শনিবার, ১৭ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

অজ্ঞান পার্টির তত্পরতা

অপরাধীদের কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করুন

ঈদ সামনে রেখে রাজধানীতে অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর বাস-লঞ্চ টার্মিনাল ও রেলওয়ে স্টেশনসহ জনাকীর্ণ অন্তত শতাধিক পয়েন্টে অজ্ঞান পার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের পাঁচ শতাধিক সদস্য সক্রিয় রয়েছেন। চেতনানাশক মেশানো জুস, ডাবের পানি, খেজুর, শরবতসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করছেন অপরাধী চক্রের সদস্যরা। চেতনানাশক উপাদান-মিশ্রিত খাবার খেয়ে মৃত্যুর ঘটনাও প্রায়শই ঘটছে। গেল ঈদ ও দুর্গাপূজায় ঢাকা মহানগরীতে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে অজ্ঞান পার্টির বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করেছিল। এতে কিছু দিন এই চক্রের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে এর কিছু দিন পরই শুরু হয় তাদের কার্যক্রম। বিশেষ করে ঈদকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বেড়েছে অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য। এ চক্রের সদস্যদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে সহজ সরল খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। গণপরিবহনে যাত্রীবেশে পথচারী কিংবা বিভিন্ন পেশার ছদ্মবেশে তত্পরতা চালান অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা। প্রায় প্রতিদিনই মহানগরীর গুলিস্তান, তিন বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনালসহ জনাকীর্ণ এলাকায় পথচারী ও যাত্রীদের অজ্ঞান করে তারা সর্বস্ব হাতিয়ে নিচ্ছেন। পুলিশ ও হাসপাতালসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গেল এক মাসে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারানোসহ অসুস্থ হয়েছেন অর্ধশতাধিক। মুক্তিযোদ্ধা, চিকিৎসক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, ছাত্র, শিক্ষক কেউই এদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। মাঝে মাঝে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা গ্রেফতার হলেও কয়েক দিনের মাথায় তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে ফের একই অপরাধে জড়াচ্ছেন। মাহে রমজানে তত্পরতা বেড়ে যাওয়ায় অজ্ঞান পার্টির বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এ চক্রের বেশকিছু সদস্যকে তারা গ্রেফতারও করেছে। আমরা আশা করব, অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের শুধু গ্রেফতার নয়, তারা যাতে তাদের অপরাধের যথাযথ সাজা পান তা নিশ্চিত করতে হবে। গ্রেফতার অপরাধীরা আইনের ফাঁক গলিয়ে কেন জামিন পাচ্ছেন, সে রহস্যও উদ্ঘাটন করতে হবে। অজ্ঞান পার্টির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের ও মামলা পরিচালনায় শুভঙ্করের ফাঁকি যাতে না থাকে তা নিশ্চিত হওয়া দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর