বৃহস্পতিবার, ৪ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

কালবৈশাখীর তাণ্ডব

দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে

প্রাকৃতিক দুর্যোগ কী বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে তা যেন চোখে আঙ্গুল তুলে দেখিয়েছে রবি ও সোমবারের কালবৈশাখীর ঝড়। ঝড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ধ্বংস হয়েছে শত শত ঘরবাড়ি। উৎপাটিত হয়েছে বিপুল সংখ্যক গাছপালা। সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার সকালে দুই দফা বিপর্যয়ে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। দেশের ৩২টি জেলায় বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সোমবার রাতে কালবৈশাখীর কবলে আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ ২৩০ হাজার ভোল্ট লাইন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জাতীয় গ্রিড লাইনের টাওয়ার ভেঙে পড়ার কারণে। পরদিন সকালে ঘোড়াশাল-ঈশ্বরদী লাইনে দ্বিতীয় দফা বিপর্যয়ের কারণ কী তা তাত্ক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। বিদ্যুৎ বিভাগ এ বিপর্যয়কে কারিগরি ত্রুটি বলে অভিহিত করেছে। এ বিপর্যয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রায় ২৫টি বিদ্যুেকন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হলেও জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডকে এখনো ঝুঁকিমুক্ত করা সম্ভব হয়নি। কালবৈশাখীর ঝড়ে ১৫ জন মানুষের মৃত্যুসহ ব্যাপক সম্পদহানি জাতীয়ভাবেও দুঃখজনক ঘটনা। হাওর এলাকায় কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ধান, মাছ, হাঁস ও গবাদিপশুর পর অনেকের মাথা গোঁজার ঠাঁইও ধ্বংস হয়ে গেছে। শুধু সুনামগঞ্জেই বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় তিন হাজার ঘরবাড়ি। আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির সংখ্যা সাড়ে ৮ হাজারেরও বেশি। ঝড়ে বোরো ধানসহ রবি ফসলের ক্ষয়ক্ষতিও খুব একটা কম নয়। আগাম পাহাড়ি ঢলে হাওর এলাকা ও একটানা বর্ষণে চলন বিলাঞ্চলে ফসলের ক্ষতির পর কালবৈশাখীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি প্রকৃতির বেসামাল আচরণের যে চিত্র তুলে ধরেছে তা উদ্বেগের। আবহাওয়ার অশুভ পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য বিপদ ডেকে আনছে এটি জানা থাকলেও সে বিপদ কত ভয়াবহ হতে পারে হাওরের আগাম বন্যা তা জানান দিয়েছে। বজ্রপাত ও কালবৈশাখীর মাতম প্রমাণ করেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কাছে মানুষের অসহায়ত্ব। তবে এ বিপদে হতাশ বা পরাজিত হলে চলবে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকার সক্ষমতা জাতিকে অর্জন করতেই হবে। দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে পুরো জাতিকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর