শুক্রবার, ৭ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

আজানের প্রতি সম্মান দেখানো অবশ্য কর্তব্য

আল্লামা মাহ্মূদুল হাসান

আজানের প্রতি সম্মান দেখানো অবশ্য কর্তব্য

মসজিদে যখন আজান হয়, তখন যারা আজান শুনছে তারা কী করবে? এ ব্যাপারে হাদিসে এসেছে যে তারা আজানের জবাব দেবে। জবাব দেওয়ার লাভ দুনিয়ায় হয়তো দেখা যাবে না কিন্তু হাশরে আজানের জবাব কাজে আসবে।

মুয়াজ্জিনের ডাক এসেছে আল্লাহর পক্ষ থেকে— কোনো দিন উপলব্ধি হয়েছে কি আমাদের? যে আল্লাহ আমাকে আপনাকে তৈরি করেছেন। তাঁর দেওয়া জবান দ্বারা কথা বলি, হাত দ্বারা ধরি, চোখ দ্বারা দেখি, পা দ্বারা হাঁটি সবকিছু তাঁর দেওয়া। কিন্তু তাঁর ডাকে সাড়া দিই না। মসজিদের আজান আমার কানে এসেছে, অথচ মসজিদে আসা দূরের কথা, আজানের জবাব পর্যন্ত দিচ্ছি না, আজানের সমর্থনে কথাবার্তা, গল্পগুজারি বন্ধ করছি না। গান-বাজনা চলছে, চা খাচ্ছি, আড্ডা মারছি কোনো খবর নেই। সব দোকানদার ভাইয়ের উচিত দোকানে বসে আজানের জবাব দেওয়া, তাহলে আল্লাহতায়ালা দোকানদারির মধ্যে বরকত দেবেন। মহিলাদের বলুন, তাদের কাছে আজানের ধ্বনি ভেসে এলে তারা যেন মনোযোগের সঙ্গে শোনেন এবং ঘরে বসেই জবাব দেন।

আজানের জবাব দিলে দুটি লাভ। প্রথমত, আজানের জবাব বার বার দেওয়ার বরকতে আজ হোক কাল হোক একদিন আল্লাহতায়ালা তাকে মসজিদে নামাজ পড়ার তৌফিক দেবেন। দ্বিতীয়ত, রোজ নামাজ পড়ার তৌফিকও তাকে দান করবেন। যার ফলে মৃত্যুর পর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শাফায়াতে জান্নাতে যাওয়া সম্ভব হবে। এত সহজ কাজ যে, আমি যে জায়গায় আছি সেখানে বসেই আজানের জবাব দিতে পারি কিন্তু তাতেও আমরা রাজি নই। যদি জবাব না দিই তবুও যেন আজানের অপমান না করি, অবহেলা না করি। আল্লাহতায়ালার নামটি উচ্চারিত হয়ে আমার-আপনার বাসায়, দোকানে, অফিসে ভেসে এসেছে। এর সম্মানে কথাবার্তা বন্ধ রাখি, গান-বাজনা, টেলিভিশন বন্ধ করে দিই। এতেও আমরা রাজি নই, আমিই যদি রাজি না থাকি তাহলে আমার ছেলেমেয়ে কী শিখবে। তারা আজান-নামাজের অবহেলা করবে কি করবে না? তাই আজানের সময় যদি ছোট ছেলেমেয়েদের শেখানো হয় যে আজান হচ্ছে কোনো কথা বলো না। মুয়াজ্জিন যা বলছেন তুমিও তাই বল। ঘরে নামাজ পড়। তাহলে তারা এগুলো শিখত, মানত, ফলে বড় হয়েও তা আমল করত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে আজানের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের তৌফিক দান করুন।

লেখক : খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর