দক্ষিণ এশীয় স্যাটেলাইট জি-স্যাটের সফল উেক্ষপণের মাধ্যমে মহাকাশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উপমহাদেশের সাতটি দেশের যে মেলবন্ধনের সূচনা হলো তা এক যুগান্তকারী ঘটনা। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার এ উপগ্রহটি গত শুক্রবার উেক্ষপণ করা হয় ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরি কোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তান ব্যতীত সার্কের অন্য ছয়টি দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ উেক্ষপণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। স্মর্তব্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে জি-স্যাট উপগ্রহ উেক্ষপণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সার্কভুক্ত সব দেশকে স্যাটেলাইট সহযোগিতার আওতায় আনার প্রস্তাব দেওয়া হলে পাকিস্তান তাদের নিজেদের স্যাটেলাইট কর্মসূচি থাকায় এ ক্ষেত্রে যুক্ত হতে রাজি হয়নি। দক্ষিণ এশিয়ার জন্য উপহারস্বরূপ এই স্যাটেলাইটের সম্পূর্ণ খরচ বহন করেছে ভারত। ৩৬ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে মহাকাশের কক্ষপথে যাওয়ার পর স্যাটেলাইটটির ১২ ট্রান্সপন্ডারের একটি করে যেমন খুশি ব্যবহার করতে পারবে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা। আফগানিস্তান এখনো চুক্তি না করায় আপাতত পুরো সুবিধা পাবে না। তবে চুক্তি হলে তারাও পাবে সব সুবিধা। বাকি ট্রান্সপন্ডারগুলো ব্যবহার হবে সাধারণভাবে। উপগ্রহ যোগাযোগের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও তথ্য পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। এ স্যাটেলাইটে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঙ্গে জরুরি যোগাযোগের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে। আর সাত দেশের সরকারগুলোও তাদের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে পাবে একটি স্বকীয় মাধ্যম। জি-স্যাটকে ব্যবহার করে তৈরি করা যাবে সঠিক ভৌগোলিক ম্যাপ। প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধানেও উপগ্রহটি ব্যবহার করা যাবে। দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে স্যাটেলাইট সহযোগিতা প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম সংকেত জানাসহ টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা দেবে। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মৈত্রীর বন্ধন দৃঢ় করতেও তা অবদান রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।