকে মেরাজের শুভ যাত্রা শুরু হয়। বিশ্ব ইতিহাসে মেরাজ একটি তাত্পর্যমণ্ডিত ঘটনা। হাদিস শরিফ থেকে জানা যায়, রসুল (সা.) উম্মে হানির ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এমন সময় তিনজন ফেরেশতা এসে রসুল (সা.)-কে জমজম কূপের কাছে নিয়ে যান। জিবরাইল (আ.) রসুল (সা.)-এর বুক চিড়ে ভিতরের সবকিছু জমজমের পানি দিয়ে ধুয়ে দেন। এখান থেকে বোরাকযোগে বাইতুল মাকদাসে সব নবীর উপস্থিতিতে রসুল (সা.) ইমাম হয়ে নামাজ আদায় করেন। বাইতুল মাকদাস থেকে আকাশ ভ্রমণ শুরু হয়। রসুল (সা.) প্রথম আসমানে হজরত আদম (আ.)-এর সঙ্গে, দ্বিতীয় আসমানে হজরত ঈসা ও ইয়াহিয়া (আ.)-এর সঙ্গে, চতুর্থ আসমানে হজরত ইদরিস (আ.)-এর সঙ্গে, পঞ্চম আসমানে হজরত হারুন (আ.)-এর সঙ্গে, ষষ্ঠ আসমানে হজরত মুসা (আ.)-এর সঙ্গে এবং সপ্তম আসমানে হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সঙ্গে  সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এঁরা সবাই রসুল (সা.)-কে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং রসুল (সা.)-এর রিসালাতকে স্বীকার করে নেন। সপ্তম আসমান থেকে রসুল (সা.) সিদরাতুল মুনতাহায় যান। এখানে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আল্লাহতায়ালা রসুল (সা.)-কে যা দেওয়ার দেন এবং যা ওহি করার করেন। রসুল (সা.) আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর উম্মতের জন্য উপহারস্বরূপ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়ে পৃথিবীর পথে রওনা করেন। (জাদুল মাআদ, পৃষ্ঠা ৪৭ ও ৪৮)। আল্লাহতায়ালা মেরাজের রাতে রসুল (সা.)-এর মাধ্যমে আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ উপহার দিয়েছেন। সঠিকভাবে নামাজ সংরক্ষণের মাধ্যমেই আমরা মেরাজের প্রকৃত তাত্পর্য উপলব্ধি করতে পারব। মূলত নামাজ দীনের খুঁটি এবং ইসলামের মূল ভিত্তি। যে সঠিকভাবে নামাজ সংরক্ষণ করবে সে তার দুনিয়া-আখিরাত হেফাজত করল। আর যে নামাজ ছেড়ে দিল সে তার দীন-দুনিয়া ধ্বংস করল। রসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নামাজের সংরক্ষণ করবে অর্থাৎ যথাযথভাবে সালাত আদায় করবে, কেয়ামতের দিন তা তার জন্য নূর, দলিল ও মুক্তির উপায় হবে। আর যে নামাজের সংরক্ষণ করবে না, তা তার জন্য নূর, দলিল ও মুক্তির উপায় হবে না। তার হাশর হবে ফেরাউন, কারুণ, ওবাই ইবনে খালফের সঙ্গে।’ (মুসনাদে আহমাদ)।

লেখক : প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, নন্দীপাড়া মাদ্রাসায়ে সোনার মদিনা, বাসাবো, খিলগাঁও, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর