সোমবার, ২২ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাজনীতিতে বসন্ত : নির্বাচন এসে গেছে?

বিভুরঞ্জন সরকার

রাজনীতিতে বসন্ত : নির্বাচন এসে গেছে?

দেশের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি দেখে ওপার বাংলার প্রতিভাবান সুরকার-গীতিকার-কণ্ঠশিল্পী অনুপম রায়ের একটি জনপ্রিয় গানের কয়েকটি কলি মনে গুনগুনিয়ে উঠছে। লগ্নজিতা চক্রবর্তীর কণ্ঠে শোনা গানটি হলো : আকাশে বহিছে প্রেম, নয়নে লাগিল নেশা/কারা যে ডাকিল পিছে! বসন্ত এসে গেছে। মধুর অমৃত বাণী/বেলা গেল সহজেই/মরমে উঠিল বাজি/বসন্ত এসে গেছে। থাক তব ভুবনের ধূলিমাখা চরণে মাথা নত করে রব/বসন্ত এসে গেছে, বসন্ত এসে গেছে।

বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও প্রচার-প্রচারণা দেখে মনে হচ্ছে দেশে নির্বাচন এসে গেছে। নিয়ম অনুযায়ী আগামী বছরের শেষদিকে জাতীয় সংসদের নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন জনসভায় বক্তৃতা দিয়ে আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন। অন্যদিকে সংসদের বিরোধী দল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিও হাত-পা ছুটতে শুরু করেছে। অনেক হাঁকডাক করে নামসর্বস্ব ৫৮টি দল নিয়ে একটি জোট গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন এরশাদ। এরশাদ মাঝে মধ্যেই আবার ক্ষমতায় যাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু তার ৫৮ দলীয় জাম্বু সাইজের জোট তাকে ক্ষমতায় নিতে পারবে বলে কেউই মনে করেন না। জাতীয় পার্টির পক্ষে আর কখনো এককভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো ধরনের সম্ভাবনা আছে বলেও কেউ মনে করেন না। তবে অন্য কারও ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে জাতীয় পার্টির ব্যবহূত হওয়ার সুযোগ ও সম্ভাবনা আছে। এরশাদ রাজনীতিতে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে প্রমাণ করার জন্য নানারকম তামাশা করছেন। কিন্তু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক ও বিশ্লেষকদের মধ্যে এরশাদকে নিয়ে বড় ধরনের কোনো আগ্রহ বা কৌতূহল আছে বলে মনে হয় না।

তবে সংসদে না থাকলেও রাজনীতিতে আলোচনায় আছে বিএনপি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বা প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে বিএনপি। সম্প্রতি বিএপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ‘ভিশন-২০৩০’ ঘোষণা করে রাজনীতিতে বড় ধরনের আলোড়ন তৈরি করেছে। বিএনপি নেত্রীর ঘোষিত এই ভিশন নিয়ে সব মহলেই নানা ধরনের আলোচনা চলছে। কেউ এর প্রশংসা করছেন আবার কেউবা নিন্দা-সমালোচনা করছেন। বিভিন্ন বিষয়ে ২৫৬টি দফায় এই ভিশনে নানা ধরনের আশার কথা, স্বপ্নের কথা বিএনপি নেত্রী বলেছেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২০৩০ সালে আমরা দেশকে কীভাবে দেখতে চাই, জাতিকে যে স্বপ্ন দেখাতে চাই তা রয়েছে এই ভিশনে। মির্জা ফখরুল আরও দাবি করেছেন, বিএনপি বরাবরই ভিশনারি দল। বর্তমান বাস্তবতা, ধাবমান সময় ও দ্রুত বিশ্বায়নের কথা চিন্তা করেই বিএনপি ‘ভিশন-২০৩০’ ঘোষণা করেছে।

কিন্তু বিএনপি মহাসচিবের এই বক্তব্যের সঙ্গে অনেকেই একমত পোষণ করতে পারছেন না। বিএনপি যে কত অদূরদর্শী দল তার বড় প্রমাণ হলো ১৯৯১ সালে বেগম জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকার গঠনের পর বিনা পয়সায় সাবমেরিন কেব্্ল সংযোগ নেওয়ার আহ্বান পেয়েও তাতে সাড়া দেয়নি বেগম জিয়ার সরকার। রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাবে- এই কাল্পনিক অজুহাতে বিনামূল্যে ইন্টারনেট জগতে প্রবেশের সুযোগ থেকে দেশবাসীকে বঞ্চিত করেছিল যে দল, সেই দল যদি নিজেদের ভিশনারি বলে দাবি করে তাহলে সেটা মানুষের কাছে কি হাস্যকর বলে মনে হয় না? খালেদা জিয়া যে ‘ভিশন-২০৩০’ ঘোষণা করেছেন তার রূপকার কারা? শোনা যাচ্ছে, বাইরের হায়ার করা কয়েকজন ‘পণ্ডিত’কে দিয়ে এই ভিশন রচনা করা হয়েছে। বিএনপির শীর্ষ নেতারা পর্যন্ত এ ব্যাপারে বিশেষ কিছুই জানেন না। একদল পণ্ডিত হায়ার করে লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে যে ভিশন তা বাস্তবায়ন করবে কারা। কিংবা তা বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনাইবা কারা করবেন? বেগম খালেদা জিয়ার ‘ভিশন-২০৩০’-এ অনেক ভালো ভালো কথা আছে। সুনীতি, সুশাসন ও সুসরকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার আছে এতে। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এসব অঙ্গীকার পূরণ করা হবে বলে অনেকেই মনে করেন না। বিএনপি এর আগেও ক্ষমতায় ছিল। তখন সুনীতি, সুশাসন ও সুসরকার প্রতিষ্ঠার কথা তাদের মনে ছিল না কেন? অপশাসন ও দুঃশাসনের রেকর্ড তৈরি করা দলটি আবার ক্ষমতায় গেলে একেবারেই নতুন পথে চলবে এটা বিশ্বাস করার মতো কি? মানুষের স্মৃতি থেকে বিএনপি শাসনের কথা হারিয়ে যায়নি। ‘হাওয়া ভবন’ নিয়ে কৌতুক আলোচনা রাজনৈতিক মহলে এখনো চলে। এখন ক্ষমতার বাইরে আছে বলেই বিএনপি সুবচন শোনাচ্ছে। ক্ষমতায় গেলে তাদের চেহারা কী হবে সেটা মানুষ মোটামুটি অনুমান করতে পারছেন। বিএনপি দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে আছে। দলে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য দলটির আবার ক্ষমতায় যাওয়া দরকার। ক্ষমতায় যেতে হলে মানুষের সামনে গালভরা প্রতিশ্রুতি দিতে হয়। স্বপ্নের কথা বলতে হয়। একটি কৌতুককর নির্বাচনী বক্তৃতার কথা হয়তো অনেকেরই জানা আছে। এক নির্বাচনী জনসভায় একজন ভোটভিক্ষুক উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে প্রতিশ্রুতি দিলেন এই বলে যে, তিনি নির্বাচিত হলে ওই এলাকায় একটি ব্রিজ তৈরি করে দেবেন। শ্রোতাদের মধ্য থেকে একজন বলে উঠলেন, তাদের এলাকায় তো কোনো নদী নেই। ভোটভিক্ষুক এতটুকু বিচলিত বা বিব্রত না হয়ে সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন, আপনাদের এলাকায় আমি একটি নদী খুঁড়ে দেব!

নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দল বা নেতানেত্রীরা যে লোকভোলানো নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হওয়ার পর সেসব ভুলে যেতে ওস্তাদ সেটা দেশের মানুষ ভালো করেই জানেন। খালেদা জিয়ার ‘ভিশন-২০৩০’ও এর ব্যতিক্রম বলে অনেকেই মনে করছেন না। তবে এটা ঠিক যে, এ ভিশন ঘোষণার পর বিএনপি মহলে কিছুটা চাঙ্গা ভাব ও উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ দুই ঘণ্টা ধরে যেভাবে ‘ভিশন-২০৩০’ পাঠ করেছেন তা দলের এবং দলের বাইরে অনেককেই উদ্দীপ্ত করেছে। বেগম জিয়ার শারীরিক সুস্থতা নিয়ে কিছু প্রচার-প্রচারণা আছে। কিন্তু তিনি যে এখনো দল পরিচালনায় সম্পূর্ণ সক্ষম সেটা প্রমাণ করেছেন ক্লান্তিহীনভাবে ‘ভিশন-২০৩০’ পড়ে। এর ফলে সারা দেশে ঝিমিয়ে পড়া বিএনপি গা-ঝাড়া দিতে শুরু করেছে। দেশের কয়েকটি জেলায় দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে  হাতাহাতি, মারামারি করে প্রমাণ করা হচ্ছে যে, বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। হামলা-মামলায় জর্জরিত বিএনপি এখন কার ওপরে দোষ চাপাবে? নিজেরা মারামারি করে বিএনপি এটা দেখাচ্ছে যে, তারা শাসক দল থেকে খুব একটা পিছিয়ে নেই। আওয়ামী লীগ কর্মীরা নিজেরা খুনোখুনি করে শক্তিমত্তার পরিচয় দিচ্ছে। আর বিএনপি খুনোখুনি না করে মারামারি করছে। নির্বাচন একেবারে দুয়ারে কড়া নাড়লে বিএনপি যে আওয়ামী লীগ থেকে খুব পিছিয়ে থাকবে না তা জানান দেওয়া হচ্ছে। বিএনপি ক্ষমতায় না থাকলেও দেশজুড়ে তাদের বিপুল সমর্থক গোষ্ঠী রয়েছে। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এ দলটির আবার ক্ষমতায় যাওয়ারও উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে যারা বিশ্বাস করেন তাদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। বেগম জিয়া একাধিক দফায় ক্ষমতায় ছিলেন। কাজেই তিনি কেমন শাসন উপহার দেবেন সেটা মোটামুটি সবারই জানা। কাজেই তিনি নির্বাচনকে সামনে রেখে যে ভিশন ঘোষণা করছেন তা সাধারণ মানুষকে খুব বেশি উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করতে পারবে বলে মনে হয় না। দেশে গণতন্ত্র নেই বলে বিএনপি চিত্কার-চেঁচামেচি করছে। কিন্তু বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন কি দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া খুব শক্তভাবে দেশবাসীর কাছে দৃশ্যমান ছিল? বিএনপি নামক দলটি পরিচালিত হয় চরম স্বেচ্ছাচারী পন্থায়, বেগম জিয়া যা বলেন তা-ই বিএনপির শেষ কথা। দলের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলিল তৈরি হয় দলের শীর্ষ নেতাদের অংশগ্রহণ ছাড়াই। এ দল ক্ষমতায় গেলে দেশে গণতন্ত্র তরতর করে সামনের দিগে এগিয়ে যাবে এটা যারা বলেন এবং বিশ্বাস করেন তাদের উদ্দেশ্যের সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতেই পারে। বিএনপি নাকি ক্ষমতায় গেলে প্রতিহিংসা বাদ দিয়ে নতুন ধারার রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলবে। সরকার ও বিরোধী দলের সমন্বয়ে কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠা করবে। বিএনপি যদি সরকারি দল হয় তাহলে নিশ্চিতভাবেই বিরোধী দল হবে আওয়ামী লীগ। দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে ‘সমন্বয়’ হবে সেটা সম্ভবত চরম আশাবাদীরাও মনে করেন না।

বিএনপি যদি সত্যিই প্রতিহিংসা বাদ দিয়ে ভবিষ্যত্মুখী রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চাইত তাহলে বেগম খালেদা জিয়া তার লম্বা ‘ভিশন’ বক্তৃতায় কিছু ইঙ্গিত রাখতে পারতেন। বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতি বদলাতে হলে কেবল বিরোধিতার পরিবর্তে প্রশংসা করা ও সমর্থন করার ধারাও রপ্ত করতে হবে। বেগম জিয়া যদি তার বক্তৃতায় সরকারের ব্যর্থতার দিকগুলো তুলে ধরার পাশাপাশি সাফল্যের কথাও তুলে ধরতেন তাহলে তিনি মানুষের কাছে অবশ্যই অধিকমাত্রায় গ্রহণযোগ্য হতেন। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে হাত দেওয়া, কোটি কোটি শিক্ষার্থীর হাতে শিক্ষা বছরের প্রথম দিনেই বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দেওয়া, বিদ্যুৎ খাতে দৃশ্যমান সাফল্য, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ এগিয়ে নেওয়া, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের কঠোর অবস্থান গ্রহণ, অত্যন্ত ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্র নীতি গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশসহ বিশ্বের ছোট-বড় সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা এবং দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বেগম জিয়া যদি বলতেন, সরকারের এসব কাজের প্রতি বিএনপির সমর্থন আছে এবং তারা ক্ষমতায় গেলেও বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখা হবে, তাহলে মানুষের মনে যে ধারণা তৈরি হতো তা বিএনপি এবং বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সহায়ক ভূমিকা পালন করত। একই সঙ্গে তিনি যদি সরকারের ব্যর্থতাগুলো তুলে ধরতেন, দুর্নীতি-অনিয়মের সুনির্দিষ্ট তথ্য উল্লেখ করে কঠোর সমালোচনা করতেন তাহলে সেটাও মানুষের কাছে প্রশংসিত হতো।

আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল। এ দুই দলের মধ্যে সমন্বয় থাকলে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যেমন নিশ্চিত হবে, তেমনি উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারাও বেগবান হবে। কিন্তু এ দুই দলের মধ্যে যে বৈরিতার সম্পর্ক দীর্ঘ সময় ধরে তৈরি হয়েছে তা কাটানোর কোনো উদ্যোগ-প্রচেষ্টা কারও মধ্যেই লক্ষ্য করা যায় না। বিএনপি নতুন ধারার রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলবে- এটা বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য ভিশন ঘোষণার সময় বেগম খালেদা জিয়ার উদ্যোগী হওয়ার সুযোগ ছিল। তিনি যদি তার বক্তৃতায় স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতেন এবং বলতেন যে বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কথা চিন্তা করা যায় না। বিএনপি ক্ষমতায় গেলেও বঙ্গবন্ধুকে তার মর্যাদার আসন থেকে সরানো হবে না। একই সঙ্গে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের অবদানের কথাও বিএনপি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। বঙ্গবন্ধুকে ছোট করে বা হেয় করে জিয়াকে বড় বা মহান করার কোনো অপচেষ্টার সঙ্গে বিএনপি আর যুক্ত থাকবে না- এ একটি বক্তব্যই খালেদা জিয়াকে দেশের মানুষের মনে উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে এক বিরাট ভূমিকা পালন করত। মানুষ তখন বিশ্বাস করত, বিএনপি আর আগের বিএনপি নেই। বিএনপি সত্যি সত্যি ভবিষ্যত্মুখী নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চায়। কিন্তু সেটা হলো না। তবে সময় শেষ হয়ে যায়নি। নির্বাচন আসছে। বিএনপি কোনো অজুহাতেই আর নির্বাচন থেকে দূরে থাকবে না এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আর নির্বাচনী প্রচারে বাজিমাত করতে হলে ‘ভিশন-২০৩০’ থেকেও অধিকমাত্রায় চুম্বকের কাজ করবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বর্তমান সরকারের খারাপ কাজের নিন্দার পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসা করার মানসিকতার প্রমাণ দিলে। এমন সুবুদ্ধির পরিচয় কি পাওয়া যাবে?

লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট।

ই-মেইল : [email protected]

সর্বশেষ খবর