বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

আল্লাহকে স্মরণ করার ইবাদত জিকির

মাওলানা মুহাম্মদ সাহেব আলী

আল্লাহকে মনেপ্রাণে স্মরণ করাই হলো জিকির। জিকির হলো সবচেয়ে সহজ অথচ সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘হে মানুষ, তোমরা যারা ইমান এনেছ, তোমরা আল্লাহতায়ালাকে বেশি বেশি স্মরণ কর, সকাল-সন্ধ্যায় তোমরা তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা কর।’ (সূরা আল আহজাব : ৪১-৪২)।

মাছের জন্য যেমন পানি দরকার অনুরূপ অন্তরের জন্য জিকির আবশ্যক। জিকিরের মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা লাভ করা যায়। তার নিকটবর্তী হওয়া ও সন্তুষ্টি পাওয়া যায়।  জিকিরের মাধ্যমে অন্তরের দুঃখ-বেদনা ও দুশ্চিন্তা দূর হয়। অন্তর জীবিত থাকে, তাতে শক্তি ও পরিচ্ছন্নতা সৃষ্টি হয়। অন্তরের মধ্যে যে শূন্যতা ও অভাব থাকে আল্লাহর জিকির ছাড়া তা দূর হয় না। একইভাবে অন্তরের মধ্যে যে কঠোরতা আছে আল্লাহর জিকির ছাড়া তা নম্র হবে না। জিকির হচ্ছে অন্তরের আরোগ্য ও পথ্য এবং শক্তি। জিকিরের আনন্দ-স্বাদের তুলনায় কোনো আনন্দ নেই, কোনো স্বাদ নেই। অন্তরের রোগ হচ্ছে জিকির থেকে উদাসীনতা। বান্দা জিকিরের মাধ্যমে সুখের সময় আল্লাহকে চিনলে তিনিও তাকে দুঃখের সময় চিনবেন। বিশেষ করে মৃত্যুর সময়, মৃত্যুযন্ত্রণার সময়। জিকির হচ্ছে আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচার মাধ্যম। জিকিরের কারণে প্রশান্তি নাজিল হয়, আল্লাহর রহমত আচ্ছাদিত করে এবং ফেরেশতারা ইস্তিগফার করে। জিকিরের মাধ্যমে জিহ্বাকে বাজে কথা, গিবত, চুগোলখোরী, মিথ্যা প্রভৃতি হারাম ও অপছন্দনীয় বিষয় থেকে রক্ষা করা যায়। জিকিরের মাধ্যমে গাম্ভীর্যতা, কথাবার্তায় মিষ্টতা ও চেহারায় উজ্জ্বলতা প্রকাশ পায়। জিকির হচ্ছে দুনিয়ার আলো এবং কবর ও পরকালের নূর।  জিকিরের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত নাজিল আবশ্যক হয়, ফেরেশতারা তার জন্য দোয়া করে। জিকিরকারীদের নিয়ে আল্লাহ ফেরেশতাদের সামনে গর্ব করেন। অধিকহারে আল্লাহর জিকিরকারী সর্বশ্রেষ্ঠ আমলকারীদের অন্যতম। জিকিরের মাধ্যমে কঠিন বিষয় সহজ হয়, দুর্বোধ্য জিনিস সাবলীল হয়, কষ্ট হালকা হয়, রিজিকের পথ উন্মুক্ত হয়, শরীর শক্তিশালী হয়। জিকিরের মাধ্যমে শয়তান দূরীভূত হয়, তার মূলোৎপাটন করে, তাকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তার জিকির করার তাওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর