বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

যারা সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে

মুফতি আইনুল ইসলাম কান্ধলবী

যারা সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে

ইমাম আহমদ (রা.) এবং ইবনে হাব্বান হজরত আবদুল্যাহ ইবনে ওমর (রা.)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, হজরত রসুলে কারীম (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে দারিদ্র্যপীড়িত মুহাজিরগণ, যাদের দ্বারা ইসলামী রাষ্ট্রের সীমান্তের হেফাজত হয়। এ হাদিসে তিনি এ কথাও ইরশাদ করেছেন, আল্লাহপাক ফেরেশতাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তাকে আদেশ দেবেন যে, তোমরা মুহাজিরদের কাছে যাও এবং তাদের আমার সালাম পৌঁছাও। আল্লাহপাক ইরশাদ করবেন— ‘এরা আমার এমন বান্দা যারা আমার ব্যতীত আর কারও বন্দেগি করত না। কোনো কিছুকে আমার সঙ্গে শরিক করত না। তাদেরই সীমান্তে প্রেরণ করা হতো এবং যাবতীয় অপ্রিয় বিষয় থেকে তাদের দ্বারা হেফাজত হতো। যখন তাদের কারও মৃত্যু হতো তখন মনের আকাঙ্ক্ষা মনে নিয়েই মৃত্যুবরণ করত, আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হওয়ার সুযোগ হতো না এরপর নির্দেশ মোতাবেক ফেরেশতারা জান্নাতের প্রত্যেকটি দ্বারে উপস্থিত হবে এবং জান্নাতবাসীকে সালাম করবে। তখন তাদের শেষ কথা হবে ‘আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন’, আল্লামা সানাউল্যাহ পানিপথি (রা.) লিখেছেন— এর অর্থ হলো যখন জান্নাতবাসী জান্নাতে প্রবেশ করবেন এবং তাদের জন্য সংরক্ষিত নেয়ামতসমূহ প্রত্যক্ষ করবেন তখন আল্লাহপাকের রহমত দেখে তার প্রশংসা করে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলবেন। আল্লামা বগভী (রা.) লিখেছেন জান্নাতবাসী কথা শুরু করবেন আল্লাহপাকের তসবিহ দ্বারা এবং শেষ করবেন ‘আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন’ দ্বারা, এভাবে জান্নাতবাসী আল্লাহপাকের শোকর আদায় করবেন। আল্লামা ইবনে কাসীর (রা.) ইবনে হাইয়্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছেন, কোনো জান্নাতি ব্যক্তি যখন ‘সোবহানাকাল্লাহুম্মা’ বলবেন, তখন তার কাছে দশ হাজার খাদেম স্বর্ণ নির্মিত পাত্র নিয়ে হাজির হবে। তাফিসরে মোয়ালেমোত তানজিলে আল্লামা হোসাইন ইবনে মাস্উদ আল মোহাম্মদ নকভী (রা.) এ কথাটির উল্লেখ করেছেন, এমনিভাবে আল্লামা ফতেহ মোহাম্মদ তায়েব লকনভী তার খোলাসাতুততাফসিরেও এ কথাটির উল্লেখ করেছেন। জান্নাতবাসী সুস্বাদু খাবার গ্রহণ করার পর আল্লাহপাকের শোকর আদায় করে পাঠ করবে আলহামদুলিল্লাহ। আলোচ্য আয়াতে জান্নাতবাসীর তিনটি বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হয়েছে— (১) তাদের কথা হবে ‘সোবহানাকাল্লাহুম্মা’ কোনো কিছুর ইচ্ছা হলে এ বাক্যটি উচ্চারণ করার সঙ্গে সঙ্গে ওই ইচ্ছাটি পূর্ণ হবে। (২) একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় সালাম বিনিময় করবেন। তারা আল্লাহপাকের প্রতি হামদ পেশ করবেন, তথা আল্লাহপাকের প্রশংসা করে তার অন্তহীন নেয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন। এর দ্বারা এ কথা প্রমাণিত হয় যে, যারা সর্বদা আল্লাহপাকের তসবিহ পাঠে ব্যস্ত থাকে এবং যার হাত এবং রসনা দ্বারা মানুষকে কষ্ট দেয় না সর্বাবস্থায় আল্লাহপাকের শুকর আদায় করে তারাই জান্নাতবাসী হবে।

লেখক :  প্রিন্সিপাল, দারুস সালাম, মাদ্রাসা কুড়িল বিশ্বরোড, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর