বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

চিনির বাজারে নৈরাজ্য

অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাংলাদেশ সব সম্ভবের দেশে পরিণত হয়েছে কতিপয় লোভী মানুষের জন্য। আন্তর্জাতিক বাজারে যখন চিনির দাম কমছে তখন বাংলাদেশে এ নিত্যপণ্যের দাম সর্বকালের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। সরকারি সংস্থা টিসিবির হিসাবে গত এক মাসে চিনির দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশ।  দেশে পর্যাপ্ত চিনির মজুদ রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে গত চার মাসে চিনির দাম কমেছে প্রায় ১৯ শতাংশ অন্য সময়ের চেয়ে রমজানে চিনির চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এ বছর চিনির দাম বাড়তে শুরু করেছে রোজার এক মাস আগে থেকে। টিসিবির হিসাব অনুযায়ী, এক মাস আগে বাজারে প্রতি কেজি চিনির দর ছিল ৬২-৬৫ টাকা। সে চিনিই এখন ৭৪-৭৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রমজানে প্রায় আড়াই লাখ টন চিনির প্রয়োজন হয়। এ সময় ক্রেতাকে চিনির দাম গড়ে ১২ টাকা বেশি দিতে হলে তাদের পকেট থেকে বেরিয়ে যাবে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। ইন্টারন্যাশনাল সুগার অর্গানাইজেশনের তথ্য অনুযায়ী গত জানুয়ারি মাসে সাদা চিনির টনপ্রতি দর ছিল ৫৩০ ডলার। সর্বশেষ ২৬ মে সেই দর ৪৩২ ডলারে নেমেছে। অন্যদিকে জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে দেশে আমদানি হয়েছে ১৭ লাখ টন চিনি, যা মোট চাহিদার চেয়েও ৩ লাখ টন বেশি। বাজারে চিনির কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির জন্য চিনি শোধনাগার সিন্ডিকেট সর্বোতভাবে দায়ী বলে মনে করা হয়। চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তিন-চারটি চিনি পরিশোধনকারী কোম্পানি। যোগসাজশ করে তারা প্রতি বছর রোজা এলেই সংস্কারের নামে একটি-দুটি মিল বন্ধ রেখে কৃত্রিম সংকট তেরি করে। পাশাপাশি মিল থেকে চিনি সরবরাহে ধীর গতি করা হয়। এ অপকৌশলে চিনির দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে। রোজার মাসকে কেন্দ্র করে চিনির কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা চিনি ব্যবসায়ীদের ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। দেশে চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি চিনি মজুদ থাকা সত্ত্বেও এবং আমদানিমুখী এ পণ্যটির দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমতির দিকে থাকা সত্ত্বেও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে রোজার মাসেই দেশবাসীর পকেট থেকে ৩০০ কোটি টাকা যারা চুরি করে নিচ্ছে তারা ব্যবসায়ী নয় অপরাধী। এ দুর্বৃৃত্তদের দমন এবং তাদের শোষণের কবল থেকে ভোক্তাদের রক্ষা করা সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর