শিরোনাম
রবিবার, ৯ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

অহংকার থেকে দূরে থাকতে হবে

মোহাম্মদ ওমর ফারুক

অহংকার থেকে দূরে থাকতে হবে

মনের সংকীর্ণতা দূর করে সত্যিকারের মানবীয় চেতনায় নিজেকে প্রকাশ করাই একজন মুমিনের কর্তব্য। ইসলাম অনুসারীদের সব ধরনের অহংবোধ মুক্ত হওয়ার তাগিদ দিয়েছে।  ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যার অন্তরে অণু পরিমাণও অহংকার আছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এক ব্যক্তি বলল, মানুষ চায় যে, তার পরিধেয় বস্ত্র সুন্দর হোক, তার জুতা জোড়া সুন্দর হোক। তিনি বলেন, আল্লাহ সৌন্দর্যময় এবং তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। সত্যকে অস্বীকার করা এবং মানুষকে তুচ্ছজ্ঞান করা হচ্ছে অহংকার। (মুসলিম থেকে মিশকাতে) ইসলাম বিলাসিতা বর্জনের তাগিদ দেয়। কিন্তু তার অর্থ আত্মনিগ্রহ নয়। বৈধ সীমার মধ্যে অবস্থান করে কোনো ব্যক্তি যদি নিজের পদমর্যাদা অনুযায়ী পোশাক ও বাড়িঘরে সৌন্দর্য অবলম্বন করে তবে তাকে গর্ব-অহংকারের অপবাদ দেওয়া যাবে না। পার্থিব আরাম-আয়েশ ও ভোগ-বিলাসে মত্ত হয়ে আল্লাহর অধিকার ও মানুষের অধিকার পদদলিত করার নাম হচ্ছে অহংকার। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিম্নোক্ত হাদিসটিই তার প্রমাণ। আবুল আহওয়াস (রা.) থেকে তার পিতার পিতা সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি খুবই নিম্নমানের পোশাকে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলে তিনি আমাকে বলেন, তোমার কি ধনসম্পদ আছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলেন, কী ধরনের সম্পদ? আমি বললাম— উট, গরু, ঘোড়া, মেষ-বকরি, দাস-দাসী, যাবতীয় প্রকারের মাল আল্লাহ আমাকে দান করেছেন। তিনি বলেন, আল্লাহ যখন তোমাকে ধন-সম্পদ দান করেছেন তখন তাঁর নিয়ামত ও অনুগ্রহের নিদর্শন অবশ্যই তোমার দেহে প্রকাশ পাওয়া উচিত। (নাসাঈ থেকে মিশকাতে)

আত্মনিগ্রহ থেকে দূরে থাকা বা নীচ মানসিকতা দূরীভূত করাই উপরোক্ত হাদিসের লক্ষ্য। এই নীচ মানসিকতা আল্লাহর দেওয়া সুযোগ-সুবিধার প্রতি অকৃতজ্ঞতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু নিয়ামতের নিদর্শন প্রকাশ করতে গিয়ে এতটা বাড়াবাড়িও করা যাবে না, যা অহংকার প্রদর্শনী ও অপচয়ে লিপ্ত হওয়ার পর্যায়ে পড়ে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার অনুসারীদের ভ্রাতৃত্বসুলভ সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। মানুষকে মানুষ ভালোবেসে উপহার দেয়। উপহার বা উপঢৌকন বিনিময় পরস্পরকে নিবিড় হতে সাহায্য করে। এর সামাজিক প্রতিক্রিয়া কল্যাণ বয়ে আনে।  কিন্তু কেউ কাউকে উপঢৌকন দিয়ে পরবর্তীতে মন কষাকষি হলে তা যদি ফেরত চায় তা নিকৃষ্ট মনোভাবের পরিচায়ক, যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য হওয়া উচিত।      লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর