সোমবার, ৫ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

টাকার অবমূল্যায়ন জাতির স্বার্থবিরোধী

মেজর অব মো. আখতারুজ্জামান

টাকার অবমূল্যায়ন জাতির স্বার্থবিরোধী

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশের রপ্তানি আয় ৩৮.০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাড়ানোর প্রস্তাব করতে যাচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে তারা তিনটি শর্ত যোগ করতে চাচ্ছেন। শর্ত তিনটি হলো— মুদ্রার অবমূল্যায়ন, পোশাক রপ্তানিকারকদের নগদ প্রণোদনা এবং অব্যাহত রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা। এই তিনটি শর্ত পূরণ হলেই নাকি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশের বার্ষিক রপ্তানি আয় ৩৮.০ বিলিয়ন ডলার অর্জন করা সম্ভব হবে।  কী অদ্ভুত যুক্তি। যেখানে রপ্তানি হবে বৈদেশিক মুদ্রায় সেখানে বিদেশি মুদ্রার সঙ্গে টাকার মূল্য হ্রাস করলে রপ্তানি আয় বাড়বে কীভাবে তা অনেকেরই বোধগম্য হচ্ছে না।  বিদেশি অর্থনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীরা আমাদের শুরু থেকেই ধোঁকা দিয়ে আসছে। তারা দেশীয় তাঁবেদার গোষ্ঠী ও তাদের স্বার্থে একশ্রেণির অর্থনীতিবিদের কুপরামর্শে জাতিকে বুঝাতে চেষ্টা করে যে, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় মূল্য বেশি হলে টাকা বেশি পাওয়া যাবে এবং কম বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেও টাকার হিসাবে দেশের লাভ বেশি হবে। কি দারুণ যুক্তি!! কি ধোঁকাবাজি!! বিদেশি এই ধোঁকাবাজদের সহায়ক দুষ্টচক্র হলো আমাদের একশ্রেণির আমলা, বিদেশি শিক্ষায় শিক্ষিত অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়িক দালাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি অশুভ চক্র এবং কতিপয় রাজনৈতিক কুলাঙ্গার। এই দুষ্টচক্র মিলে টাকার একটি কৃত্রিম মূল্য নির্ধারণ করে জনগণের পকেট অব্যাহতভাবে মেরে চলছে অথচ আমরা নীরবে তা মেনে নিচ্ছি।

এই মুদ্রার হারের জুচ্চুরিটা শুরু হয় স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের পর থেকেই। সত্তর এবং আশির দশকে দেশের বাজেট সম্পূর্ণভাবে নির্ভর ছিল বৈদেশিক সাহায্যের ওপরে। তখন টাকায় প্রণীত বাজেট বড় দেখানোর জন্য প্রতি বছর বাজেট এলেই টাকার অবমূল্যায়ন করা হতো এবং চটকদার অর্থমন্ত্রীরা বর্ধিত বাজেট দেওয়ার কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করত। প্রকৃত অর্থে টাকার অবমূল্যায়ন করে ওই অর্থমন্ত্রীরা জাতিকে ধোঁকাই দিয়ে গেছেন। বিষয়টি আরেকটু খোলাসা করে বললে মনে হয় আমরা সবাই সহজে বুঝতে পারব। ধরে নেওয়া যাক ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশের বার্ষিক বাজেট ছিল ৩০ হাজার কোটি টাকা, যার বৈদেশিক সাহায্য এবং ঋণ থেকে পাওয়া ছিল ৭০ ভাগ অর্থাৎ ২১ হাজার কোটি টাকা। ওই সময় ডলারের মূল্য ছিল ২১ টাকা। তার মানে আমরা ডলারে বৈদেশিক সাহায্য ও ঋণ পেয়েছিলাম ১ হাজার কোটি ডলার। পরের বছর আমাদের বার্ষিক বাজেট ১০ ভাগ বৃদ্ধি করে বাজেট করা হয় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। তখনো বাজেটে বিদেশি ঋণ এবং সাহায্যের পরিমাণ ৭০ ভাগই ছিল কিন্তু টাকায় সেটি ছিল ২৩.১ হাজার কোটি টাকা এবং তাতে ৩.১ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পেল অথচ তখন টাকার অবমূল্যায়ন করে ডলারপ্রতি টাকা করা হলো ২৩.১ টাকা এবং ডলারে বৈদেশিক সাহায্য এবং ঋণ রয়ে গেল ১ হাজার কোটি টাকাতেই।

তাছাড়া প্রতিবার বৈদেশিক মুদ্রা ছাড় করার সময়ও টাকার অবমূল্যায়ন করা হতো, যাতে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ে টাকা বেশি দেখানো যায়। আবার বৈদেশিক ঋণের সুদ বা সাহায্য ফেরত দেওয়ার সময় টাকার মূল্য ধরে রাখার চেষ্টা করা হতো যাতে দেখানো যায় টাকায় পরিশোধ কম হচ্ছে। এই ছিল তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ও অর্থনীতিবিদদের তেলেসমাতি!! এভাবে বিদেশিদের স্বার্থে ক্রমান্বয়ে টাকাকে অবমূল্যায়ন করে আজকে ডলারপ্রতি টাকার বিনিময় হার ৮৫ টাকায় এনে দাঁড় করানো হয়েছে, যার ফলে টাকা তার প্রকৃত মূল্য হারিয়ে ফেলেছে। এভাবে টাকার ক্রমাগত অবমূল্যায়নের কারণে জনগণের প্রকৃত আয় কমে গেছে এবং দ্রব্যমূল্য অযাচিতভাবে বেড়ে গেছে। বর্তমানে আমরা যে দরে বিভিন্ন দ্রব্য ও সেবা ক্রয় করি তার প্রকৃত মূল্য অনেক কম কিন্তু জনগণকে ধোঁকা দিয়ে সরকার জনগণের এই টাকা বিদেশিদের ঘরে তুলে দিচ্ছে। রপ্তানি আয় বাড়ানোর নামে সরকার দেশীয় বাজারকে বিদেশিদের বাজারে পরিণত করছে। আমাদের শ্রমিকদের সস্তা মজুরি কাজে লাগিয়ে তাদের কাঁচামাল আমাদের কাছ থেকে প্রক্রিয়াজাত বা উৎপাদনে রূপান্তরিত করে বিদেশিরা ফায়দা লুটে নিচ্ছে। যেমন ধরা যাক তৈরি পোশাক। পোশাকের প্রায় সব কাঁচামাল বিদেশের, মেসিনপত্র বিদেশের, জ্বালানি বা বিদ্যুৎ উৎপাদনের মেসিনপত্রও বিদেশের, মান নিয়ন্ত্রণে বিদেশি প্রতিষ্ঠান, বাজারজাতকরণেও বিদেশিরা। বাংলাদেশে শুধু ব্যবহার করা হয় জমি, ফ্যাক্টরি শেড বা দালানকোঠা আবার সেগুলোর বেশির ভাগ অর্থাৎ রড, সিমেন্ট ও পাথর বিদেশের, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদির মূল উপাদানও বিদেশের। সবকিছু বিদেশের, যা এখানে এনে আমাদের শ্রমিকদের শোষণ করে বিদেশিরা তাদের দ্রব্য ও সেবা উৎপাদন করে আমাদের দেশ থেকে নিয়ে যায়। বিনিময়ে আমরা পাই প্রতি বছর আমাদের মুদ্রার অবমূল্যায়ন যার মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়ত বিদেশিদের দ্বারা শোষিত হচ্ছি।

এবার দেখা যাক বৈদেশিক রপ্তানির মাধ্যমে কীভাবে আমাদের ঠকানো হচ্ছে। ধরা যাক ১ ডজন টি-শার্ট আমরা আমেরিকান বা বিদেশের বাজারে বিক্রয় করি ১২ মার্কিন ডলারে। এই দর কিন্তু সেই ১৯৭৮ সাল থেকেই চলে আসছে যা ডলারে এখন পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধি হয়নি। যাই হোক, ১৯৭৮ সালের আমাদের তখনকার ডলার মূল্য ২১ টাকা হিসাবে ১ ডজন টি-শার্টের টাকায় মূল্য ছিল (২১–১২) ২৫২ টাকা, যা পরের বছর গিয়ে দাঁড়ায় ২৭৭.২০ টাকা। অর্থাৎ ডজনপ্রতি ২৫.২০ টাকা বেশি। কি সুন্দর হিসাব তাই না! আমাদের ব্যবসায়ীরা মহাখুশি। কিন্তু বিদেশিরা কিন্তু এক পয়সাও বেশি দিল না। তারা প্রতি ডজন ১২ ডলার দরেই আমাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে গেল এবং এখনো এই ২০১৭ সালেও একই দরে নিচ্ছে। কিন্তু ডলারের দাম বেড়ে এখন ৮৫ টাকা হয়েছে অর্থাৎ টাকার অবমূল্যায়ন অব্যাহতভাবে জারি আছে। তাহলে বৈদেশিক মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফায়দা কার স্বার্থে তা দেশের বিদগ্ধ অর্থনীতিবিদরা কি দয়া করে জাতিকে জানাবেন?

এ তো গেল আমাদের রপ্তানি আয়ের অবস্থা। এখন দেখা যাক আমাদের আমদানি খরচের কি অবস্থা। বাংলাদেশ একটি অত্যন্ত আমদানিনির্ভর দেশ। বছরে আমাদের প্রায় ৪০-৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশ ২০১৬ অর্থবছরে মোট ৪০.৫০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের বৈদেশিক পণ্য আমদানি করেছে যার মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হলো মেসিনারিজ ও কম্পিউটার ৫.৩ বিলিয়ন, তুলা ৪.৬ বিলিয়ন, বৈদ্যুতিক মেসিনারিজ ৩.৭ বিলিয়ন, আয়রন ও স্টিল ২.০ বিলিয়ন, খনিজ জ্বালানি ও তেল ২.০ বিলিয়ন, প্লাস্টিক ও প্লাষ্টিকজাতীয় দ্রব্য ১.৮ বিলিয়ন, গাড়ি ১.৭ বিলিয়ন, তৈরি সুতা ১.৫ বিলিয়ন, ভোজ্যতেল ১.৫ বিলিয়ন, নিট কাপড় ৯৮৭.৪ মিলিয়ন। এ ছাড়া আরও অনেক ভোগ্যপণ্য এবং খাদ্যদ্রব্য তো আছেই। এ বিশাল অংশের আমদানি খরচ টাকায় হিসাব করলে ২০১৬ সালের মার্কিন ডলার মূল্যে ৭৮.৭৫ টাকা হিসাবে টাকায় মূল্য দাঁড়ায় (৪০.৫ * ৭৮.৭৫) ৩১৮৫.৩৭৫ বিলিয়ন টাকা কিন্তু টাকার মান ১৯৭৬ সালের মূল্যে ধরে রাখতে পারলে ২০১৬ সালে আমাদের আমদানি খরচ হিসেবে ব্যয় করতে হতো (৪০.৫ *২১) ৮৫০.৫ বিলিয়ন টাকা। অর্থাৎ একই পরিমাণ ডলারের বিনিময়ে জাতির আমদানি খরচ হতো (৩২৮৫.৩৭৫- ৮৫০.৫) ২৩৩৪.৮৭৫ বিলিয়ন টাকা কম। টাকার সোজা হিসাবে দাঁড়ায় ২ লাখ ৩৩ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা যা ২০১৮-২০১৯ সালের বার্ষিক বাজেটের অর্ধেকেরও বেশি। টাকার অযৌক্তিক অবমূল্যায়ন না করলে প্রতিবছর আমাদের বিপুল পরিমাণ টাকা সাশ্রয় হতো এবং এর ফলে জনগণের জীবন ধারণের খরচ (কস্ট অব লিভিং) অনেক কম থাকত। তাছাড়া সবকিছু জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকত। কিন্তু বাংলাদেশকে বিদেশিদের বাজারে পরিণত করার গভীর ষড়যন্ত্রে একশ্রেণির রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়িক চক্র দেশের মুদ্রার অবমূল্যায়ন অব্যাহতভাবে করে যাচ্ছে যা প্রতিহত করতে না পারলে দেশের জনগণের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন কখনই সম্ভব হবে না। টাকার অবমূল্যায়ন কখনই দেশের স্বার্থে হতে পারে না। যদি তাই হতো তাহলে উন্নত বিশ্বের তাবৎ অর্থনীতিবিদের সব মেধা ও প্রচেষ্টা অর্থের মূল্য নির্ধারণে ব্যতিব্যস্ত থাকতে হতো না।

এবার আসা যাক ইপিবির দ্বিতীয় শর্ত তথা রপ্তানিকারকদের প্রণোদনা দেওয়ার ব্যাপারে। প্রণোদনা একটি অনৈতিক কাজ যা রাষ্ট্র কখনই উৎসাহিত করতে পারে না। প্রণোদনা ব্যবসায়িক দক্ষতা, প্রতিযোগিতা, দ্রব্যের মান ও তার প্রকৃত মূল্য নির্ধারণে প্রতিবন্ধকতা ও সর্বোপরি প্রণোদনা বিতরণে ব্যাপক দুর্নীতির সুযোগ করে দেয়। নগদ প্রণোদনার ব্যবস্থা আমাদের অনেক দিন থেকেই আছে কিন্তু যা শুরু থেকেই অপব্যবহার হয়ে আসছে। আজ পর্যন্ত প্রকৃত রপ্তানিকারকরা এর সুফল ভোগ করতে পারেনি। দেশের ট্রেড বডি, শুল্ক বিভাগ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি অশুভ চক্র এ নগদ প্রণোদনা লুটেপুটে খেয়ে আসছে। তাই প্রণোদনা নয়, প্রতিযোগিতা মূল্যে দেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করতে হবে এবং তা করতে হলে প্রথমে শিল্প অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য সাশ্রয়ী করতে হবে। অভ্যন্তরীণ সহজ ও গতিশীল যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বন্দর উন্নয়ন এবং নিজস্ব জাহাজ গড়ে তুলতে হবে। সবার উপরে দেশে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে। দেশে এখন ১০ লাখেরও বেশি বিদেশি বৈধ ও অবৈধ দক্ষ শ্রমিক কাজ করছে, যারা আমাদের রপ্তানি আয়ের এক বড় অংশ নিয়ে যাচ্ছে। বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি করে আমরা যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করি তার প্রায় সমপরিমাণ এ বিদেশি দক্ষ শ্রমিকেরা বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যায়। আমাদের দেশে এখন যে রপ্তানি আয় হচ্ছে তার মূল মুনাফা এ বিদেশি শ্রমিকদের মাধ্যমে আবার বিদেশে চলে যাচ্ছে। যার ফলে রপ্তানি আয় দেশের উন্নয়নে তেমন কোনো অবদান রাখতে পারছে না। উল্টো দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও জীবনধারণ খরচ অহেতুক বাড়িয়ে দিচ্ছে। কাজেই আমাদের দেশেই দক্ষ জনশক্তি ও উচ্চ কারিগরি দক্ষতাশীল শ্রমিক তৈরি করার জন্য জাতীয় অগ্রাধিকার দিয়ে একটি মার্শাল পরিকল্পনা নিতে হবে এবং ন্যূনতম সময়ের মধ্যে বিদেশি দক্ষ শ্রমিকদের জায়গায় দেশীয় শ্রমিকের প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে। দেশের থেকে অবৈধ পথে চলে যাওয়া বৈদেশিক মুদ্রা রক্ষা করতে না পারলে রপ্তানি আয়ের সুফল দেশের জনগণ পাবে না, পক্ষান্তরে আমদানি বৃদ্ধির ফলে দেশের ট্রেড ব্যালান্স কখনই অর্জন করা সম্ভব হবে না। কাজেই প্রণোদনা রপ্তানি আয় বৃদ্ধির উপায় হতে পারে না। আমাদের রপ্তানি আয় অবশ্যই বাড়াতে হবে এবং তা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে শত বিলিয়নে নিয়ে যেতে হবে যা দেশের ক্রমবর্ধমান জনশক্তির সঠিক বিনিয়োগ ও ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের হাতের নাগালে আনতে হবে। এর জন্য সঠিক পরিকল্পনা ও অগ্রাধিকার প্রয়োজন যা জাতীয় নেতৃত্বের কাছে জনগণের প্রত্যাশা। এবার আসি ইপিবির তৃতীয় শর্তে। আমাদের অবশ্যই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা লাগবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া কোনো প্রকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয় এবং এটি অস্বীকার করারও কোনো উপায় নেই। দেশ ও জাতির স্বার্থে আমাদের অবশ্যই রাজনীতির নিয়মনীতি ও স্থিতিশীলতা আনতেই হবে। রাজনীতিতে যে কোনো ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ দেশের রপ্তানি আয় শুধু বিঘ্নিতই নয়, সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকেই হুমকির মধ্যে ফেলে দেবে। তাই আজকে সবকিছুর আগে আমাদের রাজনৈতিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। রাজনীতিতে নিয়মনীতি ও আদর্শকে সবার উপরে স্থান দিতে হবে। ব্যক্তির ইচ্ছাকে প্রাধান্য না দিয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও চেতনাকে রাষ্ট্রীয় মূল নীতিতে নিয়ে আসতে হবে। রাজনীতিতে নেতৃত্ব একটি মৌলিক বিষয় এবং সঠিক ও গতিশীল নেতৃত্ব ছাড়া কোনো জাতিকেই সামনে এগিয়ে নেওয়া যায় না।  আবার নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা চিরন্তন, চলমান এবং সময়ের সঙ্গে পরিবর্তনশীল। একক ও দীর্ঘমেয়াদি নেতৃত্ব একনায়কত্ব, স্থবিরতা এবং দুর্নীতির জন্ম দেয়।  পরিশেষে বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, দেশের আয় বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। ইপিবিকে অবশ্যই সঠিক পরিকল্পনা করে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। জাতি অবশ্যই তাদের পাশে থাকবে।  আমাদের রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করতেই হবে এবং তা হবেই।

     লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য।

সর্বশেষ খবর