বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ব্যভিচারীদের জন্য দুই জগতেই রয়েছে কঠিন শাস্তি

মোহাম্মদ ওমর ফারুক

ব্যভিচারীদের জন্য দুই জগতেই রয়েছে কঠিন শাস্তি

ইসলামে বিবাহবহির্ভূত দৈহিক সম্পর্ক নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন, ‘তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। এটা অশ্লীল কাজ এবং খারাপ পথ। সূরা বনি ইসরাইল-৩২। আল্লাহ আরও বলেন, ‘আর যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য উপাস্যের ইবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন সঙ্গত কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচারে লিপ্ত হয় না (এরাই আল্লাহ পছন্দনীয় জন)। আর যারা এ কাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে। কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং সেথায় তারা অপমানিত-লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল অবস্থান করবে। কিন্তু যারা তওবা করে, তারা ছাড়া।’ সূরা আল ফুরকান-৬৮-৭০। আল্লাহপাক আরও বলেন, ‘ব্যভিচারিণী রমণী ও ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে একশ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকরকরণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর বিশ্বাসীদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।’ —সূরা আননূর-২।

আলেমদের মতে, এটা হলো অবিবাহিতা ব্যভিচারিণী ও অবিবাহিত ব্যভিচারীর শরীয়তের ইহলৌকিক শাস্তি। আর যদি তারা বিবাহিত বিবাহিতা হয়, এমনকি জীবনে কখনো একবার হলেও বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাক, তবে তাদের পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। নবী পাক (সা.)-এর হাদিস দ্বারা এটা প্রমাণিত। পার্থিব জীবনে তাদের প্রতি যদি শরিয়তের এ বিধান কার্যকর না হয় এবং তারা তওবা না করে মারা যায়, তাহলে তাদের জাহান্নামের আগুনের চাবুক দিয়ে শাস্তি দেওয়া হবে। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন: ‘কোনো ব্যভিচারী ব্যভিচারে লিপ্ত অবস্থায় মুমিন থাকে না। কোনো চোর চুরি করা অবস্থায় মুমিন থাকে না, কোনো শরাবখোর শরার পান করার অবস্থায় মুমিন থাকে না। মানুষের চোখের সামনে কোনো নিরীহ লোকের ওপর আক্রমণের সময় আক্রমণকারী মুমিন থাকে না।’ — বোখারি, মুসলিম ও নাসায়ী। আরেক হাদিসে রসুল (সা.) বলেন— ‘বান্দা যখন ব্যভিচারে লিপ্ত হয়, তখন তার কাছ থেকে ইমান বেরিয়ে যায় এবং মাথার ওপর ছায়ার মতো ভাসতে থাকে। অতঃপর সে যখন ব্যভিচার থেকে নিবৃত্ত হয়, তখন আবার তার কাছে ফিরে আসে।’ হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন, যে লোক ব্যভিচারী করে কিংবা মদ পান করে, আল্লাহপাক তার ভিতর থেকে ইমানকে সেভাবে বের করে নেন যেভাবে কোনো লোক মাথার ওপর দিয়ে পরিধেয় বস্ত্র খুলে ফেলে।— হাকেম।  হাশরের দিন আল্লাহ তিন শ্রেণির লোকের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন না, তাদের  পবিত্রও করবেন না এবং তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি সুনির্ধারিত রয়েছে। তারা হচ্ছে— ‘১. ব্যভিচারী বৃদ্ধ, ২. মিথ্যাবাদী শাসক এবং ৩. অহঙ্কারী দরিদ্র লোক।’ — মুসলিম, নাসায়ী।  লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর