শনিবার, ১ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

রসুল (সা.) ছিলেন পূর্ণিমার চাঁদের মতো উজ্জ্বল

মাওলানা আবদুর রশিদ

তিরমিজির হাদিসে আল-হাসান ইবনে আলী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার মামা হিন্দ ইবনে আবু হালাকে (রা.) রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দেহাবয়ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। বলা বাহুল্য, তিনি প্রায়ই তাঁর দেহাবয়ব সম্পর্কে বর্ণনা করতেন। আমার আকাঙ্ক্ষা ছিল যে, তিনি আমার কাছে তাঁর দেহাবয়ব সম্পর্কে কিছু বর্ণনা করুন, যাতে আমি তা স্মরণ রাখতে এবং তদানুযায়ী আমল করতে পারি। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যক্তি হিসেবেও মহান এবং মানুষের দৃষ্টিতেও মর্যাদাসম্পন্ন ছিলেন। তাঁর চেহারা পূর্ণিমার চাঁদের মতো উজ্জ্বল ছিল।

এভাবে তিনি পূর্ণ হাদিস বর্ণনা করেন।

হাসান (রা.) বলেন, কিছুকাল আমি হুসাইনের (রা.) কাছে এ হাদিস গোপন রাখি। অতঃপর তার কাছে আমি এটি বর্ণনা করে জানতে পারলাম যে, সে আমার আগেই মামার কাছে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছে এবং আমি তাকে যা জিজ্ঞাসা করেছিলাম, সেও একই বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করেছে। উপরন্তু সে তার পিতার কাছে রসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমন-নির্গমন, তার চালচলন ও আচার-আচরণ সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করেছে। কোনো কিছুই জানতে সে বাদ রাখেনি। হুসাইন (রা.) বলেন, আমি আমার পিতাকে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘরে প্রবেশের বিবরণ জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বলেন, তিনি যখন তার ঘরে আশ্রয় নিতেন, তখন তার ঘরে অবস্থানকে তিন ভাগে ভাগ করে নিতেন : এক ভাগ মহামহিম আল্লাহর (ইবাদতের) জন্য, এক ভাগ তার পরিবার-পরিজনের জন্য এবং এক ভাগ তার নিজের জন্য। তার নিজের জন্য নির্ধারিত অংশকে আবার তিনি নিজের এবং জনগণের জন্য বিভক্ত করতেন। এ সময় তিনি বিশিষ্ট সাহাবিদের সাক্ষাৎ দিতেন এবং তাদের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে প্রয়োজনীয় বিষয়াদি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতেন। কোনো জিনিস তিনি তাদের না দিয়ে পুঞ্জীভূত করতেন না। উম্মতের বেলায় তাঁর একই নিয়ম ছিল যে, তিনি জ্ঞানী ও গুণীদের অগ্রাধিকার দিতেন এবং নিজের সময়টুকু তাদের মর্যাদা অনুযায়ী তাদের মধ্যে বণ্টন করতেন। তাদের কেউ একটি প্রয়োজন নিয়ে, কেউ দুটি প্রয়োজন নিয়ে, আবার কেউ অনেক প্রয়োজন নিয়ে হাজির হতেন। তিনি তাদের প্রয়োজন পূরণ করতেন এবং তাদের এমন কাজে নিয়োজিত করতেন যা তাদের ও এই উম্মতের জন্য কল্যাণকর। তাদের জিজ্ঞাসার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি তাদের উপযোগী বিষয় সম্পর্কে অবহিত করতেন।

লেখক :  ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর