বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

নৈরাজ্যের নাম চিকিৎসা খাত

শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ব্যবস্থা নিন

চিকিৎসা একটি মানবিক পেশা। কিন্তু দেশে চিকিৎসার নামে যা চলছে তাকে মানবিক পেশা বলে অভিহিত করা দুষ্কর। স্বভাবতই বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে তা অভিহিত করা হয়েছে গলা কাটা বাণিজ্য হিসেবে। চিকিৎসা যেহেতু মানুষের একটি মৌলিক অধিকার সেহেতু আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থা গণমানুষের এ অধিকার পূরণে প্রথম থেকেই যত্নবান ভূমিকা রেখেছে। দেশের চিকিৎসা খাতে জনগণের ট্যাক্সের উল্লেখযোগ্য অংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়। যারা সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে পড়াশোনা করছে তাদের পড়াশোনার ৯৫ শতাংশ অর্থের জোগান দেওয়া হয় দেশবাসীর পকেট থেকে। সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর পেছনেও ব্যয় করা হয় বিপুল অর্থ। তারপরও সাধারণ মানুষের কল্যাণে চিকিৎসা খাত কতটা ভূমিকা রাখছে তা একটি প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়। দেশে মানসম্মত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক এমনকি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার পরও চিকিৎসার ক্ষেত্রে মান কতটা বেড়েছে তা নিয়ে সংশয় কম নয়। সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থায় অনিয়মই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর বেসরকারি চিকিৎসা খাত সেবার বদলে গলা কাটা বাণিজ্যের তকমা কিনেছে। দেশের চিকিৎসকদের সিংহভাগই ওষুধ কোম্পানির হুকুম বরদারের ভূমিকা পালন করছেন। রোগীদের কাছ থেকে ফি নিয়েই তারা সন্তুষ্ট থাকেন না। ওষুধ কোম্পানির ওষুধ প্রেসক্রিপশন করার নামে তাদের কাছ থেকেও গ্রহণ করছেন বড় অঙ্কের টাকা। ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর সঙ্গে চিকিৎসকদের অলিখিত চুক্তি সাধারণ মানুষের চিকিৎসা ব্যয়কে অসহনীয় পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসকদের সঙ্গে গোপন সম্পর্ক থাকায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো যেনতেন রিপোর্ট দিয়েই খালাস। বাংলাদেশের এসব পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর এমনকি ভারতে গেলে সে দেশের চিকিৎসকরা হাসাহাসি করেন। সোজা কথায় চিকিৎসার নামে বাংলাদেশে চলছে প্রতারণা। ফলে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য জাতীয় বাজেটে যে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে তা আদতে খুব একটা কাজে লাগছে না। জনস্বার্থে এসব বিষয়ে সরকারকে কুম্ভকর্ণের ঘুম থেকে জাগতে হবে। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ।

 

সর্বশেষ খবর