শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

সংখ্যালঘুদের মানসিক দৈন্য কীভাবে দূর হবে?

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

সংখ্যালঘুদের মানসিক দৈন্য কীভাবে দূর হবে?

কোনো গণতান্ত্রিক সমাজে প্রধান বিরোধী দলের অফিসে গোয়েন্দা রিপোর্টে এভাবে পুলিশি অভিযান সমর্থনযোগ্য নয়। কোনো স্বৈরাচারী সরকার এমন করলে না হয় সান্ত্বনা ছিল। কেন এমন হলো? কেন এমন তল্লাশি? যখন কিছুই পাওয়া গেল না— এর জবাব কী? আর যদি কামান-বন্দুক পাওয়া যেত সরকার কী করত? যে দল কয়েকবার ক্ষমতায় এসেছে তার অফিস থেকে কামান-বন্দুক পাওয়া গেলে দুনিয়ায় আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ন হতো না? কোনো কোনো ক্ষেত্রে হজম করা শিখতে হয়। সঠিক পরিচালনাই দক্ষতা। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমি খুবই ভালো জানি। এ অভিযান যদি তার সম্মতিতে হয়ে থাকে তাহলে বলব দুর্জন দুঃশাসনেরা তাকে ভুল পরামর্শ দিয়েছে। আর যদি কোনো করিৎকর্মা সরকার এবং আওয়ামী লীগকে জনবিচ্ছিন্ন করার জন্য করে থাকে তাহলে সময় থাকতেই লাগাম টানুন। না হলে খারাপ হবে। যদিও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী বলেছেন, ‘গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতেই কাজটি করা হয়েছে। বিএনপিও ক্ষমতায় থাকতে বহুবার আওয়ামী লীগের অফিসে এমন তল্লাশি চালিয়েছে।’ তার অভিযোগ যদি সত্যও হয় বিএনপি যা করেছে আওয়ামী লীগকে তাই করতে হবে— এটা কোনো ভালো যুক্তি নয়। কাজটি খুবই নিন্দনীয়। তাই মুক্তকণ্ঠে এই অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

কথাটা সারা দেশে সবার মুখে মুখে, বুকে বুকে, জিহ্বার ডগায় ডগায়। কিন্তু কেউ সাহস করে মুখ ফুটে বলছে না। ভারত-বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক এখন হয়তো সর্বোচ্চ পর্যায়ে। কিন্তু কেন যেন ইদানীং কিছুটা টানাপাড়েনের কথাও শোনা যাচ্ছে। সরকারের সম্পর্ক যাই হোক সাধারণ হিন্দু-মুসলমানের সম্পর্ক একেবারে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। এমনিতেই সংখ্যাগরিষ্ঠদের সম্পর্কে সংখ্যালঘুর একটা অস্বস্তি থাকে। যদিও বাংলাদেশে সংখ্যাগুরু সংখ্যালঘু মুখে বলা হয় না, কেউ কেউ অস্বীকার করার চেষ্টা করে। কিন্তু মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে ভারত বিভাগের পর থেকেই সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু একটা অদৃশ্য অস্বস্তি উভয় দেশেই আছে। সেটাই এখন অবিশ্বাসের উচ্চ শৃঙ্ঘে পৌঁছে গেছে। গ্রামগঞ্জে ঘোরাফেরা করা একেবারে ঘাসের কাছাকাছি থেকে উঠে আসা মানুষের একজন আমি। তাই নিজেকে ফাঁকি দিতে চাই না, পারিও না। আর এখন এই বয়সে কোনো লোভ-মোহে সত্যকে আড়াল করে নিজেকে কলঙ্কিত করব কেন? দেশ থেকে যেসব ভারতপ্রেমী যান, তারা সাংবাদিক, সাহিত্যিক, সাধারণ মানুষ যেই হোন, যাদের সঙ্গে ভারতীয় সরকারের অল্পবিস্তর যোগাযোগ আছে তারা সবাই বলেন বাংলাদেশে হিন্দুদের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ, বিএনপি দুই-ই সমান।

দেশে রাজনীতি নেই, বিএনপি পালিয়ে, জাতীয় পার্টি সরকারের অঙ্গ, আওয়ামী লীগের অঙ্গ ছাত্র-যুবকদের গ্রামেগঞ্জে বাধাহীন সন্ত্রাস রুখে দাঁড়ানোর কেউ নেই। এভাবে আর দু-এক বছর চললে বাইরের কাউকে লাগবে না, যত উন্নয়নের কথাই বলা হোক দেশ এক নরকে পরিণত হবে।

গ্রামেগঞ্জে আওয়ামী লীগের বাইরে কেউ নিরাপদ নয়, কেউ শান্তিতে নেই। আওয়ামী লীগ যারা করে তারাও যে সবাই খুব শান্তিতে আছে তাও নয়। সে কথা তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, ‘অনুপ্রবেশকারীদের গুঁতায় ত্যাগীরা টিকতে পারে না। দল ভারী করার স্বার্থে বিএনপি-জামায়াতের দাগি লোকদের দলে ভেড়ানো হচ্ছে। মামলা থেকে বাঁচতে এবং উন্নয়ন প্রকল্পের ভাগিদার হতে এরা আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছে। এরা দলে ঢোকে কমিশন খাওয়ার লোভে। এরা দলের মধ্যে খুন করে। দলে ঢুকে এরা এতটাই শক্তিশালী হয়ে যায় যে, এদের কনুইয়ের গুঁতায় দলের নিবেদিত নেতা-কর্মীরা টিকতে পারে না।’ এসব আবর্জনা দলে না টানার পরামর্শ দেন তিনি। মাননীয় মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর এলাকায় প্রবীণ নেতা কাজী আরেফ আহমেদ নিহত হয়েছেন, বিচার হয়নি। নকলা, নালিতাবাড়ীর বাদশা, হালিম জানমারা আওয়ামী লীগার, তারা এখন নিজের ঘরে পরবাসী। গ্রামেগঞ্জের দরিদ্র হিন্দুরা দিশাহারা। দেশে রাজনৈতিক ভারসাম্য না থাকলে যা হয় তাই হয়েছে। শত্রুসম্পত্তি আইনে জমিজমা পড়ে আছে। উপযুক্ত মেয়ে বিয়ে দেবে হাতে নগদ টাকা নেই, বিপুল সম্পদ থাকার পরও তা বিক্রি করে ছেলেমেয়ের লেখাপড়া কিংবা বিয়েশাদি দিতে পারছে না। ভোগদখল, চাষাবাদ করলেও জমিজমা বেচাকেনার কোনো সুযোগ নেই। কারণ সব এনিমি প্রোপার্টি। তারা পড়েছে ফাঁপরে। সরকার নানা সময় নানা পদক্ষেপ নিতে চাইছে, কিন্তু দুষ্ট আমলাদের কারণে কিছুই করতে পারছে না। কারও কোনো আন্তরিকতা নেই। গ্রামে হিন্দুর মেয়ে তো নিরাপদ নয়-ই, মুসলমানের মেয়েরাও নয়। কারণ সামাজিক বন্ধন ধ্বংস হয়ে গেছে। দলীয় দলাদলি শুধু গ্রামে গ্রামে নয়, বাড়ি বাড়ি, ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইদানীং স্কুল-কলেজের শিক্ষক, পিতা-মাতা, ময়-মুরুব্বি, আত্মীয়স্বজনকে ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করতে বলছেন। মা-বাবা ছেলেমেয়েদের কী দেখাশোনা করবেন? সরকার, সমাজ, প্রশাসন তাদের কোনো গুরুত্ব দেয়? মা-বাবা, ময়-মুরুব্বিদের সমাজে কোনো সম্মান আছে যে ছেলেমেয়েরা বাবা-মার কথা শুনবে? সন্তানের অপরাধে পিতামাতা অপরাধী এটা কোন ন্যায়বিচার? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলছেন তিনি মদিনা সনদের ওপর নির্ভর করে দেশ চালাচ্ছেন। তাহলে হজরত ওমর (রা.) যে বলেছিলেন, ‘ইসলাম জাহানে কোনো কুকুর না খেয়ে থাকলে আল্লাহর দরবারে ওমরকে জবাব দিতে হবে।’ তার কী হবে? বাংলাদেশে কে জবাব দেবেন আল্লাহর দরবারে? কেউ জবাবদিহি করে না, সবাই জবাব নিতে চায়, কেউ দিতে চায় না।

আমার দাদু আলাউদ্দিন সিদ্দিকী ব্রিটিশ ভারতে মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষ বসু, মওলানা আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর বাবা আবদুল হামিদ চৌধুরী পূূর্ব পাকিস্তানের স্পিকার ছিলেন। হাজার হাজার কোটি টাকার ভূসম্পত্তি ছিল। কোথায় তারা আর কোথায় স্বাধীনতাবিরোধী বুলবুলে পাকিস্তানের ছেলে বি এইচ হারুন, কারও রেইনট্রি হোটেল, কারও আপন জুয়েলার্স। টন টন সোনা— কোনো জবাব নেই। যাদের সন্তানদের দিনে ২-৪ লাখ টাকা হাতখরচ, তারা অমন কুকর্ম করবে না তো কে করবে? আমরা তো ফকির-মিসকিনের ঘর থেকে আসিনি, বাইরের লোকদের কথা নাইবা বললাম। জনাব তোফায়েল আহমেদ পাকিস্তানকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন, মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, নওগাঁর আবদুল জলিল, নীলফামারীর আবদুর রউফ, নোয়াখালীর খালেদ মোহাম্মদ আলী। কার কথা বলব— শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, শেখ ফজলুল হক মণি, কে এম ওবায়দুর রহমান, সিরাজুল আলম খান, আ স ম আবদুর রব, আবদুল কুদ্দুস মাখন, ফেরদৌস আহমদ কোরেশী, আল মুজাহিদী, শাজাহান সিরাজ, লতিফ সিদ্দিকী— তাদের কেন অমন অঢেল অর্থ হলো না? হলে কি দোষ হতো? বঙ্গবন্ধু কি লুটেরাদের দেশবাসীর রক্ত চুষতে আওয়ামী লীগ বানিয়েছিলেন? কোনো জবাব পাই না। স্বাধীনতার পর যদি চাইতাম গুলিস্তান থেকে মতিঝিল, বনানী থেকে গুলশান এক লক্ষণ রেখা টেনে দিলে কারও বাবার সাধ্য ছিল সে রেখা অতিক্রম করে? বর্তমানে যেভাবে লুটেরারা হুজুর মওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও আমাদের রক্তে গড়া স্বাধীনতার দলকে বগলদাবা করে লুটপাট করে ফুলে ফেঁপে উঠছে, এটা অবাধে চলতে দেওয়া যায় না। এখনই এসবের লাগাম টানা দরকার। জানি দেশে রাজনীতি না থাকলে যা হয়, তাই হয়েছে বা হচ্ছে। কিন্তু এসবের পরিণতি ভালো নয়। যেহেতু দেশের জন্মের বেদনার সঙ্গে জড়িত ছিলাম, সেহেতু একপাশে নিরন্ন মানুষ, অন্যপাশে কারও কারও কোটি কোটি টাকার পাহাড় দেখে ভীষণ খারাপ লাগে, জ্বলে উঠতে ইচ্ছা করে। কিন্তু পরিবেশ সাহায্য করে না, শরীর, স্বাস্থ্য, বয়স সাহায্য করে না। কোনো কোনো সময় ভাবী বঙ্গবন্ধু শুধু হুকুম দিয়ে গিয়েছিলেন অস্ত্র দেননি, পয়সা দেননি, সঙ্গে ছিলেন না। আমরা তার হুকুম মাথায় তুলে দুর্ধর্ষ পাকিস্তান হানাদারদের পরাজিত করতে পারলাম আর আজকের যুবক, আজকের ছাত্র স্বার্থলোভীদের মোকাবিলা করতে পারে না— বড় কষ্ট হয়। মানুষ যখন সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করার চেষ্টা করে তখন কোনো দেশ ভালো থাকতে পারে না। এর একটা প্রতিকার অবশ্য অবশ্যই করতে হবে। উন্নয়নের কথা বলে ১০০ টাকার কাজ হাজার টাকায় করলে অমন উন্নয়নের বোঝা ভবিষ্যতে দেশকেই বইতে হবে।

পারিবারিক কথা এসে যায়। তবু বলি, আমার স্ত্রী খুবই নির্বিবাদী সাদামাটা মানুষ। বিয়ের পর প্রথম প্রথম তেমন বোঝাবুঝি হয়নি। ভুল বোঝাবুঝির সম্ভাবনাই বেশি। নেত্রকোনার সুকুমার ছোটখাটো ছেলে। আমার দেখাশোনা করে, বই-পুস্তক দেখে। সে কিছু দিন বাজার করত। বেগম তাকে ১০০ টাকার নোট মনে করে প্রতিদিন ৫০০ টাকার নোট দিতেন। সে অনেক অনেক বাজার করে কিছু টাকা ফেরতও দিত। দু-এক মাস পর একদিন খাওয়ার টেবিলে বেগম জিজ্ঞাসা করেন, ‘দীপের আব্বু শুনেছ?’ তত দিনে আমার প্রথম সন্তান দীপ দুনিয়ায় এসে গেছে, দুজনের মধ্যে এক সেতুবন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। বললাম, শুনছি। ‘সুকুমার খুব ভালো বাজার করে। তিন-চার শ টাকা দিলে অনেক বাজার করে আবার কখনো কখনো কিছু টাকা ফিরিয়েও দেয়।’ বললাম, কী জানি। সুকুমার খুব ভালো এবং সৎ। চলল আরও কিছু দিন। হঠাৎ একদিন বেগম সাহেবাকে কী কারণে বললাম, তোমাকে কিছু টাকা দিয়েছিলাম। সেটা যে দরকার। তিনি হাজার ত্রিশেক টাকার প্যাকেট এনে দিলেন। সব কটি ১০০ টাকার নতুন নোট। বললাম, এটা নয়। তোমাকে এ রকমই আরেকটা দেওয়া হয়েছিল। এটা তো তোমাকে খরচ করতে দেওয়া হয়েছিল। অন্য প্যাকেটে ছিল লোকজনকে দেওয়ার জন্য। মনে হয় বেগমের মাথায় আগুন ধরে যায়। তিনি আলমারি খুলে শাড়ির ভাঁজ থেকে সেই প্যাকেটও বের করেন। সত্যিই তাতে ৫০০ টাকার নোট। অর্ধেকের বেশি তত দিনে শেষ হয়ে গেছে। বেগম তখন বলেছিলেন, ‘আমি তো এটাকেই ১০০ টাকার নোট মনে করে বাজার করতে দিই।’ এখন বুঝুন ৫০০ টাকার নোট ১০০ টাকা মনে করে বাজার করতে দিলে কিছু বেশি বাজার তো আসবেই, সঙ্গে অতিরিক্ত টাকাও যেমনটা এখন হচ্ছে। ১ কোটির কাজ ১০ কোটিতে প্রাক্কলন, তাতে সবার লাভ। শুধু মারা পড়ছে দেশের মানুষ আর দেশ। প্রতিদিন জনগণের ঘাড়ে ঋণের বোঝা বাড়ছে। এসব থেকে এখনই পরিত্রাণের পথ খুঁজতে হবে।

সারা জীবন বঙ্গবন্ধুর ছায়ায়-মায়ায় রাজনীতি করেছি। আজ তিনি নেই। তার ছায়া-মায়া কেড়ে নেবে কে? তেমন শক্তি কার? তাই ওসব নিয়ে তেমন চিন্তা করি না। চিন্তা করি, রাজনীতিহীন আর দু-চার বছর দেশ চললে আফ্রিকার মাগুরের মতো আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগকে খাবে। তখন জননেত্রী শেখ হাসিনাও সামাল দিতে পারবেন না। প্রকৃতির নিয়ম কেউ বদলাতে পারে না। হিটলার, মুসোলিনি যা পারেননি তা কী করে জননেত্রী শেখ হাসিনা পারবেন? এজন্য দেশে অবাধ রাজনীতি থাকা দরকার, সেজন্য উপযুক্ত নেতৃত্ব দরকার, সর্বোপরি দেশে সামাজিক, রাজনৈতিক ভারসাম্য থাকা দরকার। যত দিন না আমরা এসব করতে পারব তত দিন দালানকোঠা যাই হোক, অন্তরের প্রসার হবে না।

এই তো কদিন আগে বিএনপি ভিশন-২০৩০ দেশবাসীর সামনে উপস্থাপন করেছে। শুরুর দিকে যেমন আলোচনা ছিল, এখন তেমন আহামরি কোনো আগ্রহ নেই। ওয়েস্টিন হোটেলে যেদিন বেগম খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ উপস্থাপন করেন সেদিন ঘরের বাইরে দু-চার জন পরমানুষ হাজির করতে পারতেন। কিন্তু তেমন চেষ্টা করেননি। গত শুক্রবার নাগরিক ঐক্যের মহানগরীর সম্পাদক নাকি সভাপতি শহিদুল্লাহ কায়সারের মেয়ের বিয়েতে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখলাম সর্বজনাব আ স ম আবদুর রব, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, খালেকুজ্জামান, সুলতান মনসুর, মাহমুদুর রহমান মান্না, ড. কামাল হোসেন উপস্থিত। কেন যেন তখনই মনে হচ্ছিল এদের মতো দু-চার জনকেও যদি বেগম খালেদা জিয়ার ভিশন-২০৩০ ঘোষণার সাক্ষী রাখতে পারতেন তাহলে ভিশনের ওজন না হলেও এক কেজি বেড়ে যেত। বসে বসে এমন যখন ভাবছিলাম তখন জনাব মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এলেন। কাছাকাছি হলে উঠে দাঁড়িয়েছিলাম। আমি উঠে দাঁড়াব মনে হয় মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আশা করেননি। অথচ এটাই আমার চিরাচরিত স্বভাব, অন্যকে সম্মান করে নিজে সম্মানিত হওয়ার চেষ্টা। দোয়া করে এসেছি, শহিদুল্লাহ কায়সারের মেয়ে, মেয়ের জামাইকে— তাদের জীবন নিরাপদ, সুখময় হোক। সার্থক ব্যক্তি জীবনের মধ্য দিয়ে সমাজ বিকশিত হয়। বৃহত্তর সমাজই তো দেশ। তাই আশায় বুক বেঁধে আছি।

সময় কেমন নিয়ামক শক্তি। সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড়। ১৭ মে বুধবার ছিল জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৮১ সালের ১৭ মে তিনি যেদিন দেশে ফেরেন সেদিন তার সঙ্গে দিল্লি থেকে একই বিমানে পাশাপাশি কলকাতা এসেছিলাম। এর কয়েক মাস পর দুলাভাই ড. ওয়াজেদ যখন দেশে ফেরেন তখন জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং ড. ওয়াজেদের মাঝে বসে দিল্লি থেকে কলকাতা এসেছিলাম। তাই ভেবেছিলাম লন্ডন থেকে কুঁড়ি এসেছে, দুই দিন পর চলে যাবে। পুরো পরিবার নিয়ে তাকে একবার শুভ কামনা জানিয়ে আসি। অনুমতির জন্য তা আর হয়নি। তবু দোয়া করি, তিনি ভালো থাকুন, দেশ নিরাপদ থাকুক।

লেখক : রাজনীতিক।

সর্বশেষ খবর