বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

আদর্শের রাজনীতি চির অম্লান

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ

আদর্শের রাজনীতি চির অম্লান

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জীবিত ও মৃত’ ছোটগল্পে যেমন কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করেছিল যে সে মরে নাই, তেমনিভাবে ৩০ বছর ধরে বসবাসরত বাড়ি হারিয়ে মওদুদ প্রমাণ করলেন তিনি অব্যাহত চাপের মুখেও বিএনপি ছাড়েননি। এখানে মূল কথা হলো মানুষ বাঁচে তার কর্মের মধ্য দিয়ে। মানুষের জীবনের অকৃত্রিম ভালোবাসা, কর্ম-আদর্শ-জাগরূক থাকে, হৃদয়ে গ্রথিত থাকে চিরকাল। প্রবীণ রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মওদুদও জীবনের শেষ অধ্যায়ে এসে তেমনি এক বেদনাদায়ক ঘটনার শিকার হওয়ার পরেও জাতীয়তাবাদী আদর্শের মূর্ত প্রতীক হয়ে রইলেন। প্রমাণ করলেন কোনো সহয়-সম্পত্তির লোভ নয়। নীতি-আদর্শই বড় কথা। অতঃপর প্রায় চার দশক অবস্থানের পর গত ৭ জুন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের গুলশানের বাড়িটি আদালতের রায়ে দখল নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতিতে রাজউকের অভিযানের শুরুর আগে বাড়ির বিদ্যুৎ ও গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়। উচ্ছেদ অভিযানের শুরুতে মওদুদ আহমদ বাসায় ছিলেন না, খবর পেয়ে ছুটে আসেন এবং হতবাক দৃষ্টিতে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ঘটনা প্রত্যক্ষ করছিলেন। বাড়ির মালামাল রাজউকের আসা ট্রাক ও ভ্যান দিয়ে সরানো হয়। এর আগে ৪ জুন এ বাড়ি নিয়ে করা মামলায় যাবতীয় বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে দিলে মওদুদ ওই বাড়ির মালিকানা হারান। উচ্ছেদের দিন সন্ধ্যায় বেগম খালেদা জিয়া মওদুদ আহমদের বাড়ির সামনে ছুটে গিয়ে সমবেদনা জানান এবং একই দিন এক ইফতার অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া বলেন, যারা এখন বাড়ি উচ্ছেদ করছে ভবিষ্যতে জনগণ তাদেরও এক কাপড়ে উচ্ছেদ করবে। তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আরও বলেন, ‘মওদুদ আহমদ ওই বাড়িতে ৩০ বছর ছিলেন। আমিও আমার বাড়িতে ৪০ বছর ছিলাম। আমাকেও এক কাপড়ে বের করে দেওয়া হয়েছে।’ ইতিপূর্বে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা গুলশান-২ এ অবস্থিত তার বাড়িটিও একই প্রকারে হারান।

বস্তুত, আদালতের আদেশে কাউকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার আগে নোটিস দেওয়া উচিত বলে প্রতীয়মান। কিন্তু মওদুদ আহমদের বাড়ি উচ্ছেদের ক্ষেত্রে কোনো নোটিস করা হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়। রাজনৈতিক নেতাদের এভাবে উচ্ছেদের ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা খারাপ প্রিসিডেন্স হয়ে থাকবে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। হঠাৎ করে মওদুদ আহমদ ও এর আগে খালেদা জিয়াকে তাদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদের প্রয়োজন পড়ল কেন। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ মনে করেন, এ ধরনের ঘটনা অনেকটা মনস্তাত্ত্বিক চাপের জন্য করা হয়ে থাকে। মনে করা হয় এর ফলে রাজনৈতিভাবে বিরোধী দলের লোকজন একটা প্রেসারে থাকবে এবং তাদের নেতা-কর্মীদের ওপর এক ধরনের মানসিক চাপ তৈরি হবে। তখন তারা তাদের অধিকার আদায় ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে নিজেদের নিয়োজিত করতে ভয় পাবে। বড় বড় নেতারা যখন নিগৃহীত হয়, তখন দলের সমর্থক-কর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ভীতির সঞ্চার তৈরি করে। ফলে মনে করা হয়, তারা রাজনৈতিক ক্রিয়া-কর্মে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে এবং রাজনৈতিক দল হিসেবে দুর্বল প্রতিপক্ষ হিসেবে প্রতীয়মান হবে।

অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, মওদুদ আহমদকে দিয়ে বিএনপিকে ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু তিনি সে টোপে না পড়ায় তার ওপর এমন খড়গহস্ত নেমে এসেছে। তিনি যদি বিএনপি থেকে বেরিয়ে নতুন দল গঠন করতেন অথবা নিষ্ক্রিয় থাকতেন তাহলে হয়তো তিনি অনেকের প্রিয়ভাজন হয়ে এ ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হতেন না। এক সময় তিনি আওয়ামী লীগ করতেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আসামি ছিলেন। তারপর বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন এবং পরবর্তীতে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। আবার বিএনপির রাজনীতিতে ফিরে এসে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এসেছে বলে দাবি করেছিলেন। এখনো পর্যন্ত বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তার এই সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নানা উত্থান-পতন থাকা সত্ত্বেও বিএনপির ক্রান্তিকালে আর রাজনৈতিক আদর্শচ্যুত হননি। মওদুদ বিভিন্ন সরকারের আমলে বিভিন্ন সময়ে সরকারের মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এমনকি ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। একই সঙ্গে এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক একজন খ্যাতিমান আইনজীবী ও লেখক। ভালো ভালো বই লিখেছেন, গণতন্ত্রের সংগ্রামে জেল খেটেছেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রশ্নে কথা বলতে গিয়ে এই রাজনীতিক এখন সরকারের রোষানলে পড়ে গেছেন বলে অনেকেই মনে করেন।

তবে মওদুদ আহমদের বাড়ি হারানোর বিষয়ে লিখতে গিয়ে আরও একটু পেছন ফিরে তাকিয়ে একটি বিষয়ে উল্লেখ করার প্রয়োজন রয়েছে। তা হলো ২০০১ সালে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার শেখ রেহানাকে ঢাকার ধানমন্ডিতে ৬ নম্বর সড়কের ২১ নম্বর বাড়িটি বরাদ্দ দেয়। যা তিনি বরাদ্দকৃত মূল্যে ক্রয় করেছিলেন। পরবর্তীতে বিএনপির জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৫ সালে শেখ রেহানার বাড়ির বরাদ্দ বাতিল করা হয় এবং সেখানে ধানমন্ডি থানার কার্যালয় স্থাপন করা হয়। বাড়ি ফিরে পেতে শেখ রেহানা আদালতে রিট মামলা করলেও পরবর্তীতে মামলা আর চালাননি। আমরা শেখ রেহানাকেও বাড়ি থেকে উচ্ছেদের এ ধরনের ঘটনাকেও মনে করি তৎকালীন সরকারের প্রতিহিংসার রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ। যা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না।  

সবারই জানা, অদৃশ্য শক্তির ইশারায় বিএনপিকে খণ্ড-বিখণ্ড করার চেষ্টাও কম হয়নি। গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের আগে জনৈক আবুল কালাম আজাদকে দিয়ে বিএনপির বিকল্প হিসেবে বিএনএফ (বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফোরাম) গঠন করে তাকে ওই নির্বাচনে বিনাভোটে এমপি করা হয়। এ ছাড়া নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে তাদের ধানের শীষ দেওয়ারও কম চেষ্টা হয়নি। এমনকি ধানের শীষের আদলে গমের শীষকে প্রতীক হিসেবে বিএনএফকে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। এ ধরনের হীন কাজে তৎকালীন নির্বাচন কমিশনসহ অনেক প্রতিষ্ঠান জড়িত ছিল বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। অধিকন্তু সরকারি ছত্রছায়ায় আসল বিএনপি গঠনের নামেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় দখলের চেষ্টাও করা হয়েছিল। অন্যদিকে নাজমুল হুদাকে দিয়েও নতুন দল গঠন করা হয়েছে যাতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নাজমুল হুদার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। বিএনপিকে ভাঙার চেষ্টা হিসেবে উল্লিখিত নানা কেচ্ছা-কাহিনী আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। যদিও সরকার থেকে বারবার বলা হয়েছে বিএনপিকে ভাঙার কোনো কৌশলই তারা গ্রহণ করেনি। তদুপরি আমরা আরও প্রত্যক্ষ করেছি যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নামে ৭টি মামলাসহ, খন্দাকার মোশাররফ হোসেনের নামে ১১টি, মির্জা আব্বাসের নামে ৯৬টি, এম কে আনোয়ারের নামে ৪০টি, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার নামে ১২টি, ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার বিরুদ্ধে এক ডজনের ওপরে মামলা দেওয়া হয়েছে। এরা সবাই জেল খেটেছেন, কেউ কেউ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে আছেন এবং এখনো পর্যন্ত মামলার ঘানি টেনে যাচ্ছেন। শোনা যায় বিএনপির এসব নেতাকে মামলা-হামলা, জেল-জুলুমের ভয় দেখিয়েও বিএনপিকে ছিন্ন-ভিন্ন করার কম চেষ্টা হয়নি। তথাপিও এসব নেতা বিএনপি ত্যাগ করে বিকল্প দল গঠন করেননি, অন্য দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হননি বা রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাননি। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে শুরু করে একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের এমন কোনো নেতা-কর্মী পাওয়া যাবে না যাদের বিরুদ্ধে ডাবল ডিজিটের মামলা নেই। স্বয়ং তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নামে ২৩টি মামলা ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে ৮৫টি মামলা রয়েছে। এরা সবাই আইনি প্রক্রিয়ায় জাতীয়তাবাদী আদর্শ বুকে ধারণ করে নিরন্তরভাবে মামলাগুলোতে লড়ে যাচ্ছেন, নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন, কখনো কখনো জামিন বাতিল হওয়ায় জেলে যাচ্ছেন কিন্তু হতোদ্যম হননি, ভেঙে পড়েননি, রাজনীতি বিমুখ হননি।

অধিকন্তু, জনগণের ভোটে নির্বাচিত গাজীপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট সিটি করপোরেশনের জনপ্রতিনিধিরা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যমূলক বিভিন্ন মামলায় জেল খেটেছেন বলে তাদের দাবি। জামিনে মুক্ত পেয়ে আবারও নতুন নতুন মামলায় তাদের গ্রেফতার হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বারবার। ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শের কারণে এসব জনপ্রতিনিধি মামলার আসামি হয়ে অতিদ্রুততার সঙ্গে মেয়রের পদ থেকে পদচ্যুত হয়েছেন। নির্বাচনী মেয়াদের অধিকাংশ সময়ে জেলে থাকার কারণে নিজ দায়িত্ব পর্যন্ত পালন করতে পারেননি। এতদসত্ত্বেও তারা নিজ দল বা আদর্শের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেননি, দল ছেড়ে যাননি। তাছাড়া বিএনপির অজস্র নেতা-কর্মী নানা মামলা-হামলায় পড়ে নিজে এলাকা ছেড়েছেন, কেউ কেউ বিদেশে অবস্থান করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তবুও তারা দল ত্যাগ করেননি অথবা বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে সরকারি দল বা অন্য কোনো দলে যোগদান করেছেন এমন দৃষ্টান্তও তেমন দেখা যায়নি। বরং শত প্রতিকূলতার মধ্যেও ৩০০ সংসদীয় আসনে ৯০০ জন প্রার্থী প্রস্তুত রাখতে সক্ষম হয়েছে বলে বিএনপি থেকে ঘোষণা করা হয়েছে। তদ্রূপ ইতিপূর্বে আওয়ামী লীগ যখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে ছিল তখনো আওয়ামী লীগকে ভাঙার চেষ্টা হয়েছে অনেক বার। কিন্তু শত বাধা-বিপত্তির মধ্যেও তাদের ঐক্যে ফাটল ধরানো যায়নি। তাদের নেতাদের আদর্শচ্যুত করা যায়নি। বিশেষ করে ’৭৫-এর পর আওয়ামী লীগের যে সঙ্গীন অবস্থা তৈরি হয়েছিল তার ১০-১৫ বছর পর আওয়ামী লীগ আবার রাজনীতিতে পুরোদস্তুর মতো ঘুরে দাঁড়িয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে এক উজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছিল। এর পর পরই তো ১৯৯৬ সালে তারা আবার গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতাসীন হলো। এ কথা সবার ভাবা উচিত যে, অনেক সময় মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি করে, ভয় দেখিয়ে, অর্থ-সম্পদ কেড়ে নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীকে রাজনৈতিক বিমুখ করে তোলা যেতে পারে, আদর্শচ্যুত করা যেতে পারে, দল ভাঙা যেতে পারে কিন্তু প্রকারান্তরে তাতে কোনো লাভ হয় না। তাহলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুটো দলই বহু আগেই নিঃশেষ হয়ে যেত। তাই রাজনৈতিক দল ভাঙা-গড়ার এই হীন প্রচেষ্টা থেকে আমাদের সবার বেরিয়ে আসা উচিত। কেননা এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণতন্ত্রকে দুর্বল ও ভঙ্গুর করে তোলে। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, রাষ্ট্রীয় শক্তি যখন জনগণের ওপর নির্ভর না করে একটি বিশেষ সংগঠনের ওপরে নির্ভর করে তখন অনেক অনভিপ্রেত ঘটনার জন্ম দেয়। যার দায়ভার ক্ষমতাসীন দলের ওপর এসে বর্তায়।

বলা বাহুল্য, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ক্ষমতাসীন দল যদি একটা বিশেষ দল বা গোষ্ঠীর ওপর অনাবশ্যক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে থাকে তাহলে এই সুযোগে নিজের দলের লোকেরা নানা অন্যায়-অপকর্মে লিপ্ত হবে। কেননা তারা মনে করবে সরকারি দল মানে সব কিছু থেকে মাফ পাওয়া। আর এক্ষেত্রে মুশকিল আহসানের সংস্কৃতি চালু হবে। যার পরিণতি হবে আরও খারাপ। আইন তখন একচোখা নীতিতে পরিণত হবে। আর যে কারণেই আজকে আইনের শাসনের কথা বারবার সব কর্ণার থেকে উঠে আসছে। অর্থাৎ আইনের প্রয়োগ যেন সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়। বিরোধী মতের নেতা-কর্মীদের ওপর অনাবশ্যক অন্যায়-অত্যাচার করার হীনমানসিকতা আমাদের সবার পরিত্যাগ করা উচিত। কেননা এ ধরনের কর্মকাণ্ড যথারীতি মানবাধিকার ও আইনের শাসনের পরিপন্থী। সৎ নীতি হয়তো সবার থাকতে পারে কিন্তু সবাই একই আদর্শের মানুষ হয় না। বিভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শের  সহাবস্থান ও পারস্পরিক সহিষ্ণুতার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি বিকাশ লাভ করে। বিচিত্রতার মধ্যে এক মহান ও অনবদ্য ঐক্য গড়ে ওঠে। যা রাষ্ট্র ও সমাজকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। আমাদের রাজনৈতিক দলের কাছে জনগণ সেই প্রত্যাশাই করে।

লেখক : চেয়ারম্যান ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।

ই-মেইল : [email protected]

সর্বশেষ খবর