মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

রমজানে আল্লাহ বান্দার ডাকে সাড়া দেন

মাওলানা আবদুর রশিদ

মাহে রমজান হলো রহমতের মাস। বান্দার দোয়া পূরণের মাস। আল্লাহ চান বান্দা তার কাছে আবেদন করুক। সৃষ্টিকর্তার কাছে নিজেকে মুখাপেক্ষী মনে করুক। এই চাওয়াটাই হলো দোয়া। আল্লাহ এই দোয়ায় সাড়া দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সূরা আল বাকারায় ১৮৫ ও ১৮৬ আয়াতে বলা হয়েছে— ‘আমার বান্দা যখন আমার ব্যাপারে তোমার (রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে জানতে চায় (তুমি বলো) আমি তো তোমাদের নিকটেই আছি। কোনো প্রার্থী আমার কাছে যখনই কিছু চায় তখনই আমি সাড়া দিই।’ একইভাবে আল্লাহ সূরা মুমিনের ৬০নং আয়াতে বলেছেন— তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। তবে আল্লাহ তখনই সাড়া দেবেন যখন বান্দা সাড়া দেওয়ার উপযোগী কায়দায় দোয়া পড়বে। আল্লাহকে হাজির-নাজির মেনে বিনীতভাবে তার করুণা প্রার্থনা করবে।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দোয়াই হলো আসল ইবাদত (আসহাবে সুনান)। কেন তিনি এটিকে আসল ইবাদত বলেছেন? এর কারণ হলো— বান্দা যখন আল্লাহর কাছে করুণা চায় তখন এই চাওয়ার মাধ্যমে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে। সে যেসব ক্ষেত্রে আল্লাহর মুখাপেক্ষী তা বিনীতভাবে স্বীকার করে। তবে আল্লাহর মুখাপেক্ষী বান্দাকে আল্লাহর সব নির্দেশ মেনে চলতে হবে। নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত যেসব ইবাদত তার জন্য প্রযোজ্য সব কিছু আন্তরিকতা ও  বিশ্বস্ততার সঙ্গে পালন করতে হবে। বান্দাকে সমর্পিত মনোভাবের অধিকারী হতে হবে।

কোরআন ও হাদিসের নির্দেশনায় চলার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই বলেছেন, আল্লাহর কাছে বান্দার দোয়ার চেয়ে বেশি প্রিয় আর কিছু নেই। তিনি এটিকে সব ইবাদতের নির্যাস হিসেবেও ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ পরম করুণাময়। আল্লাহর এই পরিচয় তখনই মূর্তমান হয় যখন বান্দা করুণাভরে আল্লাহর রহমত চায়। যে কারণে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যার জন্য দোয়ার দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে তার জন্য রহমতের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ দোয়া ও রহমত প্রাপ্তি এর একটি অপরটির অনুষঙ্গ। একমাত্র আল্লাহর প্রতি অনুগতরাই তাঁর কাছে করুণা ভিক্ষা করার যোগ্য। মাহে রমজানে আল্লাহ আমাদের সে যোগ্যতা অর্জনে তৌফিক দান করুন।  আমাদের জন্য তাঁর রহমতের দরজা উন্মুক্ত করুন।

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর