বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

মাদক আগ্রাসন

শিকড় উৎপাটনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে

ইয়াবা আসক্তি কেড়ে নিচ্ছে তরুণদের একাংশের সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনা। এই ভয়াবহ মাদক এখন দেশে সংঘটিত অপরাধের একাংশের প্রধান নিয়ামক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তরতাজা তরুণদের মেধা, বিবেক, লেখাপড়া, মনুষ্যত্ব সব কিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে ইয়াবার ভয়াবহ নেশা। বিনষ্ট করে দিচ্ছে স্নেহ, মায়া, ভালোবাসা, পারিবারিক বন্ধন। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাদকাসক্ত সন্তানের হাতে অহরহ বাবা-মা, ঘনিষ্ঠ স্বজন নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন। নেশাখোর বাবা মাদক সংগ্রহে ব্যর্থ হয়ে কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে প্রিয় সন্তানকে খুনও করছে অবলীলায়। নেশার টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে মারা, মাকে জবাই করা, আদরের সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার মতো আল্লাহর আরশ কাঁপানো অমানবিক ঘটনাও ঘটছে। গত এক যুগে নেশাখোর সন্তানের হাতে আড়াই শতাধিক বাবা-মা নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন। মাদকসেবী স্বামীর হাতে প্রাণ হারিয়েছে তিনশ গৃহবধূ। মাদকসেবী মেয়ের হাতে পুলিশ অফিসার বাবা ও মা খুনের ঘটনা ঘটেছে খোদ রাজধানীতেই। ইয়াবা সেবন, কেনাবেচা ও পাচার নিয়েও চলছে প্রতিনিয়ত সংঘাত-সংঘর্ষ, বন্দুকযুদ্ধ, চাঁদাবাজি, ঘুষ লেনদেনের ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসৎ কর্মকর্তারা ইয়াবাকে ব্যবহার করছে বহুমুখী অস্ত্র হিসেবে। বিভিন্ন অভিযানে জব্দ করা ইয়াবা নিজস্ব সোর্সদের মাধ্যমে বিক্রি করে তারা যেমন লাখ লাখ টাকা পকেটে ভরছে তেমনি উদ্ধারের কল্পিত নাটক সাজিয়ে টার্গেট ব্যক্তিদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে চাহিদা মাফিক টাকা। মাদকাসক্তির কারণেই চাঁদাবাজি, ছিনতাই-রাহাজানি, ডাকাতি ও খুন-খারাবির ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর মাঝেমধ্যে মাদক চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালালেও সংশ্লিষ্টদের সদিচ্ছার অভাবে মাদক ব্যবসার শিকড় উৎপাটন করা সম্ভব হচ্ছে না। দেশের যুবসমাজকে সর্বনাশের হাত থেকে রক্ষা করতে মাদকের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। লোক দেখানো অভিযান বা ভূমিকার বদলে এ অপব্যবসার শিকড় উৎপাটনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর