শুক্রবার, ১৯ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

অনন্য ফারুক চৌধুরী

চিম্বুক পাহাড়ের মতো ভারী তার মৃত্যু শোক

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব যশস্বী কূটনীতিক ফারুক চৌধুরী আর নেই। বুধবার রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন এ নিবেদিতপ্রাণ কূটনীতিক (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩। বর্ণাঢ্য কূটনৈতিক জীবনের অধিকারী ফারুক চৌধুরী ছিলেন সার্কের প্রথম মহাসচিব। ভারতসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। অর্ধ শতকেরও দীর্ঘ কূটনৈতিক জীবনে তিনি একাত্তরের আগে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর সঙ্গে কাজ করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, জিয়াউর রহমান, এরশাদ এবং বেগম খালেদা জিয়ার সময় গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৯২ সালে তিনি কূটনীতিকের দায়িত্ব থেকে অবসর নেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর উপদেষ্টা পদে মনোনয়ন পান। কূটনৈতিক জীবনে তিনি সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের যে পরিচয় দিয়েছেন তা উত্তরসূরিদের জন্য অনুকরণীয়। লেখক হিসেবেও ফারুক চৌধুরী ছিলেন অনন্য। তার লেখা জীবনের বালুকা বেলায়, দেশ দেশান্তর, প্রিয় ফারজানা, নানাক্ষণ নানা কথা, স্বদেশ স্বকাল সজ্জন গ্রন্থ বোদ্ধাজনদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও আইএফআইসি ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি ব্র্যাকের উপদেষ্টা পদে অধিষ্ঠিত হন। যাদের হাত ধরে বাংলাদেশের কূটনৈতিক কার্যক্রম পায়ের তলায় মাটি পেয়েছে ফারুক চৌধুরী ছিলেন তাদেরই একজন। কূটনীতিক হিসেবে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। সৎ ও নির্লোভ ফারুক চৌধুরী তার যাপিত জীবনে ছিলেন পরিচিতজনদের শ্রদ্ধার পাত্র। খ্যাতনামা এ কূটনীতিকের মৃত্যুতে একটি বর্ণাঢ্য জীবনের অবসান হলো। সুবুদ্ধি, সুবিবেচনার প্রতীক হিসেবে তিনি জনমনে যে প্রতিষ্ঠা অর্জন করেছিলেন সে শূন্যতা দীর্ঘকাল ধরে অনুভূত হবে।  চিম্বুক পাহাড়ের মতো ভারী শোকের বোঝা প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষ আজ অনুভব করছেন একজন সত্যিকারের সজ্জনের মহাপ্রয়াণে। নিবেদিতপ্রাণ কূটনীতিক ফারুক চৌধুরীর প্রতি আমাদের শেষ শ্রদ্ধা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর