সোমবার, ১০ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

অহশী (রা.)-এর ইসলাম গ্রহণ

মাওলানা আবদুর রশিদ

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, হুজুর (সা.) ইসলামের দাওয়াত নিয়ে অহশীর কাছে দূত প্রেরণ করলেন। অহশী দূতকে এই বলে ফেরত দিলেন, আপনি আমাকে কীভাবে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছেন অথচ আপনার রব ইরশাদ করছে— অর্থাৎ যে হত্যা করবে, শিরক করবে, যেনা করবে, এমন লোককে ডবল শাস্তি দেওয়া হবে। ‘আর আমি সব কিছু করেছি।’ অতএব, অন্য কোনো পদ্ধতি থাকলে বলুন। দূত রসুল (সা.)-এর দরবারে এসে অহশী (রা.)-এর উত্তর পেশ করলেন। তখন কোরআনের একটি আয়াত নাজিল হয়— ‘যে তাওবা করবে, ইমান আনবে এবং নেক আমল করবে, সে আলাদা অর্থাৎ সে শাস্তি মুক্ত থাকবে।’ হুজুর (সা.) বললেন, যাও এ আয়াত শুনিয়ে দাওয়াত দাও। দূত অহশীকে উক্ত আয়াত শুনিয়ে দাওয়াত দিলে অহশী প্রতি-উত্তরে বলেন, এটা তো আরও কঠিন কাজ। আমি যদি নেক আমল করতে না পারি তখন আমার কী হবে? যাও অন্য কোনো পদ্ধতি থাকলে বল। দূত রসুল (সা.)-এর দরবারে গিয়ে অহশীর উত্তর সম্পর্কে জানালেন। তখন কোরআনের আরও একটি আয়াত নাজিল হয়— ‘নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা শিরককারীকে ক্ষমা করবেন না এবং এ ছাড়া অন্য সব গোনাহ যার জন্য ইচ্ছা ক্ষমা করে দেবেন।’ হুজুর (সা.) দূতকে বললেন, যাও এ আয়াত শুনিয়ে দাওয়াত দাও। দূত যখন অহশীকে এ আয়াত শোনালেন জবাবে অহশী (রা.) বললেন, আমার মাগফিরাত সম্পর্কে আমার এখনো সন্দেহ রয়েছে। কারণ এখানে মাগফিরাতের সঙ্গে আল্লাহর ইচ্ছার শর্ত লাগানো হয়েছে। অর্থাৎ যাকে ইচ্ছা তাকে ক্ষমা করবেন। যদি আমাকে ক্ষমা না করে, তাহলে কী অবস্থা হবে। অতএব, এটাও আমার জন্য কঠিন। যাও অন্য কোনো পদ্ধতি থাকলে বল। এবারও দূত রসুল (সা.)-এর দরবারে এসে অহশীর উত্তর শোনালেন। তখন আল্লাহতায়ালা এই আয়াত নাজিল করলেন— অর্থাৎ ‘হে রসুল! আপনি বলে দিন, যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছে, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেবেন। নিঃসন্দেহে তিনি বড়ই ক্ষমাশীল ও দয়ালু।’ এ আয়াত শুনে, হজরত অহশী (রা.) বললেন, এটা কতই না উত্তম। এ আয়াতে আমাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। অতঃপর তিনি রসুল (সা.)-এর দরবারে এসে মুসলমান হয়ে যান। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, এই হুকুম তার জন্য খাছ না সবার জন্য আ’ম। রসুল (সা.) বললেন, এই হুকুম সবার জন্য আ’ম।

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর