রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

আবারও পাহাড়ধস

হতদরিদ্রদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিন

পাহাড়ধসে প্রাণহানির ঘটনা কিছুতেই থামছে না। গত শুক্রবার ভোররাতে সীতাকুণ্ডে হতদরিদ্র পরিবারের শিশুসহ পাঁচ সদস্য প্রাণ হারিয়েছে পাহাড়ধসে। আহত হয়েছে চারজন। গত মাসের প্রথমার্ধে তিন পার্বত্য জেলা ও চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে দেড়শর বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। পাহাড়ধসে পার্বত্য জেলাগুলোর সঙ্গে চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দেখা দেয় মানবিক সংকট। পাহাড়ধস পাহাড়ি এলাকার একটি সাধারণ ঘটনা। তবে আমাদের দেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাহাড়ধসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। পাহাড় কেটে অপরিকল্পিতভাবে বসতি স্থাপন এবং গাছপালা উজাড় করার অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ড পাহাড়ধসের  জন্য দায়ী। এ বছর পাহাড়ধসে প্রাণহানির ঘটনা অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছে। ঘূর্ণিঝড় মোরার পর থেকে পাহাড়ি এলাকায় টানা বৃষ্টিপাতে কাদামাটি ও বালুর পাহাড় নরম হয়ে যায়। গাছপালাহীন ন্যাড়া পাহাড়ে ধস নামে। গত মাসে পাহাড়ধসে দেড়শর বেশি প্রাণহানির পর পাহাড়ের বিপজ্জনক এলাকা থেকে বসতি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও মাইকিং করা হয়। তারপর আবারও পাহাড়ধসে প্রাণহানির ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। সীতাকুণ্ডের পাহাড়ি বনাঞ্চলে কয়েক হাজার হতদরিদ্র পরিবারের বসবাস। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও উপায় না থাকায় তারা পাহাড়ের ঢালে ঘর তুলে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে। পাহাড়ধসের অপমৃত্যু রোধে এসব হতদরিদ্র মানুষকে শুধু বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করা কিংবা নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার উপদেশ দিলে চলবে না। তাদের পুনর্বাসনেরও উদ্যোগ নিতে হবে। পাহাড়ের যেখানে সেখানে ঘর তুলে বসবাসের প্রয়াসই হতদরিদ্র মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে। পাহাড়ধস থেকে মানুষের প্রাণরক্ষায় পাহাড়ের গাছপালা নিধন ও পাহাড় কাটার অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে। আমরা আশা করব পাহাড়ধসের ট্র্যাজেডি এড়াতে সতর্কতা অবলম্বনের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে পাহাড়ি জনপদের স্থানীয় সরকার, সরকারি প্রশাসন এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও সক্রিয় হতে হবে। মানুষের অসহায় মৃত্যু রোধে নিতে হবে সমন্বিত উদ্যোগ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর