মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ ও আগামী জাতীয় নির্বাচন

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ

নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ ও আগামী জাতীয় নির্বাচন

গণতন্ত্রের জন্য এত আত্মত্যাগ পৃথিবীর খুব কম জাতিই করেছে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং তত্পরবর্তী ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন অভিযাত্রা। দুটো সংগ্রামই সংঘটিত হয়েছিল গণতন্ত্র অর্জন ও প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা থেকে। ১৯৯০ সালে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার তিন জোটের  রূপরেখা অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার পর তিনটা জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলেও ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হয়নি। যদিও ১৯৯৬-এর ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের পর ছয় মাসের মধ্যে তৎকালীন বিএনপি সরকার সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা ফিরিয়ে নতুন নির্বাচন দিয়েছিলেন।  কিন্তু ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের সরকার এটাকে সংবিধান রক্ষার নির্বাচন বলে অতিদ্রুত সবার অংশগ্রহণে আরেকটি নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও নতুন কোনো নির্বাচন না দিয়ে সাড়ে তিন বছর ধরে ক্ষমতাসীন রয়েছে। সে কারণে আজ যে সংকটের উদ্ভব তা হলো গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ অনুযায়ী অবাধ-সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অভাব। সে সঙ্গে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি ছিল প্রবল। সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে ও রাজনৈতিক দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ লোকদের দিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে এমনই উচ্চাশা পোষণ করেছিলেন সবাই। কিন্তু পরবর্তীতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সরকারের ইচ্ছার বাইরে না গিয়ে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। এ নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপিসহ সংসদের বাইরে থাকা তাদের জোটের অন্য দলগুলোর বিরোধিতা থাকা সত্ত্বে এ নির্বাচন কমিশনই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করবে। সেই লক্ষ্যে তারা একটা রোডম্যাপও ঘোষণা করেছে।

রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী ২০১৮ সালের ডিসেম্বর বা ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে যে কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে চলতি বছরের জুলাইয়ের মধ্যে রাজনৈতিক দল-সুশীল সমাজ, এনজিও ও সাংবাদিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ, ডিসেম্বরের মধ্যে ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করার সময়সীমা রাখা হয়েছে। এরপর ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারিতে ভোটার তালিকা চূডান্তকরণ, মার্চের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন সম্পন্ন এবং সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সক্ষমতা বাড়ানো। এই সক্ষমতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা ২০১৮ সালের জুলাই থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণের আগ পর্যন্ত চলবে। আগামী নির্বাচন সম্পর্কে  প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনাব কে এম নুরুল হুদা বলেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ৯০ দিন আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়। এটা নির্ভর করে প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছার ওপর। প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সংসদ ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন। এক্ষেত্রে নির্বাচন তখন এগিয়ে আসবে। অধিকন্তু নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপের মধ্যে যে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে সংক্ষেপে তা হলো ক. অর্থ ও পেশিশক্তির অবৈধ ব্যবহার মুক্ত নির্বাচন, খ. সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ বা লেভেল প্লেয়িং তৈরি করা, গ. সংশ্লিষ্ট আইনি কাঠামোগুলো সংস্কার, ঘ. নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ, ঙ. সুশীল সমাজের মতামত গ্রহণ, চ. নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরও সহজ-সরল এবং যুগোপযোগী করা, ছ. সংসদীয় এলাকার ভোটার সংখ্যায় যথাসম্ভব সমতা রেখে ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ।

এ বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বলেছেন, এ নির্বাচন কমিশন একটি অগ্রহণযোগ্য কমিশন, এ কমিশন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন নয়। এটা সরকারের তল্পিবাহক একটি কমিশন। একদলীয়ভাবে কীভাবে একটি নির্বাচন আগামীতে করা যায় সেটার রূপরেখা তারা দিয়েছে। সমালোচনা যাই থাকুক ইতিবাচক দিক হলো এই প্রথম একটি নির্বাচন কমিশন একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া অনুসরণের মাধ্যমে কীভাবে একাদশ সংসদ নির্বাচন করা যায় তারই একটা রূপরেখা। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গুরুত্ব পাচ্ছে আগামী জাতীয় নির্বাচন। রাজনৈতিক দলসহ জনগণের আগ্রহ রয়েছে এ নির্বাচনকে ঘিরে। নির্বাচনের ব্যাপারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সামগ্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতাসাধন। ভোটারবিহীন, নির্বাচনে পেশিশক্তির ব্যবহার, কারচুপি, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, পরিবর্তন, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে না দেওয়াসহ যেসব অন্যায় কারসাজি ইতিমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তা অপদমন করে সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা যাবে কিনা এটাই এখন নির্বাচন কমিশনের প্রথম ও বড় চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয়ত, নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে একটা অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব কিনা। তৃতীয়ত, নির্বাচনকালীন সময়ে কী ধরনের সরকার থাকবে সে সরকার নির্বাচনকে কোনোভাবেই প্রভাব বিস্তার করবে না। এ সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের জন্য জরুরি উদ্যোগ নেওয়া অতি প্রয়োজন। এগুলো ঠিক করা না গেলে কখনই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশা করা বাতুলতা ছাড়া আর কিছু নয়। কেননা আমাদের দেশে নির্বাচিত সরকারের অধীনে এ পর্যন্ত যত নির্বাচন হয়েছে কোনো নির্বাচনই অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। এমনকি স্থানীয় পরিষদের নির্বাচনী কাঠামোও আজ বিপর্যস্ত। আগে স্থানীয় পরিষদের নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন হলেও এখন তা নিরপেক্ষ করা দুরূহ হয়ে উঠেছে। সাংবিধানিক সংস্থা হিসেবে নির্বাচন কমিশনের সর্বপ্রকার লজিস্টিক সহায়তার জন্য সরকারের ওপর নির্ভর করতে হয়। প্রশাসন, সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন সাংগঠনিক কাঠামোর লোকদের নির্বাচনী কাজে সংযুক্ত করতে হয়। তাই এক্ষেত্রে চাপমুক্ত থেকে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়া নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। যা আমরা বিগত নির্বাচনগুলোতে প্রতিনিয়ত প্রত্যক্ষ করেছি। যার ফলে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াই আজ বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। তাই আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচন কেমন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে সেটি এখন জাতির কাছে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অন্যদিকে দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে, তাদের কথা বলার কোনো সুযোগ নেই, কোনো সভা-সমাবেশ করার অনুমতি মিলছে না, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করার সুযোগ নেই, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে, কারাগারে নেওয়া হচ্ছে এই অসম পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচন সম্ভব কীভাবে হবে। এ ছাড়া নির্বাচনের প্রথম শর্ত হলো একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি বা সব দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা। তাছাড়া দলটির পক্ষ থেকে ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করা হয়েছে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখেই। সেই নির্বাচন যদি উইন-উইন সিচুয়েশন বা সমান-সমান সুযোগের মধ্যে অনুষ্ঠিত না হয় তাহলে ভোটাররা নিরাপদে ও স্বচ্ছতার সঙ্গে তাদের প্রার্থীর অনুকূলে ভোট প্রদান করতে সক্ষম হবে না। সেক্ষেত্রে এ নির্বাচনও বিতর্কিত নির্বাচন বলে অভিহিত হবে। একটা সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন গণতন্ত্রকে মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে সক্ষম হয় এটা আজ সবাইকে ভাবতে হবে। কেননা জাতি কোনোভাবেই আর ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন দেখতে চায় না।

আবার নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত রোডম্যাপ বাস্তবে কতটুকু কার্যকর হবে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো সুনিশ্চিত করে নির্বাচনকালীন দক্ষ নিরপেক্ষ প্রশাসন গড়ে তোলা যাবে কিনা এ বিষয়গুলো আজ সবার সামনে চলে আসছে। বিগত দিনের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে, নির্বাচনকালীন সরকার যদি নিরপেক্ষ না হয় অবাধ-সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে কেবল দুরূহই নয়, অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। প্রয়োজনীয় লোকবল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অর্থ নির্বাচন কমিশনের নেই। এগুলোর জন্য কমিশনকে সরকারের ওপর নির্ভর করতে হয়। এমনকি নির্বাচন কমিশন ঘোষিত রোডম্যাপের মধ্যে যেসব কর্মকাণ্ডের কথা বলা হয়েছে তা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সরকারের সহযোগিতা ও আন্তরিকতার প্রয়োজন। নির্বাচনী আইন প্রয়োগ করতে হলেও সিভিল প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী ও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করতে হয়। তাই প্রত্যাশিত নির্বাচন করতে হলে সরকারের নিরপেক্ষতা তথা সার্বিক প্রশাসনের নিরপেক্ষতা যেমন জরুরি তেমনি নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী সর্বপ্রকার সহায়তা প্রদান আরও জরুরি। সে কারণে বিরোধী রাজনৈতিক দলসহ বিশিষ্টজনরা মনে করছেন নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের কথা। সার্বিক নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত বা কোনো চাপ থেকে বের করে এনে জাতির সামনে একটা সুন্দর দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।

আমরা জানি পৃথিবীর অনেক দেশেই নির্বাচন কমিশন সার্বিক নির্বাচন পরিচালনা করে এবং ওই সময়ে সরকার তাদের রুটিন ওয়ার্ক ছাড়া আর কোনো কিছুই করে না। পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে ভারত, পাকিস্তান এর জ্বলন্ত উদাহরণ। কিন্তু আমাদের দেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ভারতের সাকসিনা বা টিএন সেশনের মতো সাহসী কিনা তা সংশয়ের ঊর্ধ্বে নয়। এখানে সরকারি দলের অনেক নিয়ামক শক্তি আছে তারা নির্বাচনের সময় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে পারে। সেটাকে সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবিলা করে একটা সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়া তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ কারণেই আজ নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জাতির সামনে চলে আসছে। কেননা যে তিনটি সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছে সেগুলো দেশবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। এই ব্যবস্থাটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে একটা উচ্চমার্গে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিল। বরং এটি বাদ দেওয়ার ফলেই গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, রাজনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে যার বিরূপ প্রভাব এক সময় দেশের অর্থনীতির ওপরও পড়েছে। তাই আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনও আমরা আর একতরফা ও বিতর্কিত নির্বাচন দেখতে চাই না। নির্বাচন কমিশন ও সরকার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার ধারক হিসেবে কাজ করবেন এটাই সবাই কামনা করে। এ বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকরা এগিয়ে এসেছেন। তারা আগামী নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ চান। সেই সঙ্গে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরির মাধ্যমে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তার আশ্বাসও দিয়েছেন কূটনীতিকরা। আগামী নির্বাচনকে সবাই অংশগ্রহণমূলক করার কথা বলছেন। প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীদের মুখেও একই কথার প্রতিধ্বনি আমরা শুনছি। এক্ষেত্রে বিরোধী জোট হিসেবে বিএনপিকে এ নির্বাচনে আনার জন্য নির্বাচন কমিশনসহ সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রয়োজনে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটা যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছতে হবে। সবাইকে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। মনে রাখা দরকার ভোটারবিহীন নির্বাচন দেশে-বিদেশে কখনই গ্রহণযোগ্য হবে না।

পরিশেষে বলা যায়, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে এবং তাদের ঘোষিত রোডম্যাপের কার্যকারিতার বাস্তব প্রতিফলনের মাধ্যমে সব দলের অংশগ্রহণে একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এটাই সমগ্র দেশবাসী কামনা করছে। নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপে ঘোষিত কর্মসূচি কেতাবে থাকার দশা হয়ে না দাঁড়ায় সেদিকে তাদের খেয়াল রাখতে হবে। কারণ দেশের মানুষ সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে তাদের স্বাভাবিক ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন কেউই প্রত্যাশা করে না। এমনকি নির্বাচনে কোনো অপকৌশলের প্রয়োগ, বিজয় নিজেদের আনুকূল্যে আনার প্রবণতায় যেন নির্বাচন কমিশনের কোনো প্রকার সায় না থাকে সেটাও জাতি দেখতে চায়। একটা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন মানেই শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথকে সুগম করে।  তাই এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব অপরিসীম। কোনো অশুভ শক্তির প্রভাবের কারণে এই পবিত্র দায়িত্ব থেকে তারা যেন সরে না যায় সেটাই দেশের মানুষের প্রত্যাশা।

লেখক : চেয়ারম্যান, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।

ই-মেইল : [email protected]

সর্বশেষ খবর