শনিবার, ২০ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

দুর্যোগের নাম বজ্রপাত

বিপদ এড়ানোর প্রস্তুতি নিতে হবে

আগাম পাহাড়ি ঢল ও কালবৈশাখীতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর সুনামগঞ্জ আবারও সংবাদ শিরোনামে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসা ও মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, মার্চ থেকে মে— এই তিন মাসে সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় সুনামগঞ্জে। স্যাটেলাইট থেকে নেওয়া ১০ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। গবেষণা অনুযায়ী এশিয়ার বজ্রপাতপ্রবণ এলাকাগুলোর মধ্যে নোয়াখালীর অবস্থান পঞ্চম। আবহাওয়ার পরিবর্তন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জন্য বিসংবাদ সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশও এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের শিকার। হাওর এলাকায় এ বছর আগাম বন্যা দেখা দেওয়ার পেছনে আবহাওয়ার বেখেয়ালি মনোভাব ভূমিকা রেখেছে। সরকারি হিসাবে গত সাত বছরে দেশে বজ্রপাতে ১ হাজার ১৫২ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে গত বছর মৃতের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ, ২১৭ জন। চলতি বছরে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৬২ জন। গত তিন বছরে সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে মারা গেছেন ৩৭ জন। চলতি বছরের তথ্য যোগ করলে এ সংখ্যা হবে ৫০ জনের কাছাকাছি। বাংলাদেশ দুর্যোগ ফোরামের হিসাবে ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দেশে ১ হাজার ৫৮৯ জন বজ্রপাতে মারা গেছেন। গত বছর সরকার বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করে। এর ফলে বজ্রপাতে মৃত্যু হওয়া প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবার নগদ ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা পাবে। জেলা প্রশাসকদের দফতরে থাকা মানবিক সহায়তা তহবিল থেকে আহত ব্যক্তিরা পাবেন ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা। বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু কমাতে সরকার ১০ লাখ গাছ লাগানোরও পরিকল্পনা নিয়েছে। আগামী জুন থেকে পর্যায়ক্রমে এসব গাছ লাগানো হবে। এ ছাড়া ভবনগুলোয় বজ্রপাত প্রতিরোধক দণ্ড স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বজ্রপাতে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই গ্রামের দরিদ্র মানুষ। মূলত ফসলের জমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতের আঘাতে তারা মারা যান। দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বজ্রপাতের প্রবণতা যে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে এটি সাদা চোখেও উপলব্ধি করার মতো বিষয়। তবে এ বিপদ ঠেকাতে যেসব প্রস্তুতি দরকার সে ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে। বিশেষত বজ্রপাতপ্রবণ এলাকায় বৃক্ষরোপণের ক্ষেত্রে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর