সোমবার, ২২ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইতিহাস

হজরত ওমর (রা.)-এর প্রাথমিক জীবন

হজরত ওমর (রা.) ৫৮৩ খ্রিস্টাব্দে কুরাইশ বংশের ‘আদ্দিয়া’ গোত্রের রইস পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম ছিল হাফস্। তার মায়ের নাম ছিল হানতামা। তার বাবা খাত্তাব কুরাইশ বংশের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ছিলেন। হজরত ওমর (রা.) দীর্ঘকায় ব্যক্তি ছিলেন। আরবে তখন একটি প্রবাদ ছিল ‘কুল্ল তাবিলুন আহমাকুন ইল্লা ওমর।’ এর অর্থ ওমর ব্যতীত সব লম্বা মানুষ বোকা। এটা হতে বোঝা যায় যে, ওমর (রা.) একজন বুদ্ধিমান ও বীরপুরুষ ছিলেন। কুস্তিগির এবং বক্তা হিসেবেও তার খ্যাতি ছিল। রসুলে কারীমের (সা.) ইসলাম প্রচারের আমলে আরবে যে স্বল্পসংখ্যক শিক্ষিত লোক ছিলেন হজরত ওমর (রা.) ছিলেন তাদেরই অন্যতম। ঐতিহাসিক বালাযুরী বলেন, ‘এ সময়ে কুরাইশদের মধ্যে মাত্র ১৭ জন লোক শিক্ষিত ছিলেন এবং ওমর ছিলেন তাদেরই একজন। তেজারত ছিল তার প্রধান পেশা।’ ইসলাম গ্রহণ করার আগে হজরত ওমর (রা.) নবী কারীম (সা.)-এর শত্রু ছিলেন। আবু সুফিয়ানের প্ররোচনায় একদিন তিনি মুক্ত তরবারি হাতে রসুলে কারীমকে (সা.) হত্যা করতে গেলেন। পথিমধ্যে তিনি নঈম-বিন-আবদুল্লাহর কাছে জানতে পারলেন যে, তার ভগ্নি ফাতেমা ও ভগ্নিপতি সঈদ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তিনি তখন ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে তাদের শাস্তিদানের জন্য ছুটে গেলেন এবং তাদের বাড়িতে গিয়ে উভয়কে প্রহার করতে শুরু করলেন; কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করতে রাজি হলেন না। অতঃপর ওমর তাদের কাছে কোরআন শরিফের বাণী শ্রবণ করতে চাইলেন; কারণ তারা তার আগমনের সময় কোরআন শরিফ পাঠ করছিলেন এবং তার আগমনের সাড়া পেয়ে তা পড়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ভগ্নি ফাতেমার কণ্ঠে পবিত্র কোরআন শরিফের সূরা ‘তোহা’ পাঠ শুনে তার প্রাণ বিগলিত হলো। ইসলামের সৌন্দর্যে মুগ্ধ ওমর (রা.) কালবিলম্ব না করে রসুলে কারীমের (সা.) দরবারে হাজির হয়ে ইসলাম কবুল করলেন। এ সময়ে তার বয়স ছিল ২৬ বছর। রসুলুল্লাহর নবুয়তের তখন ষষ্ঠ বছর। মহানবী তাকে ‘ফারুক’ উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। ‘ফারুক’ শব্দের অর্থ সত্য ও মিথ্যার প্রভেদকারী।  তার ইসলামে দীক্ষা গ্রহণ রসুলে কারীম (সা.) ও তার প্রচারিত সত্য ধর্মের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

     শাকিল জাহান।

সর্বশেষ খবর