শুক্রবার, ৯ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইরানে জঙ্গি হামলা

মানবতার শত্রুদের প্রতি ধিক্কার

প্রথমবারের মতো ইসলামী স্টেট নামের সুন্নি জঙ্গিদের বেপরোয়া হামলার শিকার হলো ইরান। গত বুধবার সিয়াম সাধনার মাহে রমজানে তারা ইরানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে নিজেদের উন্মত্ততা প্রকাশের টার্গেট হিসেবে বেছে নেয়। তেহরানে ছদ্মবেশে সুরক্ষিত পার্লামেন্ট ভবনে আত্মঘাতী হামলা চালায় জঙ্গিরা। ইরানের প্রয়াত সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির মাজারেও একই ধরনের হামলা চালিয়ে তারা নিজেদের সক্ষমতার পরিচয় দেয়। হামলাকারীদের মধ্যে একজন নারীও আছেন। আয়াতুল্লাহ খোমেনির মাজারে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালান তিনি। ইরাক ও সিরিয়াকেন্দ্রিক সুন্নি জঙ্গি সংগঠন ইসলামী স্টেট আত্মপ্রকাশ করে মূলত শিয়া মুসলমানদের ওপর প্রতিহিংসা চরিতার্থের উদ্দেশ্য নিয়ে। ইরাকে সংখ্যালঘিষ্ঠ সুন্নিরা ক্ষমতায় ছিল বছরের পর বছর ধরে। সংখ্যাগরিষ্ঠ শিয়ারা ছিল নিজ দেশে পরবাসী অধিকারহীন। ইরাকের একনায়ক সাদ্দামের পতনের পর সংখ্যাগরিষ্ঠ শিয়া সম্প্রদায়ের হাতে দেশ পরিচালনার ক্ষমতা চলে যায়। ক্ষুব্ধ সুন্নিদের মধ্যে মাথাচাড়া দেয় জঙ্গিবাদ। ইসলামী স্টেট নামের জঙ্গি সংগঠন গঠিত হয় মূলত সাদ্দামের সেনাবাহিনীর পলাতক সদস্যদের ওপর ভর করে। এ জঙ্গি সংগঠন গঠনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থন ছিল বলেও ব্যাপকভাবে অভিযোগ রয়েছে। উপসাগরীয় অঞ্চলে ইরানের উত্থানকে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি স্বার্থের জন্য বিপজ্জনক ভেবে তারা জঙ্গিদের পেছনে মদদ জুগিয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়। ওহাবি ইসলামের অনুসারী সৌদি আরবের সমর্থনও ছিল প্রথমদিকে আইএস জঙ্গিদের দিকে। দুধ-কলা দিয়ে পোষা সাপ নিজেদের অস্তিত্বের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠায় দৃশ্যত মদদকারীরাও এখন আইএসের বিরুদ্ধে। ইরানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আইএস জঙ্গিদের হামলা শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব আরও প্রকট করে তুলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসবিরোধী লড়াইয়ে ইরানের আরও জোরেশোরে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও সৃষ্টি করেছে এই জঙ্গি হামলা।  মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির জন্য তা ঘোরতর অশনি সংকেত বলেও বিবেচিত হতে পারে।  মানবতার শত্রুদের প্রতি আমাদের ধিক্কার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর