মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

সমস্যাকীর্ণ স্থলবন্দর

ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলুন

দেশের আমদানি-রপ্তানির সিংহ দরজা বলে পরিচিত স্থলবন্দরগুলোর হতশ্রী অবস্থা ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বিসংবাদ ডেকে আনছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও অন্যান্য সুবিধার অভাবে প্রতিনিয়তই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বাড়ছে আমদানি-রপ্তানির খরচও। খোলা আকাশের নিচে আমদানি পণ্য পড়ে থাকছে দিনের পর দিন। পণ্য খালাসের অপ্রতুল সুযোগ-সুবিধার কারণে মালবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি জমে যাচ্ছে বিভিন্ন স্থলবন্দর এলাকাজুড়ে। দেশের ১৩টি স্থলবন্দর যেন অব্যবস্থা আর দুর্নীতির নির্মম শিকার। দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলের মাধ্যমে বছরে ২০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি-রপ্তানি হলেও প্রতি পদে সমস্যার শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। শুধু স্থলবন্দর নয়, দক্ষ জনবলের অভাবে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কার্যক্রমেও সৃষ্টি হচ্ছে নানা সমস্যা। শুল্কায়ন প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। বছরে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয়কারী কাস্টম হাউসে রাজস্ব আদায় নিয়ে কাস্টমস এবং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই লেগেই আছে। দুই পক্ষের মধ্যে সমন্বয় বাড়লে রাজস্ব আদায় যে আরও গতিশীল হতো সন্দেহ নেই। স্থলবন্দরে জায়গা সংকটে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে বিভিন্ন ধরনের মেশিনারিজ, গাড়ি, কেমিক্যালসহ শত শত কোটি টাকার পণ্য। বন্দরের শেডে জায়গা না থাকায় রেললাইনের পাশের গর্তে পড়ে আছে ভারত থেকে আমদানিকৃত গাড়ি। দেড় যুগ আগের অনুপযোগী পুরনো ও জরাজীর্ণ শেড এবং ইয়ার্ড দিয়ে চলছে বন্দরের কার্যক্রম। পুলিশ, কাস্টমস ও আওয়ামী লীগ নেতাদের তিন সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি দেশের অন্যতম বৃহত্তম বুড়িমারী স্থলবন্দর। দিন দিন জৌলুস হারাচ্ছে বন্দরটি। সিন্ডিকেটের বেপরোয়া চাঁদাবাজির কারণে বাইরের ব্যবসায়ীরা এই বন্দরে আসছেন না। বিদেশ গমনকারীরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এ বন্দর থেকে। একই অবস্থা বিরাজ করছে হিলি, সোনা মসজিদ, বিলোনিয়া, বাংলাবান্ধাসহ অন্যান্য স্থলবন্দরে। স্থলবন্দরগুলোর বিদ্যমান সমস্যার সমাধানে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি প্রতিটি বন্দরের আধুনিকায়নে উদ্যোগ নিতে হবে। ব্যবসাবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে কার্যকর ব্যবস্থা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর