রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

তওবার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়

মাওলানা মুহম্মাদ জিয়াউদ্দিন

তওবার দ্বারা অন্তর পরিশুদ্ধ হয়, মনের কালিমা দূর হয়। পাপ করলে অন্তরে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে, যার ফলে হৃদয়ে একটি কালো দাগ পড়ে যায় আর ইস্তিগফার পাপ ও তার প্রভাবকে দূর করে, হৃদয় থেকে কালিমা দূর করে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বর্ণনা দিয়ে বলেন— ‘কোনো মুমিন ব্যক্তি যখন কোনো গুনাহের কাজ করে তখন তার কলবে একটি কালো দাগ পড়ে যায়। যদি সে তওবা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাহলে তার হৃদয়কে মসৃণ করে দেওয়া হয়। আর যদি সে পাপ করতে থাকে তাহলে সে দাগ প্রশস্ত হতে থাকে, এমনকি পূর্ণ হৃদয়কে আচ্ছাদিত করে ফেলে। যার বর্ণনা মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেছেন— ‘কখনো না, বরং তারা যা করে তা-ই তাদের হৃদয়ে মরিচা ধরিয়ে দেয়।’

হাসন বাসরির (রাহি.) কাছে এক ব্যক্তি বৃষ্টিহীনতার অভিযোগ করলে তিনি তাকে বললেন, আল্লাহর কাছে তওবা কর। অপর এক ব্যক্তি দরিদ্রতার অভিযোগ করলে তাকেও বললেন, আল্লাহর কাছে তওবা কর। তৃতীয় একজন এসে অভিযোগ করল তার বাগান শুকিয়ে যাচ্ছে, তাকেও একই কথা বললেন। আল্লাহর কাছে তওবা কর। এ সময় তারা বলল, প্রত্যেক ব্যক্তি পৃথক পৃথক অভিযোগ করল আর আপনি সবাইকে ইস্তেগফার করতে বললেন তার হেতু কী? উত্তরে তিনি বললেন, আমি নিজের পক্ষ থেকে কিছু বলিনি আল্লাহ সূরা নূহে বলছেন— ‘অতঃপর বলেছি, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দেবেন। তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের জন্য উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্য নদীনালা প্রবাহিত করবেন।’ (সূরা নূহ ৭১:১০-১২)।

তওবার দ্বারা শারীরিক শক্তি অর্জিত হয়। আল্লাহ হৃদ আলাইহিস সালামের বাচনিক বর্ণনা উল্লেখ  করে বলেন— ‘আর হে আমার কাওম! তোমাদের পালনকর্তার কাছে তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর তারই প্রতি মনোনিবেশ কর, তিনি আসমান থেকে তোমাদের ওপর বৃষ্টিধারা বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের শক্তির ওপর শক্তি বৃদ্ধি করবেন, তোমরা কিন্তু অপরাধীদের মতো বিমুখ হইও না।’ (সূরা হৃদ ১১:৫২)।

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন নিষ্পাপ। তারপরও তিনি প্রতিনিয়ত তওবা করতেন। তিনি বলেন— ‘নিশ্চয়ই আমি নিজের ত্রুটি অনুভব করি এবং প্রতিদিন শতবারের অধিক আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি।’ (মুসলিম)।

তওবার মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। এটাই সর্বোত্তম নিয়ামত, এর চেয়ে উত্তম কোনো নিয়ামত হতে পারে না।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর