বুধবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

সালাম আন্তরিকতা বাড়িয়ে দেয়

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

সালাম আন্তরিকতা বাড়িয়ে দেয়

সালাম দুই মুসলমানের মধ্যে আন্তরিকতা বাড়িয়ে দেয়। সমাজে ও সংসারে সবার মধ্যে হৃদ্যতা ও ভালোবাসা তৈরি করে দেয়। পরস্পর থেকে হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে। সবার মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য গড়ে তোলে। তাই কেউ সালাম দিলে সুন্দরভাবে তার জবাব দিতে হবে। নইলে গুনাহ হবে।  পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আর যখন কেউ মর্যাদা সহকারে তোমাকে সালাম করে তখন তাকে তার চেয়ে ভালো পদ্ধতিতে জবাব দাও, অথবা কমপক্ষে তেমনিভাবে (জবাব দাও)। আল্লাহ সব জিনিসের হিসাব গ্রহণকারী।’ (সূরা আন্ নিসা : ৮৬) এক মুসলমান যখন অপর মুসলমানের বাসায় প্রবেশ করবে তখন তার অনুমতি  নেবে এবং সালাম দেবে। আল্লাহপাক বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ছাড়া অন্য কারও গৃহে গৃহবাসীদের অনুমতি না নিয়ে এবং তাদের সালাম না করে প্রবেশ করিও না। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম। আশা করা যায় যে, তোমরা এর প্রতি অবশ্যই খেয়াল রাখবে।’ (সূরা আন নূর : ২৭) দুনিয়াতে যেমন সালাম দিয়ে সম্মান জানানো হয় তেমনি ইমানদার যখন মারা যায় এবং বেহেশতে প্রবেশ করে তখন ফেরেশতারা তাকে সালাম জানিয়ে সম্মান করে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘এমন মুত্তাকীদের, ফেরেশতারা যাদের জান কবজ করে পবিত্র থাকা অবস্থায়। তখন ফেরেশতারা বলে, তোমাদের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। তোমরা (দুনিয়াতে) যা করতে তার প্রতিদানে জান্নাতে প্রবেশ কর।’ (সূরা আন্ নাহল : ৩২) হাদিসের কিতাবগুলোতেও সালামের ব্যাপক প্রচলনের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল (সা.) বলেছেন : কথাবার্তা বলার আগেই সালাম করবে। (তিরমিজি) অপর বর্ণনায় এসেছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি রসুল (সা.)-এর কাছে জিজ্ঞাসা করল, ইসলামের কোন অভ্যাসটি উত্তম? রসুল (সা.) বলেছেন : ক্ষুধার্তকে খানা খাওয়াবে এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দিবে। (বুখারি) কে কাকে সালাম করবে এ বিষয়ে নবী (সা.) বলেন, ছোটরা বড়দের, হাঁটা ব্যক্তি বসা ব্যক্তিকে এবং কমসংখ্যক লোক বেশিসংখ্যক লোককে সালাম দেবে। (বুখারি) প্রথমে সালামকারীর মর্যাদার বিষয়ে এসেছে, রসুল (সা.) বলেছেন : সে ব্যক্তি আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী যে প্রথমে সালাম করে। (তিরমিজি ও আবু দাউদ) হাদিসে আরও এসেছে, আগে সালামকারী অহংকার থেকে মুক্ত। সালাম দিলে পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা তৈরি হয়। এ বিষয়ে এসেছে, হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল বলেছেন : যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ সে সত্তার শপথ করে বলছি, তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ না তোমরা ইমান গ্রহণ করবে। আর ততক্ষণ পর্যন্ত ইমান লাভ করতে পারবে না যতক্ষণ না পরস্পরকে ভালোবাসবে। আর আমি কি তোমাদের এমন কথা বলব না যা তোমাদের মাঝে পারস্পরিক ভালোবাসা বৃদ্ধি করবে?  আর তা হলো তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রচলন করবে। (তিরমিজি)

লেখক : খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর