বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

হাশরে ব্যভিচারীদের কঠিন শাস্তি পেতে হবে

মাওলানা মুহম্মাদ সাহেব আলী

ইসলাম সব ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে। দুনিয়ায় মানুষের যাপিত জীবনের ভালোমন্দের জন্য হাশর বা শেষ বিচারের দিন মানুষকে জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। যিনি এ জবাবদিহিতায় উত্তীর্ণ হবেন তিনি জান্নাতে ঠাঁই পাবেন আর যিনি উত্তীর্ণ হবেন না তাকে জাহান্নামের শাস্তি পেতে হবে। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত : রসুল (সা.) বলেছেন, হাশরের দিন আল্লাহ তিন শ্রেণির লোকের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন না, তাদের পবিত্রও করবেন না এবং তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি সুনির্ধারিত রাখবে। তারা হলো— ১. ব্যভিচারী বৃদ্ধ  ২. মিথ্যাবাদী শাসক এবং ৩. অহংকারী দরিদ্র লোক। মুসলিম, নাসায়ি।

হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমি জানতে চাইলাম, হে আল্লাহর রসুল! আল্লাহর কাছে সবচেয়ে জঘন্য কবিরা গুনা কী? তিনি বলেন, ‘কাউকে তোমার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সমকক্ষ মনে করা।’ আমি বললাম, এ তো জঘন্য গুনা, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, ‘সন্তান তোমার জীবিকায় অংশীদার হবে এই ভয়ে তাকে মেরে ফেলা।’ আমি বললাম, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, ‘প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া।’ অনন্তর মহান আল্লাহ এর সপক্ষে এ আয়াত নাজিল করেন, ‘আর যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য উপাস্যের ইবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন সঙ্গত কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচারে লিপ্ত হয় না। এগুলো যারা করে তারা মহাপাপে লিপ্ত। হাশরের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে। তারা সর্বদা অবমাননাকর এ শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। তবে যারা তওবা করেছে তাদের কথা স্বতন্ত্র।

এখানে বিশেষভাবে লক্ষণীয়, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়াকে আল্লাহর তাওহিদ বা একাত্মবাদ এবং অবৈধ নরহত্যার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে।

বুখারিতে সামুরা বিন জুনদুব (রা.) কর্তৃক বর্ণিত, রসুল (সা.)-এর স্বপ্নের বর্ণনাসংবলিত হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, জিবরাইল ও মিকাইল (আ.) রসুল (সা.)-এর কাছে এলেন। রসুল (সা.) বলেন, ‘আমি তাদের সঙ্গে অগ্রসর হলাম। চলতে চলতে বড় চুল্লির মতো একটি বস্তুর কাছে এসে পৌঁছলাম, যার উপরিভাগ সংকীর্ণ এবং নিম্নাংশ স্ফীত। ভিতরে বহু উলঙ্গ নারী-পুরুষকে দেখতে পেলাম, নিচ থেকে কিছু সময় পর পর অগ্নিশিখা এসে তাদের ওপর দাউ দাউ করে জ্বলছিল, আর তারা সে আগুনের তীব্র উত্তাপ ও দহনে বিকটভাবে চিৎকার করছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ওহে জিবরাইল! এরা কারা? তিনি বললেন : এরা ব্যভিচারী পুরুষ ও ব্যভিচারিণী নারী। তাদের ওপর এ শাস্তি কিয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে।’ বুখারি।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর