শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাণিজ্যের বাধা দূর হোক

প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের উদ্যোগ নিন

বাংলাদেশের বিনিয়োগনীতি অনেক দেশের তুলনায় উদার। এদেশের রয়েছে সস্তা জনশক্তি। রয়েছে নিজস্ব বড় বাজার। দুনিয়ার দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তি চীন ও ভারতের নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থানগত গুরুত্বও অনস্বীকার্য। তারপরও বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের গতি সন্তোষজনক নয়। বিদেশিরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে খুব একটা আগ্রহী নয়। দেশি ব্যবসায়ীরাও নতুন ব্যবসায় জড়িত হতে প্রায়ই অনীহা দেখান। কেন তাদের অনীহা সে সত্যটি উঠে এসেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রণীত এক তুলনামূলক চিত্রে। যাতে বলা হয়েছে, বিনিয়োগ প্রকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহ নিতে চাইলে যেখানে দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৮ দিন, সিঙ্গাপুরে ৩১ ও ভুটানে ৬১ দিন সময় লাগে, সেখানে বাংলাদেশে লাগে ৪০৪ দিন। সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ‘ইজি অব ডুয়িং বিজনেস অ্যান্ড ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী ডুয়িং বিজনেসে বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার বাস্তবতা স্বীকার করে বলেছেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ শুরু করতে দেশে তিন ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। আমাদের সময় বেশি লাগে, অনেক প্রক্রিয়া পার হতে হয় এবং খরচও অনেক বেশি করতে হয়। তুলনামূলক চিত্রটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বাংলাদেশে জমি নিবন্ধন সম্পন্ন করতে যেখানে ২৪৪ দিন সময় লাগে, সেখানে সিঙ্গাপুরে লাগে সাড়ে ৪ দিন, নিউজিল্যান্ডে একদিন, দক্ষিণ কোরিয়ায় সাড়ে ৬ দিন এবং ভুটানে ৭৭ দিন। ব্যবসা শুরু করতে বাংলাদেশে সাড়ে ১৯ দিন সময় লাগলেও সিঙ্গাপুরে আড়াই দিন, নিউজিল্যান্ডে ১২ ঘণ্টা, দক্ষিণ কোরিয়ায় চার দিন এবং ভুটানে ১৫ দিন সময় লাগে। নির্মাণ কাজ শুরুর অনুমতি নিতে সিঙ্গাপুরে ২৬ দিন, দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৮ দিন, ভুটানে ১৫১ দিন লাগলেও বাংলাদেশে লাগে ২৭৮ দিন। এসব সেবায় সময়ের পাশাপাশি ব্যয়েরও একটি তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি শাখা। যাতে স্বীকার করা হয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরুসহ অন্যান্য প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে যে ব্যয় হয় তা অন্য দেশের তুলনায় বেশি।  বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হলে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।  বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তুলনামূলক চিত্রটি ভুল শোধরানোর পথ দেখালে তা হবে এক বড় অর্জন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর