রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার সফর

বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার বন্ধুত্ব জোরদার করবে

বন্ধুদেশ শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার তিন দিনের বাংলাদেশ সফর এবং বিভিন্ন বিষয়ে এক ডজনেরও বেশি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরকে দুই দেশের সম্পর্কের নতুন মেরুকরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ হিসেবেই বিবেচিত। প্রচলিত মিথ অনুসারে সেই দূর অতীতে বাংলাদেশের যুবরাজ বিজয় সিংহ দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা জয় করে বসতি গড়েছিলেন। তার নাম অনুসারেই লঙ্কাদ্বীপ সিংহল নাম ধারণ করে। ধর্মীয় মিথের সঙ্গেও শ্রীলঙ্কার সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ইসলাম, খ্রিস্টান ও ইহুদি বিশ্বাস অনুযায়ী দুনিয়ার প্রথম মানব আদম (আ.) এর আবির্ভাব ঘটেছিল শ্রীলঙ্কায়। সে দেশের আদম শৃঙ্গ পর্বতটি সে সাক্ষ্যই বহন করে। একই পর্বতের সঙ্গে হিন্দুদের উপাস্য রাজা রাম এবং বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক ভগবান বুদ্ধের পবিত্র স্মৃতি জড়িত বলে ওই দুই ধর্মের অনুসারীদের ধারণা। আধুনিক ইতিহাসে দ্বীপ দেশ শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সম্পর্কের মেলবন্ধন সৃষ্টি হয় সার্ককে কেন্দ্র করে। প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার সফর দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে যেমন জোরদার করবে তেমন কৃষি, শিক্ষা, যোগাযোগ ও সাংস্কৃতিক বন্ধনকে আরও সুসংহত করবে। সফরকালে দুই দেশ চলতি বছরের মধ্যেই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার বৈঠকে নেওয়া হয়েছে এ স্মরণযোগ্য সিদ্ধান্ত। চুক্তিটি হলে কোনো দেশের সঙ্গে এটিই হবে প্রথম মুক্ত বাণিজ্যের চুক্তি। মানসিকভাবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার সম্পর্ককে তা নতুন মাত্রায় উন্নীত করবে। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং একে অপরের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান রেখে এ অঞ্চলের সব দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার নীতিতে বিশ্বাসী। এ বিশ্বাস বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার সম্পর্ক বিনির্মাণে অবদান রেখেছে। আশা করা হচ্ছে সিরিসেনার সফর বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আর মজবুত করবে। দক্ষিণ এশিয়া ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উভয় দেশ আঞ্চলিক শান্তি ও বিশ্বশান্তির প্রশ্নে অভিন্ন ভূমিকা পালনে এ সফর উৎসাহ জোগাবে। দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জনগণের  বন্ধুত্বে পরিণত করার ক্ষেত্রেও প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার বাংলাদেশ সফর          অবদান রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

সর্বশেষ খবর