শিরোনাম
শনিবার, ২৭ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রশাসনে দলবাজি

গণতন্ত্র ও রাজনীতির জন্য বিসংবাদ

সরকারি কর্মচারীদের দলবাজি দেশের জনপ্রশাসনের নিরপেক্ষতাকে যেমন ক্ষুণ্ন করছে তেমন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। জনপ্রশাসনের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। তাদের আনুগত্য থাকা উচিত প্রজাতন্ত্র এবং বড়মাপে প্রজাতন্ত্রের মালিক মোক্তার জনগণের প্রতি। কোনো বিশেষ দলের প্রতি আনুগত্য কিংবা কোনো বিশেষ দলের বিরূপ মনোভাব সে আনুগত্যে ব্যত্যয় ঘটায়। সাংবিধানিকভাবে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেহেতু তাদের মধ্যে দলবাজির মনোভাব মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে নিরপেক্ষতার শর্ত লঙ্ঘিত হয়। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালনের নৈতিক অধিকার দলবাজদের থাকার কথা নয়। সরকারি কর্মচারীদের দলবাজি একদলীয় শাসনের প্রতিকৃতি। তথাকথিত সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোতে পক্ষপাতপূর্ণ এ অবস্থানের দেখা মেলে। এক সময় এ ধরনের অপশাসনের যৌক্তিকতা নিয়ে দুনিয়াজুড়ে তত্ত্বের কপচানি চলেছে। সরলপ্রাণ অনেকেই সে তত্ত্ব কপচানিতে বিভ্রান্তও হয়েছেন। তবে কালের বিচারে একদলীয় শাসন এবং প্রশাসনে দলবাজির সুযোগ নিকৃষ্টতম রীতি বলে স্বীকৃত। একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক শাসনে ফিরে আসার প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতেও শুরু হয়েছে। একদলীয় শাসনে প্রশাসনের দলীয়করণ কিংবা দলবাজির যৌক্তিকতা থাকলেও গণতান্ত্রিক সমাজে তা অচল। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় প্রশাসনে দলবাজির পথ উন্মুক্ত হলে তা প্রশাসনকে যেমন কালিমাযুক্ত করে তেমন সংশ্লিষ্ট দলের জন্যও বিড়ম্বনা হয়ে দেখা দেয়। প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হওয়ার পাশাপাশি দুর্নীতি ভয়াল আকার ধারণ করে। দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং রাজনৈতিক দলের স্বকীয়তা রক্ষায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দলবাজির অনধিকার চর্চায় বাদ সাধতে হবে। এই অপকর্মের কুশীলবদের প্রশাসন থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টিও ভেবে দেখা উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর