বুধবার, ২৪ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা
ধর্মতত্ত্ব

রমজানকে স্বাগত জানিয়ে রসুলের ভাষণ

মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ এহছানুল হক মুজাদ্দেদী

রমজানকে স্বাগত জানিয়ে রসুলের ভাষণ

আলহামদুলিল্লাহ! পবিত্র মাহে রমজান সমাগত। এ মাস রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতে পরিপূর্ণ। মহান আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম (রোজা) ফরজ করা হয়েছে যেমনিভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর যাতে তোমরা মুত্তাকি (আল্লাহভীরু) হতে পার।  (সূরা বাকারা আয়াত ১৮৩)। সমাগত মাসের প্রস্তুতি সম্পর্কে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জগত্বাসীর উদ্দেশ্যে এক ঐতিহাসিক ভাষণে দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন। যা আমাদের সবার জানা প্রয়োজন। জলিলুল কদর সাহাবি হজরত সালমান ফারিসী (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার শাবান মাসের শেষ দিন রসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণদান করলেন, রসুল (সা.) বললেন, হে লোক সকল! তোমাদের উপরে এক মহান মাস, এক কল্যাণময় মাস ছায়া বিস্তার করেছে। এটা এমন মাস যাতে এমন একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। আল্লাহতায়ালা (তোমাদের জন্য) এ মাসের রোজাকে ফরজ করেছেন এবং রাতে নামাজ পড়াকে নফল করেছেন। যে ব্যক্তি এ মাসে আল্লাহর (নৈকট্য) চেয়ে একটি নেক কাজ করবে সে ওই ব্যক্তির সমান হবে, যে অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায় করেছে। এ মাস ধৈর্যের মাস। আর ধৈর্য এমন একটি গুণ যার প্রতিদান (সাওয়াব) হলো জান্নাত। এটা পারস্পরিক সহানুভূতির মাস। এটা ওই মাস যাতে মুমিন ব্যক্তির রিজিক বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এ মাসে যে ব্যক্তি একজন রোজাদারকে ইফতার করাবে এটা তার পক্ষে তার গুনাহসমূহের জন্য ক্ষমাস্বরূপ হবে এবং তার নিজেকে জাহান্নামের আগুন হতে মুক্তির কারণ হবে। আর তাকে রোজাদারের সমান সওয়াব দান করা হবে এতে তার সওয়াব হতে কিছুই কমানো হবে না। হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি বলেন, আমরা বললাম, ইয়া রসুলুল্লাহ (সা.)! আমাদের প্রত্যেক ব্যক্তি এমন সামর্থ্য রাখে না যা দ্বারা রোজাদারকে ইফতার করাতে পারে। তখন রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, আল্লাহতায়ালা এ সওয়াব ওই ব্যক্তিকেও দান করেন যে কোনো রোজাদারকে এক ঢোক দুধ দ্বারা, একটি খেজুর দ্বারা অথবা এক ঢোক পানি দ্বারা ইফতার করায়। যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে পরিতৃপ্তির সঙ্গে ভোজন করায় আল্লাহতায়ালা তাকে আমার হাউজে কাউসার হতে পানীয় পান করাবেন। ফলে জান্নাতে প্রবেশ করা পর্যন্ত সে কখনো তৃষ্ণার্ত হবে না। এটা এমন একটি মাস যার প্রথম অংশ রহমত, মধ্য অংশ ক্ষমা এবং শেষ অংশ জাহান্নাম হতে মুক্তি। যে ব্যক্তি এ মাসে নিজের দাস-দাসীদের কর্মভার হালকা করে দেবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং তাকে জাহান্নাম হতে মুক্তিদান করবেন। (বায়হাকি, মিশকাতুল মাছাবিহ, কিতাবুস সাওম হাদিস নং ১৮৬৮)। মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে আগত রমজান মাসে সুস্থ শরীরে বেশি বেশি নেক আমল করে আল্লাহর প্রিয় বান্দাহ হিসেবে জান্নাতের মেহমান হওয়ার তৌফিক দান করুন।  আমিন।

লেখক : মুফাসসিরে কোরআন, ইসলামী মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, প্রিন্সিপাল, মণিপুর বাইতুর রওশন মাদ্রাসা কমপ্লেক্স মিরপুর, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর