বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

কাউকে যথেচ্ছভাবে কাফের বলা যাবে না

আল্লামা মাহমুদুল হাসান

আমাদের মাঝে কিছু শিরকে ছিফাতী আছে। এগুলো যার মধ্যে আছে তাকে কাফের বলার ক্ষেত্রে তাহকিক বা যাচাই করে বলা উচিত। ইমাম আবু হানিফা (রা.) বলেছেন, একটা মানুষকে কাফের বলার আগে চিন্তা করতে হবে। যদি তার মধ্যে কুফরির ৯৯টা গুণ থাকে আর একটা খালেস গুণ থাকে ইমানের, তাহলেও তাকে কাফের বলা যাবে না। অনেক কঠিন ব্যাপার!

আমাদের দেশের অবস্থা কি? আমাদের দেশে এখন সবচেয়ে সহজ বিষয় হলো একজনকে কাফের বলে দেওয়া। বলা হয় অমুক ব্যক্তি কাফের। কারণ জিজ্ঞেস করা হলে বলে যে, সে কিয়াম করে না। কিয়াম না করলে কি কাফের হয়ে যায়? কাফের ফতোয়া যে দিচ্ছে, সে কিন্তু কোরআন শরিফ পড়াও জানে না। এর জন্য দায়ী আমরাই, দুটি কারণ। এক. আমাদের কিছু লোক তো এসব আপত্তিকর কাজ করে থাকি। দুই. যারা করে তাদের আমরা ভয়ে কিছু বলি না, চুপচাপ থাকি, তাতে জাতি ধ্বংস হয়ে যায় যাক। অথচ দেখা গেছে যে, তাদের সত্য কথা সুস্পষ্টভাবে বললে তারা মানে। আমরা বুঝাতে পারিনি। বুঝাতে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে যাই। আগেই ‘কাফের’ বলে মারামারি শুরু করে দিই। তৃতীয় কারণ হলো শয়তান। তাকে দেখা যায় না। সে তাতে ইন্ধন জোগায়।

তোমার পছন্দ হয় না কর না, তার পছন্দ হয় সে করুক। তাকে বুঝানোর চেষ্টা কর।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ‘মান রায়া মিনকুম মুনকারান ফালইউগাইয়্যিরহু বিয়াদিহি’  মানুষ সমাজে দীনের দাওয়াত ও তাবলিগ এবং অন্যভাবে অপরাধ প্রতিহত করার দায়িত্ব পালন করবে। যদি আমাকে নবী মান, আমার শাফায়াত চাও, তাহলে যেন এগুলো করে আমার কাছে এসো। যে আল্লাহ তোমাকে সৃষ্টি করেছেন সে আল্লাহর হুকুমকে দুনিয়ার জমিনে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কাজ কর। এটা তোমার দায়িত্ব। মন্ত্রী হলে তোমাকে মন্ত্রী পর্যায়ের দায়িত্ব পালন করতে হবে। পার্লামেন্ট মেম্বার হলে তোমাকে সেই পর্যায়ের কাজ করতে হবে। আর যদি শক্তি প্রয়োগ করার ক্ষমতা না থাকে, তাহলে দ্বিতীয় পর্যায়ে জবানের শক্তি রয়েছে। আমি যদি কথা বলতে পারি, যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে কথা উপস্থাপন করে মানুষকে বোঝাতে পারি, আল্লাহ যদি আমাকে এই ক্ষমতা দিয়ে থাকেন তাহলে আমাকে সমাজের মানুষকে বলতে হবে, বোঝাতে হবে। বলার মাধ্যমে সমাজের মধ্যে সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং অসত্যকে প্রতিহত করতে হবে।

লেখক :  খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ।

সর্বশেষ খবর