শনিবার, ২২ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

এডিস মশার আগ্রাসন

নাগরিক সচেতনতার বিকল্প নেই

চিকুনগুনিয়া ভাইরাস আতঙ্কে ভুগছে রাজধানীর দেড় কোটি মানুষ। অতি সম্প্রতি ডেঙ্গু আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়েছে যূথবদ্ধভাবে। ডেঙ্গুর মতো চিকুনগুনিয়ার জীবাণু ছড়ায় এডিস মশা। দুই জ্বরের মধ্যে সামঞ্জস্যও রয়েছে। একসময় এডিস মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ডেঙ্গু ভাইরাস জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। ২০০৮ সালের প্রথম দিকে দেশে চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। আট বছর ধরে এ ভাইরাস নিয়ে তেমন উচ্চবাচ্চ্য না হলেও তিন মাস আগে তা থাবা বিস্তার শুরু করে জোরেশোরে। এ সময়ে রাজধানীতে চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে কয়েক লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। চিকিৎসকদের মতে, চিকুনগুনিয়ার মূল উপসর্গ জ্বর ও অস্থিসন্ধির ব্যথা। জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে গায়ে লাল দানার মতো দেখা দেয়। পাশাপাশি মাথাব্যথা, চোখ জ্বালা, অবসাদ, অনিদ্রা, বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে। জ্বর সাধারণত দুই থেকে পাঁচ দিন থাকে এবং এরপর নিজে থেকেই ভালো হয়ে যায়। তবে জ্বর চলে যাওয়ার পরও তীব্র অবসাদ এবং ব্যথা কয়েক সপ্তাহ এমনকি কয়েক মাস ধরে চলতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার কোনো প্রতিষেধক নেই। এর চিকিৎসা মূলত রোগের উপসর্গগুলোকে নিরাময় করা। রোগীকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে এবং প্রচুর পানি ও অন্যান্য তরল খেতে দিতে হবে। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল-জাতীয় ওষুধই যথেষ্ট। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার কোনো ভ্যাক্সিন বা টিকা নেই। তাই প্রতিরোধই হলো সবচেয়ে কার্যকর উপায়। আতঙ্কিত হওয়া নয়, দুই ভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। চিকুনগুনিয়ার ভাইরাস জ্বর কয়েক সপ্তাহের জন্য আক্রান্তদের কর্মক্ষমতা যে কেড়ে নিচ্ছে তা এক বাস্তবতা। বিপদ এড়াতে এডিস মশা থেকে নিজেদের নিরাপদ রাখা সবার জন্যই জরুরি। মশা নিধনের কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় রাজধানীতে চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গুর ভাইরাস ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে। এডিস মশা সাধারণত দিনের বেলায় মানুষকে কামড়ায়, সেহেতু দিনে যাদের ঘুমানোর অভ্যাস তাদের সতর্ক থাকতে হবে। এডিস মশা যেহেতু স্বচ্ছ পানিতে ডিম পাড়ে সেহেতু বাড়ি বা ঘরের ফুলের টব বা কোনো পাত্রে স্বচ্ছ পানি যাতে একাধিক দিন উন্মুক্ত অবস্থায় না থাকে সে ব্যাপারে থাকতে হবে সতর্ক। এ ব্যাপারে নাগরিক সচেতনতা সৃষ্টিতেও নিতে হবে উদ্যোগ।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর